‘মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে’
সম্পাদকীয় ডেস্ক
🕐 ৩:৪৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২০, ২০২২
মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তারা দেশের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারও নানাভাবে ত্যাগ-তিতীক্ষা স্বীকার হয়েছেন, নির্যাতন-নিপীড়নের শিকারও হয়েছেন যুদ্ধকালে। পরবর্তী সময়েও নানা দুর্যোগ দুর্বিপাকে পড়েছেন। সেই হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলো অবশ্যই সর্বোচ্চ সম্মানে আসীন। এ বিষয়টিই ধ্বনিত হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠে। মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারগুলোর যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি তাদের মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন নিশ্চিত করতে এবং ভয় ও লোভ দূরে রেখে আইনানুগ দায়িত্ব পালন করার জন্য ডিসিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলন উদ্বোধনকালে তিনি এ আহ্বান জানান। করোনা পরিস্থিতিতে দুই বছর পর রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে। গত মঙ্গলবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী সম্মেলন উদ্বোধন করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সবাই খেয়াল রাখবেন, কারণ আমি আর দেখতে চাই না কোনো শহীদ পরিবার, জাতির পিতার চিঠি যার হাতে, তিনি ভিক্ষা করে খাবেন- এটা যেন না হয়। আমরা যত কাজই করি এ কাজটা সবচেয়ে আগে করতে হবে। একজন মুক্তিযোদ্ধার পরিবার ভিক্ষা করবে, এটা আমাদের জন্য মোটেই সম্মানজনক নয়। প্রধানমন্ত্রী জেলা-উপজেলা পর্যায়ের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো মাস্টার প্ল্যানের মাধ্যমে করার এবং এজন্য স্থানীয় প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা নেওয়া এবং বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। তিনি অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প পরিহারের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। শেখ হাসিনা ডিসিদের উদ্দেশে বলেন, মানুষের কল্যাণে সব ভয়-ভীতি ও প্রলোভনের ঊর্ধ্বে থেকে আইনানুগ দায়িত্ব পালনের জন্য আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
জনসেবাকে প্রাধান্য দিয়ে তিনি আহ্বান জানান, সেবার মনোভাব নিয়ে সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থাকলে আপনাদের পক্ষে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হবে। এতে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে। আর সরকারি সেবা নিতে সাধারণ মানুষ যেন কোনোভাবেই হয়রানি বা বঞ্চনার শিকার না হন, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কোথাও কোনো মুক্তিযোদ্ধার পরিবার, শহীদ পরিবার বা গণহত্যার শিকার কোনো পরিবার দুর্ভোগ পোহাচ্ছে কি না তা আপনাদের দেখতে হবে। এদের অবদানে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। জাতির পিতার ডাকে সবকিছু ছেড়ে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে তারা দেশ স্বাধীন করলেও ’৭৫-এর পর তাদের আর অস্তিত্বই স্বীকার করা হয়নি। তাই তাদের দুর্ভোগের সীমা ছিল না।
সরকার দক্ষ, দুর্নীতিমুক্ত ও সেবামুখী জনপ্রশাসন গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এ লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল, সিটিজেনস চার্টার ইত্যাদির বাস্তবায়ন জোরদার করারও আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করে বলেন, সবার আন্তরিক প্রচেষ্টাতেই আমরা সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করে সেই লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হব। সব মানুষ যখন ভালো থাকবে তখনই স্বার্থক হবে মুক্তিযুদ্ধের এত অবদান ও ত্যাগ-তিতীক্ষা। দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান, তাদের পরিবারের ত্যাগকে বুকে ধারণ করেই এগিয়ে যেতে হবে আমাদের সবাইকে।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228