ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মানব-পাচার রোধে পদক্ষেপ কাম্য

সম্পাদকীয়
🕐 ১:২১ অপরাহ্ণ, মার্চ ০৪, ২০২২

মানব-পাচার রোধে পদক্ষেপ কাম্য

নিকৃষ্টতম অপরাধগুলোর একটি মানব পাচার। আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে এ অপরাধ। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ত্রি-চক্রে মাদকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানব পাচার। মানব পাচার ও মাদক কারবারিদের নিরাপদ রুটে পরিণত হয়েছে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন সাগর উপকূলীয় এলাকা। বস্তুত কক্সবাজারের সীমান্ত পথে ইয়াবা সংক্রান্ত অপরাধের সঙ্গে শুষ্ক মৌসুমে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানব পাচার।

পাচারের জন্য নিরাপদ স্থান হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কক্সবাজার সদর, উখিয়া, টেকনাফ ও মহেশখালীসহ জেলার সমুদ্র তীরবর্তী এলাকাগুলোকে। সাম্প্রতিককালে যেসব মানব পাচার হচ্ছে, তাদের মধ্যে রোহিঙ্গারাই সংখ্যায় বেশি। প্রকৃৃতপক্ষে কয়েকটি শ্রেণি স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে দালাল চক্রের একটি অশুভ যোগাযোগ রয়েছে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্যের বিরুদ্ধেও রয়েছে এই অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগ। ত্রি-চক্রের প্রভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এসব অপরাধ।

উপজেলার বাহারছড়া, সদর ও সাবরাং শাহপরীর দ্বীপের মেরিনড্রাইভ-বেড়িবাঁধের পাশে বিভিন্ন জায়গায় সাগরের তীরে রয়েছে ঝাউবনসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। বর্তমানে এটি পরিণত হয়েছে মানব পাচার ও মাদক ব্যবসায়ীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল। মাদক ব্যবসার পাশাপাশি এখানে অসমাজিক কার্যকলাপও চলে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এসব অপরাধে লোভনীয় ফাঁদে জাড়িয়ে পড়ছে উঠতি বয়সি যুবক, কিশোর ও ছাত্ররা। ফলে বাড়ছে বখাটের সংখ্যা। অবনতি হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা ও সামাজিক অবক্ষয়। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সাগরের তীরে অবস্থানের কারণেই এ পথ দিয়ে সহজেই মানব পাচার করা যায়। একই কারণে অনায়াসে পাচার করা যায় মাদক।

চোরাকারবারি চক্রের সদস্যরা মিয়ানমার থেকে মাছ ধরার ট্রলারে করে সাগর পাড়ি দিয়ে তীরবর্তী নিকট স্থানে ইয়াবা খালাস করে ফিরতি পথে গভীর সাগরে অপেক্ষামান মালয়েশিয়াগামী বড় ট্রলারে উঠিয়ে দেয় বিভিন্ন বয়সের লোক। ছোট ট্রলার থেকে বড় ট্রলারে উঠিয়ে দেওয়ার নামে প্রতিজনকে গুনতে হয় মাথাপিছু ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা। অনেক ক্ষেত্রে মাঝসাগরে ট্রলারের মাঝিমাল্লারা কৌশলে ডাকাতের কবলে পড়েছে বলে দাবি করে হাতিয়ে নেয় মোটা অঙ্কের টাকা, ছিনিয়ে নেয় খাদ্য, পানি ও গহনা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পরও থেমে নেই তাদের কার্যক্রম। মূলত স্থানীয় প্রভাবশালী শক্তিশালী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে এ কার্যক্রম। সাম্প্রতিক সময়ে সেন্টমার্টিন ও সাগরে ভাসমান অজ্ঞাত লাশ উদ্ধারের ঘটনাও রয়েছে।

জানা যায়, কয়েকদিন আগে টেকনাফ সদরের মানব পচার কাজে জড়িত রোহিঙ্গা নৌকার মাঝি সাগর থেকে ফেরার পথে গ্রামে ঢুকলে এক দালাল থেকে আরেক দালাল গ্রুপ তাকে ছিনিয়ে করে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধম্যে সুরাহা করে নৌকার মাঝিকে ফেরত আনা হয়। এদিকে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি টেকনাফ উপজেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় মানব পাচার ও মাদক ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধির বিষয়টি সবার সামনে আনেন স্থানীয় চেয়ারম্যান। মানব পাচার রোধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। এ ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থার বিকল্প নেই। দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়ে সংশ্লিষ্টরা এগিয়ে আসবেন বলেই প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper