অবৈধভাবে কিডনি বাণিজ্যে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন
সম্পাদকীয় ডেস্ক
🕐 ১:১৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৪, ২০২১
কিডনি নিয়ে অবৈধ ব্যবসা নতুন নয়। আগেও এমন সংবাদ দেখা যেত। সম্প্রতি নতুন কৌশল অবলম্বন করে সক্রিয় হয়েছে দুষ্কৃতকারীরা। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র অবৈধভাবে কিডনি বেচাকেনা করছিল। দেশ থেকে ডোনার সংগ্রহ করে ভারতে পাঠাত তারা। চক্রের সদস্যদের কেউ ‘কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন প্রয়োজন’ এমন বিত্তশালী রোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করত, কেউ প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র মানুষকে অর্থের বিনিময়ে কিডনি বিক্রিতে প্রলুব্ধ করত। চক্রটি ২০ লাখে কিডনি বিক্রি করে ডোনারকে দিত মাত্র দুই লাখ টাকা। এই চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করেছে র্যাব। রাজধানীর নদ্দা ও জয়পুরহাট থেকে সোমবার মধ্যরাত এবং মঙ্গলবার সকালে তাদের আটক করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, কিডনি বেচাকেনা ও পাচার চক্রের মূলহোতা শাহরিয়ার ইমরান আহম্মেদ। দুটি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে সে এই অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। এ পর্যন্ত শতাধিক মানুষকে ভারতে নিয়ে কিডনি বিক্রির ব্যবস্থা করেছে শাহরিয়ার। ভারতে অবস্থানরত কিডনি কেনাবেচা চক্রের সঙ্গে যোগসাজশে এসব অপকর্ম করে আসছিল সে। প্রতারণার মাধ্যমে কিডনিসহ মানবদেহের নানাবিধ অঙ্গের অবৈধ ট্রান্সপ্লান্টেশনের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বেশ কয়েকটি চক্র। এসব চক্রের ফাঁদে পড়ে অসহায় নিম্ন আয়ের মানুষ, ক্ষেত্রবিশেষে গ্রাহকরাও প্রতারিত হচ্ছে। আইনবহির্ভূত, স্পর্শকাতর ও অবৈধ ট্রান্সপ্লান্টেশনের এমন কার্যক্রমে জড়িত চক্রের সদস্যরা অর্থের লোভে অমানবিক কার্যক্রমে যুক্ত রয়েছে।
সম্প্রতি র্যাবের সাইবার মনিটরিং সেল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবৈধ কিডনিসহ অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্রয়-বিক্রয় সিন্ডিকেটের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় কয়েকজনকে আটক করা হয়। অভিযানে ভুক্তভোগী কিডনিদাতাদের কাছ থেকে চারটি পাসপোর্ট, মেডিকেল চিকিৎসার জন্য পাসপোর্ট, ভিসা সম্পর্কিত বেশকিছু কাগজপত্র, পাঁচটি মোবাইল এবং দেশি-বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক হওয়া ব্যক্তিরা জানায়, তাদের চক্রের মোট সদস্য সংখ্যা ১৫-২০ জন। তারা তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়ে কিডনি বেচাকেনা করে থাকে। চক্রের প্রথম গ্রুপ ঢাকায় অবস্থান করে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন প্রয়োজন এমন বিত্তশালী রোগীদের সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে যোগাযোগ করে। আর দ্বিতীয় গ্রুপ চাহিদা অনুযায়ী দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরিব মানুষ চিহ্নিত করে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের জন্য ডোনার হতে প্রলুব্ধ করে।
তৃতীয় গ্রুপটি প্রলোভনের শিকার কিডনি ডোনারদের ঢাকায় বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে রোগীর সঙ্গে ব্লাড ম্যাচিং ও অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করে। এরপর পাসপোর্ট, ভিসা প্রসেসিং ও ভুয়া কাগজপত্র তৈরির মাধ্যমে ডোনারকে পার্শ্ববর্তী দেশে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করে। এই চক্রের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী দেশে অবস্থানকারী আরেকটি চক্র পারস্পরিক যোগসাজশে কিডনি ডোনারকে এয়ারপোর্ট অথবা স্থলবন্দরে রিসিভ করে। এই অনৈতিক কারবারি চক্রের বিরুদ্ধে সত্বর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আমরা প্রত্যাশা করি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228