ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়

সুধীর বরণ মাঝি
🕐 ৪:৫৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ০৯, ২০১৯

পঞ্চদশ অধ্যায়
উদ্দীপক : স্বপন দীর্ঘদিন ধরে আফ্রিকায় কর্মরত ছিলেন। দেশে ফিরে এলে তার ঘন ঘন ডায়রিয়া এবং জ্বর হয়। সঙ্গে কাশিও দেখা দেয়। দীর্ঘ চিকিৎসার পরও সুস্থতার পরিবর্তে অতিরিক্ত অবসাদ অনুভব করে, ধীরে ধীরে কর্মহীন হয়ে পড়ে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এক পর্যায়ে স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়।

ক) সামাজিক নৈরাজ্য কী?
খ) বাংলাদেশে শিশুশ্রমের প্রধান কারণটি বর্ণনা কর। গ) স্বপনের সমস্যাটি বাংলাদেশের কোন সামাজিক সমস্যাকে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা কর। ঘ) স্বপনের সমস্যা মোকাবেলায় তার স্ত্রীর পদক্ষেপটি কি যথার্থ? তোমার উত্তরের স্বপক্ষে যুক্তি দাও।

ক) উত্তর : সামাজিক বিশৃঙ্খলার চরম রূপ হলো সামাজিক নৈরাজ্য।

খ) উত্তর : বাংলাদেশে শিশুশ্রমের প্রধান কারণ হলো দারিদ্র্য। দারিদ্র্য মা-বাবার প্রয়োজনীয় সম্পদের অভাবে শিশুদের ভরণপোষণ দিতে পারেন না এবং সন্তানের লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করতে পারেন না। ফলে সন্তান স্কুলে না যাওয়ায় তারা মনে করেন কোনো পেশা বা কাজের মাধ্যেমে এসব শিশু অর্থ উপার্জন করুক। শিশুদের অল্প পারিশ্রমিকে কাজে লাগানো যায় বলে মালিকপক্ষও এদের নিতে উৎসাহী থাকে। এটাই বাংলাদেশে শিশুশ্রমের প্রধান কারণ।

গ) উত্তর : উদ্দীপকের স্বপনের সমস্যাটি এইচআইভি এইডসের সমস্যা। এটি বাংলাদেশের সামাজিক সমস্যার একটি অন্যতম সামাজিক সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এইডস হলো এইচআইভি ভাইরাসজনিত একটি প্রাণঘাতী ব্যাধি। যার পরিণতি একমাত্র মৃত্যু।
আক্রান্ত ব্যক্তি যে কোনো সাধারণ ব্যাধিতেই সহজেই আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। এইডস আক্রান্ত ব্যক্তি সমাজের অর্থনীতি, সামাজিক কাঠামো, চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং অন্যসব বিষয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাববিস্তার করে। এটি সামাজিক নৈরাজ্য ও সমস্যার সৃষ্টি করে। উদ্দীপকের স্বপন এইডসে আক্রান্ত হওয়ার পর তার স্ত্রীর চলে যাওয়ার পদক্ষেপটি অমানবিক। কেননা তার স্বামীর জন্য এ সময় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল মানসিক সমর্থন। স্বপনের রোগের কোনো চিকিৎসা না থাকলেও উন্নত জীবনমান নিশ্চিত করার মাধ্যমে অনেক দিন সুন্দরভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব ছিল।
কিন্তু এর জন্য বেশি প্রয়োজন ছিল স্ত্রীর উপস্থিতি। তার স্ত্রী এ সময় তাকে ত্যাগ করে চলে গিয়ে অমানবিক ও অনৈতিক কাজ করেছে।

ঘ) উত্তর : আমি মনে করি, স্বপনের সমস্যা মোকাবেলায় তার স্ত্রীর পদক্ষেপটি যথার্থ ছিল না। স্বপন এইডস রোগে আক্রান্ত হলেও কিছুদিন সুন্দরভাবে বাঁচার সুযোগ ছিল। কিন্তু তার স্ত্রী তাকে ত্যাগ করে চলে যাওয়ায় সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার সুযোগটি নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সে দারুণ মর্মবেদনায় মৃত্যুর দিকে এগুতে থাকে। একজন অসুস্থ ব্যক্তিকে সবসময় সমবেদনা জানাতে হয়, তার পাশে থেকে তাকে সাহস জোগাতে হয়। যাতে সে মানসিক শক্তিতে বলীয়ান হতে পারে। স্ত্রীর এ সময় তাকে একলা রেখে চলে যাওয়া ঠিক হয়নি। এটা তার অনৈতিক এবং অমানবিক কাজ হয়েছে।

এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য কোনো প্রতিষেধক নেই। এই রোগ দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে ধ্বংস করে দেয়। ফলে খুব সহজেই সে অন্য রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। তাই আক্রান্ত রোগীর জন্য প্রয়োজন উন্নত স্বাস্থ্যসেবা ও জীবনযাত্রার। আক্রান্ত রোগীকে সামাজিক পুনর্বাসন করা আবশ্যক।
এ জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন নিকটাত্মীয়দের সহমর্মিতা ও সহযোগিতা। রোগীর মনোবল ঠিক রেখে চলার জন্য প্রয়োজন নিকটাত্মীয়দের সহমর্মিতা ও সহযোগিতা। উন্নত জীবনমান ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারলে এইডস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা অনেক দিন সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে পারে।

শিক্ষক, হাইমচর সরকারি মহাবিদ্যালয়, হাইমচর, চাঁদপুর।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper