এইচএসসি
গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
মোস্তাফিজুর রহমান
🕐 ৫:২২ অপরাহ্ণ, জুন ১৬, ২০১৯
অর্থনীতি দ্বিতীয়পত্র
উদ্দীপক : বাংলাদেশে সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের দাম অনেক বেড়েছে। এ সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা লাভের আশায় ভেজাল খাদ্য বিক্রি করছে। এতে জনস্বাস্থ্য ও জনজীবন বিপন্ন হচ্ছে। জনকল্যাণের স্বার্থে তাই ভেজাল খাদ্য উৎপাদন, বিক্রি ও পরিবেশন প্রতিরোধ করা দরকার।
ক. ভেজাল খাদ্য কী?
খ. বাংলাদেশের ভেজাল খাদ্য পরিস্থিতি কিরূপ?
গ. ভেজাল খাদ্য কিভাবে জনস্বাস্থ্য ও জনজীবন বিপন্ন করে তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. বাংলাদেশে খাদ্য ভেজালমুক্তকরণে করণীয়গুলো বিশ্লেষণ করো।
উত্তর : ক. এক খাদ্যের সঙ্গে অন্য খাদ্যের মিশ্রণ, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয় এমন রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত খাদ্য, খাদ্য সংরক্ষণের জন্য ক্ষতিকর দ্রব্য ব্যবহার, সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য রং প্রয়োগকৃত খাদ্য ইত্যাদি একত্রে খাদ্যে ভেজাল বা ভেজাল খাদ্য বলে পরিচিত।
খ. বাংলাদেশে ভেজাল খাবারের অবস্থা খুবই মারাত্মক। এ দেশের এক শ্রেণির অসাধু মুনাফালোভী ব্যবসায়ী খাদ্যসংরক্ষণ ও তাড়াতাড়ি পাকানো বা ক্রেতাকে আকর্ষণ করার জন্য পণ্যে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টিকারী কেমিক্যাল ও বিষাক্ত রং ব্যবহার করে খাদ্যে ভেজাল সৃষ্টি করছে।
গ. বাংলাদেশে সাম্প্রতিককালে ব্যাপকভাবে ভেজাল খাদ্য উৎপাদন, বিক্রয় ও পরিবেশন করা হয়। ভেজাল খাদ্য ব্যবসায়ে লাভ অনেক বেশি হয় বলে দেশে এ খাদ্যের ব্যবসা দিন ভেজাল খাদ্য খেয়ে জনসাধারণ আমাশয়, গ্যাস্ট্রিক ইত্যাদি পেটের পীড়ায় ভুগছে। যারা ভেজাল খাদ্য খাচ্ছে তাদের মধ্যে বেশির ভাগ দুর্বল ও কৃশ হয়ে যাচ্ছে এবং তাদের স্মরণশক্তি হ্রাস পাচ্ছে। তা ছাড়া ভেজাল খাদ্য খেয়ে অনেকেরই ওজন অত্যধিক কম বা বেশি হয়ে যাচ্ছে। কারো কারো চুল অকালে পড়ে যাচ্ছে কিংবা সাদা হয়ে পড়ছে; অনেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছে, আবার অনেকেই অতিরিক্ত ক্লান্তি বোধ করছে। এসব ছাড়াও ভেজাল খাদ্য গ্রহণের ফলে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, কর্মক্ষমতা হ্রাস, কিডনির সমস্যাসহ নানা রকম রোগ দেখা যায়, স্কুলের গেটের সামনে বাচ্চাদের কাছে মুখরোচক ভেজাল খাবার বিক্রি করা হচ্ছে। এ খাবার খেয়ে বাচ্চারা প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়ে। হোটেল-রেস্তোরাঁয় ভেজাল তেল-মসলা দিয়ে প্রস্তুতকৃত খাবার বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
ভেজাল খাদ্য গ্রহণের ফলে বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য আজ বিপন্ন।
ঘ. বাংলাদেশে খাদ্য ভেজালমুক্তকরণে করণীয়গুলো নিচে বিশ্লেষণ করা হলো :
প্রথম, খাদ্যের উৎপাদনে যেসব উপাদান ভেজালের জন্য দায়ী, সেগুলো যত দূর সম্ভব কম উৎপাদন করা বা আমদানি না করা উচিত। সঙ্গে সঙ্গে খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণের জন্য রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে হবে। খাদ্যশস্য, শাকসবজি ও ফলমূল উৎপাদনে নূন্যতম কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, খাদ্যশস্য মাড়াই ও সংরক্ষণের সময় তাতে ধুলাবালি, পাথরকুচি ইত্যাদির মিশ্রণ রোধ করতে হবে। এ ছাড়া কোনো খাদ্যদ্রব্য মান অনুসারে বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত করা হলে একেক শ্রেণির খাদ্য একেক জায়গা থেকে বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে।
তৃতীয়ত, উন্নতমানের খাদ্যের সঙ্গে নিম্নমানের খাদ্যের সংমিশ্রণ রোধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ বলে গণ্য করতে হবে।
চতুর্থয়ত, ভেজাল খাদ্য প্রতিরোধে কিছু আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে কেবল সরকার অথবা পৌরসভা কর্তৃক অনুমোদিত ও লাইসেন্সধারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক খাদ্য উৎপাদন ও বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে।
সাবেক শিক্ষক
ক্যামব্রিয়ান কলেজ, ঢাকা।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228