ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

জবিতে সংঘর্ষে মামলা

ছাত্রলীগ কমিটি বিলুপ্ত

জবি প্রতিনিধি
🕐 ১০:৪২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় জবি ছাত্রলীগ কমিটি বিলুপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। মঙ্গলবার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজোয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের এক জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো এবং একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সব কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ প্রদান করা হলো। অনতিবিলম্বে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্র্থীদের কাছে গ্রহণযোগ্য, মেধাবী, সৃজনশীল ও মানবিক নেতৃত্ব উপহার দিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বদ্ধপরিকর।

গত ৩ ফেব্রুয়ারি প্রেমকে কেন্দ্র করে তুচ্ছ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেলের কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ শাখা ছাত্রলীগের সব সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করে। কেন্দ্রের নির্দেশনা অমান্য করে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক এবং অন্যান্য পদধারী নেতারা ক্যাম্পাসে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে মহড়া দিতে থাকে। গত সোমবার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আবার দিনভর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুগ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে সংঘর্ষে সমকালের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি লতিফুল ইসলাম, দৈনিক সংবাদের রাকিব ইসলাম, খবরপত্রের সোহাগ রাসিফসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। এর আগে কমিটি স্থগিত করে তাদের (বাতিল কমিটি) সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু চলমান বিবাদ থামাতে তারা ব্যর্থ হয়।

সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা
জবি ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দিয়েছে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার কোতোয়ালি থানার পুলিশ ক্যাম্পাসে অভিযান চালিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। কোতোয়ালি থানার ওসি এ বি এম মশিউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মারামারির ঘটনায় গত সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক খালিদ শেখ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এতে জবি ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সভাপতি তরিকুল ইসলামের কর্মী তরিকুল ইসলাম রিমন, সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদীন রাসেলের কর্মী কামরুল ইসলাম, বিদ্রোহী গ্রুপের ছাত্রলীগ নেতা হাসান আহমেদ খান ও অপরজন ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সহ-সভাপতি আশরাফুল ইসলাম টিটনসহ আরও ১০০ থেকে ১২০ জনকে অজ্ঞাতনামা রেখে মামলাটি করা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডির সহযোগিতায় ক্যাম্পাসে অভিযান চালিয়ে ছাত্রলীগ কর্মী বাংলা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাঈম আল অদম্য, রসায়ন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আবু সায়েমকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়।

সাংবাদিক হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
এদিকে দুগ্রুপের সংঘর্ষ চলাকালে কর্তব্যরত সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদ, জড়িতদের শাস্তি ও ক্যাম্পাসে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা প্রদানের দাবিতে মানববন্ধন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক জোট। গতকাল বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ক্যাম্পাসে বারবার ছাত্রলীগ কর্তৃক সাংবাদিকরা নির্মম হামলার শিকার হচ্ছে। সাংবাদিকসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিভাবক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন শিক্ষার্থীদের যাবতীয় নিরাপত্তার দায়িত্ব নেওয়ার কথা। সেখানে জবি প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। কর্তৃপক্ষের অসচেতনতা এবং অবহেলার কারণেও ক্যম্পাসে কিছু উগ্র শিক্ষার্থী সুযোগ পেয়ে যায়। এ সময় বক্তারা হুঁশিয়ারি দেন, কর্তৃপক্ষ অপরাধীদের বিরুদ্ধে যদি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তবে আরও কঠিন কর্মসূচি নেওয়া হবে। মানববন্ধনে বক্তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের রহস্যজনক ভূমিকার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক জোটের আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলামের সাদেকের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রবিউল আলমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- জবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও যুগান্তরের জবি প্রতিনিধি হুমায়ুন কবির হুমু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারহানা রাহি, জবি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দিপু রায়হান, বিডি নিউজ টুয়েন্টিফোরের ফখরুল ইসলাম, ইউএনবির আজিজুল হক, দৈনিক ভোরের দর্পণের শাপলা সোমাসহ সাংবাদিক জোটের অন্যান্য বক্তারা। মানববন্ধন শেষে সাংবাদিকরা কালো ব্যাজ ধারণ করে পুরো ক্যাম্পাসে মৌন মিছিল করেন।

 
Electronic Paper