ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বিদ্যুৎ ও বিনামূল্যে পাঠ্যবই

ঘরে ঘরে আলো

আবুল কালাম সোহাগ
🕐 ১২:১৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৮

স্বাধীনতার পর গত এক দশকে প্রায় ক্ষেত্রেই অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছে লাল সবুজের বাংলাদেশ। পাকিস্তানি দুঃশাসন-শোষণের শৃঙ্খল ভেঙে বিজয় ছিনিয়ে আনা বাঙালি জাতি এখন মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর জন্য বিশ্বের কাছে বিস্ময়। একাত্তরের আগে অবহেলিত এবং পিছিয়ে থাকা বাংলার প্রতিটি জনপদে প্রায় প্রতি ঘরে ঘরে এখন পৌঁছে গেছে শিক্ষা ও বিদ্যুতের আলো। বছরের প্রথম দিন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের প্রতিটি শিশুর হাতে সরকারিভাবে বিনামূল্যের পাঠ্যবই তুলে দেওয়া সাফল্যগাঁথার অন্যতম অর্জন।

শুধু শিক্ষা খাতই নয়, ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে চলছে সেবা খাত বিদ্যুৎ। ১৯৭০ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল মাত্র ৪৭৫ মেগাওয়াট। সেখান থেকে অগ্রযাত্রার ৪৭ বছরে বিদ্যুৎ উদপাদন সক্ষমতা বেড়ে হয়েছে ১৮ হাজার ৩৫৩ মেগাওয়াটে (ক্যাপটিভসহ)।


চলতি বছরের জুনের হিসাব অনুযায়ী, ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসের উৎপাদন ক্ষমতার চেয়ে প্রায় চার গুণ বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছে সরকার। ফলে একসময়ে গ্রামের ঘরে ঘরে সন্ধ্যা নামলেই কেরোসিনের তেল দিয়ে কুপি জ্বালানোর দৃশ্য মুছে যাওয়ারই উপক্রম। প্রত্যন্ত গ্রামেও এখন সুইচ চাপলেই বিদ্যুতের আলো।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর দেশে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছিল সে বছরের ৬ জুন। এরপর প্রতিবছরই দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে। বিগত ৯ বছরে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে নতুন ৮৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। আর এ সময়ে বন্ধ হয়েছে মাত্র তিনটি কেন্দ্র। ২০০৯ সালে দেশে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল মাত্র ২৭টি আর এখন বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ১১২টি।

শিক্ষা খাতের উন্নয়নেও অভাবনীয়ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। শহর থেকে দূর গ্রামাঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে ২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ উৎসব করার নজির স্থাপন করেছে বাংলাদেশ।

প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত কোমলমতি শিশুদের হাতে বছরের প্রথম দিনেই কোটি কোটি নতুন বই তুলে দিয়ে শিক্ষায় সাফল্যে কথা জানান দিয়ে আসছে সরকার। টানা ৯ বছর ধরে সারা দেশের প্রতিটি স্কুলশিক্ষার্থীর মাঝে বিনামূল্যের নতুন বই বিতরণ শিক্ষা খাতের অন্যতম বড় সাফল্য হিসেবে সবার কাছেই প্রসংশনীয়। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আওতায় আনতে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত উপবৃত্তিরও ব্যবস্থা করেছে সরকার। যাতে কোনো শিশুই অর্থাভাবে শিক্ষাজীবন থেকে ঝরে না পড়ে।

আর ফল হিসাবে পরিসংখ্যান ব্যুরোর সেপ্টেম্বরের তথ্যানুযায়ী, দেশে বর্তমান সাক্ষরতার হার ৭২ শতাংশ ৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। গতবার এই হার ছিল ৭২ দশমিক ৩ শতাংশ। স্কুলশিক্ষার্থীদের মাঝে শুধু পাঠ্যবই নয়, সরকারিভাবে বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণও বিতরণ করা হচ্ছে। বাঙালি ছাড়াও চাকমা, মারমা, সাঁওতালসহ অন্য জাতিসত্তার শিশুদের নিজ নিজ মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।

 
Electronic Paper