ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

নির্বাচনী সহিংসতা দুঃখজনক

সম্পাদকীয় ডেস্ক
🕐 ১:৫১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২১

নির্বাচনী সহিংসতা দুঃখজনক

দুঃখজনক হলেও সত্য, গত সোমবার দেশের বেশ কিছু এলাকায় ইউনিয়ন পর্যায়ে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ভোটে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। অনেক স্থানে ধাওয়াধাওয়ি, সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। দুজনের প্রাণহানি ও শতাধিক আহত হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে যাওয়ায় বাধা দান, ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে পছন্দের প্রার্থীর অনুকূলে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সহানুভূতিশীল থাকার মতো ঘটনাও ঘটেছে। চার প্রিসাইডিং ও দুই পোলিং অফিসার আটক হয়েছেন। ভোটের দিনে বিশৃঙ্খলার মুখে অনেক প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। সংঘাত-সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে এবং নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগ জোরালোভাবে উঠেছে। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রাখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের কিন্তু তারা তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।

কক্সবাজারের মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় নির্বাচনী সহিংসতায় দুজন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন। নোয়াখালীর কবিরহাট পৌরসভা, সুবর্ণচর ও হাতিয়া উপজেলায় কয়েকটি স্থানে সংঘর্ষ ঘটেছে। হাতিয়ায় জাল ভোট দেওয়ার অপরাধে চারজন প্রিসাইডিং অফিসার ও দুজন পোলিং অফিসারকে আটক করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। বাগেরহাটের শরণখোলায় সংঘর্ষে ২৭ জন আহত হন। সাতক্ষীরার দুই উপজেলায় সহিংসতা, গোলাগুলি, প্রার্থীদের ভোট বর্জনের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশসহ আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ জন। বৃষ্টি ও কাদা উপেক্ষা করে ভোটাররা কেন্দ্রে গেছেন। প্রতিটি কেন্দ্রে পুরুষের তুলনায় নারীদের উপস্থিতি ছিল বেশি- এটি ইতিবাচক। বোমা ফেলে ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগও পাওয়া গেছে। নির্বাচনী ময়দানে এ ধরনের অপতৎপরতা ও সহিংসতা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। নির্বাচনের সময় যেহেতু স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মেনে চলার কথা, তাই এই উদ্ভুত পরিস্থিতির দায় নিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।

একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন অগাধ ক্ষমতা ভোগ করে। নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তাকে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে তা প্রয়োগের বিষয়টি নির্ভর করে নির্বাচন কমিশনের দৃঢ়তার ওপর। ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত স্থানীয় সরকার পর্যায়ের অনেক নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং এই নির্বাচনগুলোয় কোনো ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হিসেবেই ওই নির্বাচনগুলো স্বীকৃতি পেয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ ও দৃঢ় পদক্ষেপের কারণেই তা সম্ভব হয়েছে। অতীতে এ কাজ করা গেলে এখন তা সম্ভব হচ্ছে না কেন? এটা কী কমিশনের অদক্ষতা, নাকি অনীহা বা অন্য কিছু? নির্বাচনকে অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ রাখতে নির্বাচন কমিশনের যে সক্রিয় ভূমিকা প্রত্যাশিত, তা দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই নির্বাচনে দেখা যায়নি। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সবাই সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করতে বাধ্য। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সেই কাজ করতে পারছে না বা করছে না।

এটি স্পষ্ট যে, নির্বাচনী সহিংসতা এড়ানোর জন্য আগাম ব্যবস্থা যা নেওয়া হয়েছে তা অপ্রতুল। সহিংসতা রোধে এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন পুলিশ, র‌্যাব, বিডিআর এমনকি প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকেও কাজে লাগাতে পারে। আসলে প্রয়োজন নির্বাচন কমিশনের সক্রিয় ও দৃঢ় ভূমিকা। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন আরো সতর্ক হবেÑএটাই প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper