ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

শুভ্রতা ছড়াচ্ছে কাশফুল

জয়নাল আবেদীন, ববি
🕐 ৯:৩০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২২

শুভ্রতা ছড়াচ্ছে কাশফুল

প্রকৃতি অনেক রঙে সাজে। কখনো সাদা রঙে, কখনো কালো মেঘ, আবার কখনো বা সৌন্দর্য্যরে কোনো প্রতীক নিয়ে হাজির হয় প্রকৃতির মাঝে। যেখানে নির্মল দখিনের বাতাসে পাখির ডাকে নদীর কলকল ধ্বনিতে মানুষের মাঝে প্রাণশক্তি সঞ্চার করে। প্রতিবছর শরৎকাল ও ভাদ্রমাসের মাঝামাঝিতে এমন সৌন্দর্য্যরে প্রতীক নিয়ে কাশফুলে ভরে ওঠে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো ক্যাম্পাস। সবুজের মাঝে কাশফুলের সৌন্দর্য্যরে বিমোহিত করে তোলে প্রতিটি শিক্ষার্থীর। শিক্ষার্থীরা পাঠ চুকিয়ে প্রকৃতির রাজ্যে ভালোবাসার রঙ মাখানো সাদা কাশফুলের সঙ্গে মিশে যায়। এ যেন এক স্বর্গরাজ্য।

বরিশাল বিভাগে বৃহৎ আয়তন নিয়ে কাশফুল হয় একমাত্র বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। শহর বা বরিশালের বিভিন্ন অঞ্চল থেকেও আসে এই সৌন্দর্য্যরে উপভোগ করতে। প্রকৃতির রঙে রাঙিয়ে তোলে নিজেকে। অনেকে আবার কাশফুলের সৌন্দর্য্যরে সঙ্গে নিজেকে বন্দি করে ফেলে ক্যামেরা দিয়ে।

দর্শনার্থীরা মনে করছেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় নদীর ক্যাম্পাস। নদীর গা ঘেঁষেই যার স্থান। বাদামী রঙের বিল্ডিং, নদী, ব্রিজ ও কাশফুলের সমারোহ আমাদের বেশি আকর্ষণ করে। মন খারাপ হলেই এই ক্যাম্পাসে আসলে মনে হয় এক খণ্ড স্বর্গরাজ্যে অবস্থান করি। কয়েকবছর পরে অবকাঠামো আরো উন্নয়ন হলে আগামীতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় হবে দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম এক সৌন্দর্য্যরে ক্যাম্পাস।

নীল আকাশের সাদা মেঘের ভেলায়, কাশফুলে অনেকে নিজেকে হারিয়ে ফেলে। বসন্তের থোকায় থোকায় যেমন ফুল ফোটে, গাছে জাগে কঁচি পাতা। ঠিক তেমনি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সৌন্দর্য্যরে কাছে শিক্ষার্থীরা নতুন করে উদ্যমী হয় ও নিজেদের পরিস্ফুটিত করে। মনে-প্রাণে আনন্দের গান ও মনকে পুলকিত করে রাখে কাশফুলের সৌন্দর্য্যকে ঘিরে। শরৎতের সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ কাশফুল। আকাশের সাদা মেঘের সঙ্গে কাশফুলের মৃদু বাতাসে দোল খাওয়া প্রকৃতিতে শুধুই মুগ্ধতা ছড়ায়।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, কোনো নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানকে ঘিরে ক্যাম্পাসকে কৃত্রিমভাবে সাজানো হয়। তবে আমাদের ক্যাম্পাস প্রকৃতির কিছু ছোঁয়াতে সেজে থাকে। কখনো কালো মেঘে ছেয়ে যাওয়া, আবার শরৎকালের কাশফুলের সমারোহে সাজে পুরো ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধের দিনেও দেখা মিলে দর্শনার্থীদের। বিকাল নামলেই একঝাপ বালক-বালিকে এই সৌন্দার্যের ঘ্রাণ নিতে আসে আমাদের ক্যাম্পাসে। নদীর পাশে, মহাসড়কের গা ঘেঁষে অবস্থান হওয়ায় সৌন্দর্য্যরে ঘ্রাণে মেতে ওঠে সবাই। সর্বদা আমেজ লেগেই থাকে। বিকাল হলেই বিভিন্ন টংয়ে চা ও প্রকৃতির সুবাতাস নিতে বেরিয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা।

পশ্চিম আকাশে সূর্য যাওয়ার পূর্বক্ষণে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেরিন একাডেমি রোডে ভিড় বাড়ে শিক্ষার্থীদের। স্নিগ্ধের আলোয়, কাশফুলের সৌন্দর্য্যে প্রিয়তমাকে নিয়ে আসে, কেউবা বন্ধুদের সঙ্গে যায়। হালকা বাতাসে কাশফুলের দোলের মাঝে যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলে কিছু সময়ের জন্য। অনুভূতিগুলো অনেকে ক্যামেরাবন্দি করে ফেলে। কাশফুল অন্য ফুলের মতো গন্ধ না থাকলেও সকলের পছন্দের একটা ফুল বিশেষ করে মেয়েদের। এটিও প্রিয়জনের জন্য উপহারস্বরুপ দেওয়া যায়। বন্ধু তার বন্ধুকে বা বান্ধবিকে প্রিয়তমাকে, স্বামী তার স্ত্রীকে কাশফুল দিয়ে রোমাঞ্চকর পরিস্থিতি করে তোলে।

দর্শন বিভাগের দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী নওরিন নুর তিষা বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস শরৎকাল আসলেই মাতিয়ে তোলে কাশফুলে। শরৎতের কাশফুল মানে শুভ্রতা। কাশফুলের ছোঁয়ায় ক্যাম্পাস নতুনরূপে সেজেছে। ক্যাম্পাসের এমন নবরূপে আমাদের মুগ্ধ করে। আমরা অনেক মেয়েরা নিজেকে সাজিয়ে কাশফুলের সঙ্গে মিশে ক্যামেরাবন্দি করে রাখি।

 
Electronic Paper