ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

অষ্টম

গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

পৌরনীতি ও নাগরিকতা

মারুফ হাসান
🕐 ১১:২৯ পূর্বাহ্ণ, মে ১৩, ২০২১

গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

উদ্দীপক : বাংলাদেশি মজিদ ডিভি লটারির মাধ্যমে আমেরিকায় গেছে। সে বুদ্ধিমান, আত্মসংযমী ও বিবেকবান। সে বাংলাদেশি মেয়ে রতœাকে বিয়ে করে আমেরিকায় নিয়ে যায়। আমেরিকায় তাদের একটি কন্যাসন্তান জন্ম নেয়, যার নাম রিমি।

ক) নগর রাষ্ট্রের উদ্ভব হয় সর্বপ্রথম কোথায়?
খ) নাগরিকের আইনগত অধিকার কী?
গ) নাগরিকতার নিয়ম অনুসারে রিমি কোন দেশের নাগরিক? ব্যাখ্যা করো।
ঘ) মজিদ কি একজন সুনাগরিক? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।
উত্তর : ক) নগর রাষ্ট্রের উদ্ভব হয় সর্বপ্রথম গ্রিসে।
খ) যেসব অধিকার রাষ্ট্রের আইন কর্তৃক স্বীকৃত ও অনুমোদিত, সেগুলোকে আইনগত অধিকার বলে। আইনগত অধিকারকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন- সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার। সমাজে সুখ-শান্তিতে বসবাস করার জন্য আমরা সামাজিক অধিকার ভোগ করি। যেমন- জীবন রক্ষার, স্বাধীনভাবে চলাফেরার ও মতপ্রকাশের অধিকার ইত্যাদি।
নির্বাচনে ভোটাধিকার, নির্বাচিত হওয়া এবং সর্বপ্রকার অভাব-অভিযোগ আবেদনের মাধ্যমে প্রতিকার পাওয়া, এগুলো রাজনৈতিক অধিকার। আবার জীবনধারণ, জীবনকে উন্নত ও এগিয়ে নেওয়ার জন্য রাষ্ট্র প্রদত্ত অধিকার প্রভৃতি হচ্ছে নাগরিকের অর্থনৈতিক অধিকার। এসবই নাগরিকের আইনগত অধিকার।
গ) নাগরিকতার নিয়ম অনুসারে রিমি বাংলাদেশ ও আমেরিকা এই দুই দেশেরই নাগরিক।
একজন ব্যক্তির একই সঙ্গে দুটি রাষ্ট্রের নাগরিকতা অর্জনকে দ্বৈত নাগরিকতা বলে। সে হিসেবে রিমি একজন দ্বৈত নাগরিক।
নাগরিকতা দুইভাবে লাভ করা যায়। জন্মসূত্রে ও অনুমোদনসূত্রে। জন্মসূত্রে নাগরিকতা অর্জনের ক্ষেত্রে দুটি নীতি অনুসরণ করা হয়। যথা- জন্মনীতি ও জন্মস্থান নীতি। রিমি জন্মসূত্রের ভিত্তিতে জন্মনীতি ও জন্মস্থান নীতি অনুযায়ী বাংলাদেশ ও আমেরিকা উভয় দেশের নাগরিক। জন্মস্থান নীতি অনুযায়ী সে আমেরিকার নাগরিক। আর জন্মনীতি অনুযায়ী বাংলাদেশের নাগরিক। সে আমেরিকায় জন্মগ্রহণ করেছে বলে জন্মস্থান নীতি অনুযায়ী সে আমেরিকার নাগরিক। কারণ এ নীতি অনুযায়ী পিতা-মাতা যে দেশেরই নাগরিক হোক না কেন, সন্তান যে রাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করবে সে ওই রাষ্ট্রের নাগরিকতা লাভ করবে। আর তার মা-বাবা বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ায় সে জন্মনীতি অনুযায়ী বাংলাদেশের নাগরিক। এ নীতি অনুযায়ী শিশু যে দেশে বা যেখানেই জন্মগ্রহণ করুক না কেন, মা-বাবার নাগরিকতা দ্বারা সন্তানের নাগরিকতা নির্ধারিত হয়।
ঘ) হ্যাঁ, মজিদ একজন সুনাগরিক।
রাষ্ট্রের সব নাগরিক সুনাগরিক নয়। আমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি বুদ্ধিমান, যে সব সমস্যা অতি সহজে সমাধান করতে পারে, যার বিবেক আছে, যে ন্যায়-অন্যায়, সৎ-অসৎ বুঝতে পারে এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত থাকে, আর যে আত্মসংযমী সে বৃহত্তর স্বার্থে নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থ ত্যাগ করতে পারে। এসব গুণসম্পন্ন নাগরিকদের বলা হয় সুনাগরিক। সুনাগরিকের প্রধানত তিনটি গুণ থাকা আবশ্যক। যথা- ১। বুদ্ধি ২। বিবেক ও
৩। আত্মসংযম।
১। বুদ্ধি : বুদ্ধি সুনাগরিকের অন্যতম গুণ। বুদ্ধিমান নাগরিক পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের বহুমুখী সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। সুনাগরিকের বুদ্ধির ওপর নির্ভর করে আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সফলতা। তাই বুদ্ধিমান নাগরিক রাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। প্রতিটি রাষ্ট্রের উচিত নাগরিকদের যথাযথ শিক্ষাদানের মাধ্যমে বুদ্ধিমান নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা।
২। বিবেক : রাষ্ট্রের নাগরিকদের হতে হবে বিবেক বোধসম্পন্ন। এ গুণের মাধ্যমে নাগরিক ন্যায়-অন্যায়, সৎ-অসৎ, ভালো-মন্দ অনুধাবন করতে পারে। বিবেকবান নাগরিক একদিকে যেমন রাষ্ট্র প্রদত্ত অধিকার ভোগ করে, ঠিক তেমনি রাষ্ট্রের প্রতি যথাযথভাবে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে এবং ন্যায়ের পক্ষে থাকে।
৩। আত্মসংযম : সুনাগরিকের আত্মসংযম থাকা উচিত। এর অর্থ নিজেকে সর্বপ্রকার লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে রেখে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে নিজের দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করা। অর্থাৎ সমাজের বৃহত্তর স্বার্থে নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থ ত্যাগ করার নাম আত্মসংযম।

মারুফ হাসান
প্রভাষক, মাইলস্টোন কলেজ, ঢাকা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper