ঢাবিতে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় তাড়াশের রোজের
আশরাফুল ইসলাম রনি, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ)
🕐 ৩:২০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৭, ২০২২
ভর্তির সুযোগ পেয়েও ঢাবিতে পড়ার স্বপ্ন ফিঁকে হয়ে আসছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশের আকিকা রহমান রোজ (১৯) নামের এক শিক্ষার্থীর। অভাব অনটনের সংসারে অর্থের অভাবে আদৌ এই মেধাবী শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া লেখা করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে তার পরিবারেও দুশ্চিন্তার শেষ নেই। আকিকা রহমান রোজ এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ ইউনিটে মেধা তালিকায় স্থান পেয়ে শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৩ সালের ১লা জানুয়ারী তাড়াশ পৌর সদরের পশ্চিম পাড়া আনিছুর রহমান ও রোকেয়া দম্পতির ঘরে তার জন্ম হয়। ৪ ভাই বোনের মধ্যে সে সবার ছোট। তার বাবা অবসর প্রাপ্ত মাদ্রাসার শিক্ষক এবং মাতা গৃহিনী। তাদের অর্থনৈতিক অবস্থাও তেমন ভালো না। সম্প্রতি সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে খ ইউনিটের মেধা তালিকায় ৭২২ তম হয়েছেন এবং শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ে পড়াশোনার জন্য মনোনীত হয়েছেন।
''রোজ'' ছোট বেলা থেকেই মেধাবী এবং তার রেজাল্টও অত্যান্ত ভালো, ২০১৩ সালে তাড়াশ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে পি.এস.সি. পরিক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে ট্যালেন্টপুল বৃত্তি পেয়েছে। ২০১৬ সালে তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হতে জে.এস.সি-জিপিএ ৫ পেয়ে সাধারণ বৃত্তি পেয়েছে। ২০১৯ সালে তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হতে বিজ্ঞান বিভাগ হতে এস.এস.সি পরিক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে এবং ২০২১ সালে তাড়াশ ডিগ্রী কলেজ হতে মানবিক বিভাগ হতে এস.এস.সি পরিক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে।
''রোজ'' জানায়, ছোট বেলা থেকেই তার স্বপ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে পড়ার। ভর্তি মাধ্যমে তার প্রথম স্বপ্ন পুরন হয়েছে। এখন তার ইচ্ছা ভালো ভাবে পড়া শুনা শেষ করে ভালো একটা চাকরি করা, যার মাধ্যমে পরিবার ও দেশের জন্য অবদান রাখতে চান। তার সফলতার জন্য পরিবারের সকলেরই অবদান অসামান্য, বিশেষ করে বাবা মা ও ছোট ভাই রাফিজ এর অবদান গুরত্বপুর্ন। তার সফলতার পিছনে শিক্ষকদের অবদানও কম নয়। এমনকি পড়া শুনার ক্ষেত্রে তার বন্ধু বান্ধব, প্রতিবেশী সবারই সহযোগিতা পেয়েছেন।
রোজের বাবা আনিছুর রহমান ও মা রোকেয়া বলেন, মেয়ে আমাদের অত্যান্ত মেধাবী ও খুবই ভাল, তাকে কখনই পড়ার কথা বলতে হয়নি। তার অনেক ইচ্ছাই পুরন করতে পারি নাই এমন কি তার পড়া শুনার স্বভাবিক পরিবেশও সব সময় দিতে পারিনি। প্রয়োজনীয় প্রাইভেট এর ব্যবস্থাও করতে পারি নি। কিন্তু এ নিয়ে তার কোন অভিযোগ নেই, এ রকম মেধাবী মেয়ে পাওয়া সত্যই ভাগ্যের ব্যাপার।
তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আলী হাসান বলেন, রোজ অত্যান্ত মেধাবী ও ভদ্র । সে নিয়মিত স্কুলে আসতো এবং পড়া শুনায় অত্যান্ত মনোযোগী ছিল।