ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

অষ্টম শ্রেণি

গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়

সায়ের খান
🕐 ২:৩৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ০৮, ২০১৯

প্রশ্ন : ‘ক’ নামক অঞ্চল শিক্ষায় কিছুটা পিছিয়ে ছিল। ফলে এলাকাবাসী সবক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিল। উক্ত এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালী ও সম্পদশালী এক ব্যক্তির উদ্যোগে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একটি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ধীরে ধীরে এলাকার মানুষের মধ্যে শিক্ষার আলো প্রজ্বলিত হয়। কয়েক বছরের ব্যবধানে উক্ত এলাকার মানুষ সমাজ সচেতন হয়ে ওঠে। এলাকার শিক্ষিত উন্নয়নকর্মী ফাহমিদা নারীশিক্ষা, মানবাধিকার, মৌলিক অধিকার ইত্যাদি বিষয়ে এলাকাবাসীকে সচেতন করে তোলে।

ক. ভারতে প্রথম ভাইসরয় নিযুক্ত হন কে?
খ. বাংলা ১১৭৬ সনে এ দেশে মারাত্মক দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় কেন?
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত পরিস্থিতির মতো ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলায় কীসের উদ্ভব ঘটেছিল? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘ফাহমিদার মতো উন্নয়নকর্মী ব্যক্তিবর্গের উদ্যোগের ফলই ভারতের স্বাধীনতার পথ সুগম করে’- উক্তিটির যাথার্থ নিরূপণ কর।
উত্তর- ক : ভারতে প্রথম ভাইসরয় নিযুক্ত হন লর্ড ক্যানিং।

উত্তর- খ : ১৭৬৫ সালে ইংরেজরা দেওয়ানি লাভের পর বাংলার রাজস্ব আদায়ের ক্ষমতা তাদের হাতে চলে যায়। রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব পেয়ে ইংরেজরা প্রজাদের ওপর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপিয়ে তা আদায়ের জন্য প্রচ- চাপ সৃষ্টি করে। এছাড়া ১৭৬৮ সাল থেকে তিন বছরের অনাবৃষ্টি দেখা দেয়। ইংরেজদের প্রজা নিপীড়ন ও অনাবৃষ্টি এ দুটি কারণেই বাংলা ১১৭৬ সনে এদেশে মারাত্মক দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়।

গ. উদ্দীপকে বর্ণিত পরিস্থিতির মতো ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলায় নবজাগরণের উদ্ভব ঘটেছিল। ইংরেজরা তাদের শাসন পাকাপোক্ত করার লক্ষ্যে দেশীয়দের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষিত একটি অনুগত শ্রেণি তৈরিতে মনোযোগ দেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষের দিকে কলকাতা মাদ্রাসা ও সংস্কৃত কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ইংরেজদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দ্বারা আধুনিক শিক্ষার সংস্পর্শে এসে স্থানীয় মানুষের মধ্যে নতুন চেতনার স্ফুরণ ঘটে। ফলে বহুকালের প্রচলিত বিশ^াস, নানা সংস্কার, বিধান সম্পর্কে তাদের মনে সংশয় ও প্রশ্ন জাগে। হিন্দু সমাজ থেকে সতীদাহের মতো প্রথার বিরুদ্ধে তারা আন্দোলন শুরু করে। বিধবা বিবাহের পক্ষে জনমত তৈরি হয়। সমাজের নানা কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে থাকে। সর্বোপরি বাংলায় নবজাগরণের সূচনা হয়; যার প্রতিচ্ছবি উদ্দীপকে তুলে ধরা হয়েছে। সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকে উল্লিখিত পরিস্থিতির মতো ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলায় নবজাগরণের উদ্ভব ঘটেছিল।

ঘ. ফাহমিদার মতো উন্নয়নকর্মী ব্যক্তিবর্গের উদ্যোগের ফলেই ভারতের স্বাধীনতার পথ সুগম করে- উক্তিটি যথার্থ। কেননা উদ্দীপকের ফাহমিদার যেমন ‘ক’ নামক অঞ্চলের লোকজনকে নারী শিক্ষা, মানবাধিকার, মৌলিক অধিকার ইত্যাদি বিষয়ে সচেতন করে তোলে, ঠিক তেমনি ঊনবিংশ শতাব্দীতে কিছু ব্যক্তিবর্গের উদ্যাগে সারা ভারতবাসী সচেতন হয়ে ওঠে এবং ইংরেজদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়। এছাড়া কিছু সংবেদনশীল মানুষ বাংলা ভাষায় সংবাদপত্র প্রকাশ করে ইংরেজদের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করে। এক্ষেত্রে রাজা রামমোহন রায়, ঈশ^রচন্দ্র বিদ্যাসাগর, ডিরোজিও প্রমুখ অবাধে মুক্ত মনে জ্ঞান চর্চার ধারা তৈরি করেন। তারা সমাজে বিদ্যমান অনাচারের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করেন। আধুনিক শিক্ষা ও জাগরণের আরেকটি দিক ছিল দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ জাতীয়তাবাদী চেতনার বিকাশ ঘটে। ফলে ভারতবাসীর মনে স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা ও গণতান্ত্রিক অধিকারবোধেরও উন্মেষ ঘটে। সামগ্রিকভাবে ভারতবর্ষে অনেক তরুণ সশস্ত্র বিপ্লবী সংগ্রামের দিকে ঝুঁকে পড়ে। মুসলিম সমাজের দাবি-দাওয়া তুলে ধরার জন্য ১৯০৬ সালে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। সব জাতি, বর্ণ নির্বিশেষে সবার ঐক্যবদ্ধ ও ধারাবাহিক আন্দোলনের ফলে ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ স্বাধীন হয়ে ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়।

আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, উদ্দীপকের ফাহমিদার মতো ব্যক্তিবর্গের উদ্যোগের ফলেই ভারতের স্বাধীনতার পথ সুগম করে।

সায়ের খান
সিনিয়র শিক্ষক, একেএম রহমত উল্লাহ কলেজ, ঢাকা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper