চবিতে জামাল নজরুল ইসলাম গবেষণা কর্মশালা অনুষ্ঠিত
আল আজমাঈন সাবাব, চবি
🕐 ৭:৫৯ অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০২২
‘কল্পনা ও উদ্ভাবনের পথে আগামী প্রজন্ম’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত হয় প্রথম ‘জামাল নজরুল ইসলাম জাতীয় গবেষণা কর্মশালা ২০২২’। এই কর্মশালায় তুলে ধরা হয়েছে তরুণ গবেষকদের দীর্ঘদিনের গবেষণা প্রচেষ্টার ফলাফল ও নতুন অনেক সম্ভাবনাময় ধারণা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জামাল নজরুল ইসলাম রিসার্চ সেন্টার ফর ম্যাথমেটিকাল অ্যান্ড ফিজিক্যাল সায়েন্স এবং চিটাগাং ইউনিভার্সিটি রিসার্চ অ্যান্ড হায়ার স্টাডি সোসাইটির (সিইউআরএইচএস) উদ্যোগে এ গবেষক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
জামাল নজরুল ইসলাম গবেষণা কর্মশালা -২০২২ শুরু হয় সকাল সাড়ে নয়টায়। এটি অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. নাসিম।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বোর্ড মেম্বার গবেষক ড. সেঁজুতি সাহা। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবীদ অধ্যাপক মনিরুজ্জামান।
এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, এশিয়ান উইমেন ইউনিভার্সিটি, আইসিডিডিআরবি, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তরুণ গবেষকরা অংশ নেন এই কর্মশালায়।
ড. সেঁজুতি সাহা বলেন, ‘তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগাতে হলে প্রথমেই নজর দিতে হবে তরুণদের বিজ্ঞানচর্চা এবং গবেষণায় আরো বেশি বেশি অংশগ্রহণের দিকে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর শুরু হয় তরুণদের গবেষণাপত্রের উপস্থাপনা। এখানে ৪৮ জন তরুণ গবেষক তাদের গবেষণাকর্ম স্লাইডের মধ্যমে তুলে ধরেন। এরপর ছিলো পোষ্টার প্রদর্শনী; সেখানে চার শতাধিক তরুণ গবেষক তাদের গবেষণাকর্ম উপস্থাপন করেন। তারপরে শুরু হয় থ্রি মিনিট থিসিসের উপস্থাপনা। সেখানে ১২০ জন প্রতিযোগী থেকে বাচাই করা ৮ জন তরুণ গবেষক বাংলা ভাষায় তাদের গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে ড. সেঁজুতি সাহা জামাল নজরুল ইসলাম নিয়ে বলেন, ‘বাঁধা নিশ্চই কম ছিল না, কিন্তু প্রতিটি বাঁধা তিনি নিয়েছেন সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা হিসেবে।
অতিথিদের বক্তব্যের পর ওরাল প্রেজেন্টেশন, পোস্টাল প্রেজেন্টেশন এবং প্রথমবারের মতো বাংলায় অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত থ্রি মিনিট থিসিস প্রোগ্রাম সম্পন্ন হয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য বেণু কুমার দে তার বক্তৃতার এক পর্যায়ে বলেন, ‘দরিদ্র বলে গণেষণা নয়, দরিদ্র বিমোচনের জন্য গবেষণা।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরীন আক্তার অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করার পর সমুদ্রবিজ্ঞান গবেষণায় বাংলাদেশে চবির গবেষকদের সর্বোচ্চ সাফল্যের জন্য তাদের বিশেষ ভাবে অভিবাদন জানান। এছাড়াও গবেষণা কাজে নারীদের যথেষ্ট পরিমাণ অংশগ্রহন দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
কর্মশালায় ৭৫ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এবং প্রায় ৫২৪ জন তরুণ গবেষক অংশগ্রহণ করেছিলেন। যেখানে কেবলমাত্র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই অংশগ্রহণ করেন প্রায় ৭৪ জন গবেষক। উক্ত কর্মশালায় পদার্থবিজ্ঞান ও প্রকৌশল, জীববিজ্ঞান, পরিবেশবিজ্ঞান, কৃষি ও উদ্ভিদবিজ্ঞান, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান ও মানববিদ্যা ক্যাটাগরিতে গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়।
ড. জামাল নজরুল ইসলাম গবেষণা কর্মশালার প্রথম সম্মেলনে ৬ টি ক্যাটাগরিতে ১৮ জন কে পুরষ্কৃত করা হয়। গবেষকদের গবেষণা আইডিয়ায় ৭ ক্যাটাগরিতে ২১ টি পুরষ্কার।
একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ ড. মইনুল ইসলাম বলেন, সঠিক গবেষণার মাধ্যমে আমাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার পরিবর্তনের মাধ্যমে দেশের দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব। সঠিক গবেষণাপ্রকল্পের মাধ্যমে একটা দেশের সার্বিক উন্নতি সম্ভব।