প্রবাসীদের বিনিয়োগ প্রতিবন্ধকতা লাঘব করুন
সম্পাদকীয় ডেস্ক
🕐 ২:৪৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১১, ২০২২
প্রবাসীরা বিদেশে কষ্টার্জিত অর্থ যদি স্বদেশেই বিনিয়োগ করেন তাহলে নানাভাবেই বিকশিত হয় অর্থনীতি। সে জন্য প্রবাসীদের জন্য অনুকূল পরিবেশ-পরিস্থিতি সৃষ্টি করে রাখা বাঞ্ছনীয়। অথচ সেই পরিবেশ বর্তমানে নেই। যদিও সরকার নানাভাবেই প্রবাসীদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত হয় প্রবাসী বিনিয়োগ বিড়ম্বনার এক মর্মান্তিক অধ্যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ফখরুল হাসান ১৯৯৬ সালে যখন ফ্রান্স গমন করেন, তখন তিনি কৈশোর উত্তীর্ণ তরুণ। ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের সন্তান তারপর দীর্ঘ ২০ বছর প্যারিসে কঠোর পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জন করেন। দুই দশক ইউরোপের সমৃদ্ধ দেশটির নাগরিকত্ব নেওয়ার চেষ্টা না করে দেশে ফেরার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন চটপটে তরুণ। কষ্টে উপার্জিত টাকা নিয়ে দেশে ফিরে বিনিয়োগের স্বপ্নে ফ্রান্স যাওয়ার চার বছর পরই ঢাকার আশকোনায় জমি কেনেন।
এ প্রবাসী দেশে স্থায়ীভাবে ফেরার আগেই ২০০৯ সালে সেই জমিতে বহুতল ভবন নির্মাণে কাজ শুরু করেছিলেন। তিন বোন ও এক ভাই ইউরোপের একাধিক দেশে স্থায়ী হলেও দেশ মাটির টানে ফিরে এসেছিলেন স্বপ্নচারী ফখরুল। ২০১৬ সালে দেশে ফিরে গ্রামের বাড়িতেও বিস্তীর্ণ জমিতে গড়েছিলেন খামারবাড়ি। তবে অর্থসম্পদ কাল হয়ে যায় ফখরুলের। যৌথভাবে বোনের জামাইয়ের সঙ্গে ছয়তলা বাড়ি কিনেছিলেন। তার সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় ঝগড়া এড়াতে তিনি বাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। সাড়ে ছয় কোটি টাকা দাম ঠিক করে বাড়িটি কিনতে বায়না করেন কামরুজ্জামান টিটো। কূটকৌশলে টিটো দেড় কোটি দিয়ে আর টাকা দেননি। এক বছর পার হওয়ার আগে থেকে বারবার বাকি টাকার জন্য তাগাদা দিয়েও পাননি পাওনা টাকা। বছর পার হওয়ার পর প্রথমে উকিল নোটিস এবং পরে মিথ্যা প্রতারণার মামলা করেন ব্যবসায়ী টিটো।
শুধু তাই নয়, কখনো রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তি কখনো আবার স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে হয়রানি শুরু করেন ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান টিটো। ফখরুল হাসান খোলা কাগজকে বলেন, কষ্টের টাকা নিয়ে দেশে ফিরে আজ আমার প্রতিনিয়ত হয়রানির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। টিটো আমার বাকি টাকা দিয়ে পুরো বাড়ি নিচ্ছেন না। আমি ও আমার পরিবার জীবননাশের হুমকিতে আছি। একই বাড়িতে আমি থাকছি, আবার বাড়ি কেনার জন্য বায়না করে আমার ভাড়াটিয়া টিটোও থাকছেন। তিনটি ফ্ল্যাট তার দখলে, ভাড়াও দিচ্ছেন না, পরিশোধ করছেন বিদ্যুৎ-গ্যাসের বিলও। ক’দিন আগেও আমার ফ্ল্যাটের পর্দায় কে বা কারা আগুন লাগিয়ে দেয়। আগে-ভাগে নজরে পড়ায় বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি।
দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মামুনুর রহমান এ অভিযোগ নাকচ করে বলেন, আমি ফখরুল হাসান ও কামরুজ্জামান টিটোর বাড়ি সংক্রান্ত ঝামেলা জানি। তবে কোনো সময় মীমাংসার উদ্যোগ নিইনি। এ বিষয়ে শুধু একটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে, কোনো মামলা হয়েছে কি না তা জানি না। এ অভিযোগের আশু সুরাহা জরুরি। প্রবাস ফেরতদের কষ্টার্জিত অর্থ-সম্পদ কোনো দুর্বৃত্ত যেন ছিনিয়ে নিতে না পারে, সেই চেষ্টা করা হবে বলেই প্রত্যাশা।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228