ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

নদীভাঙন আশঙ্কা: এলাকাবাসীর পাশে দাঁড়ান

সম্পাদকীয়
🕐 ১২:১২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২১

নদীভাঙন আশঙ্কা: এলাকাবাসীর পাশে দাঁড়ান

‘নদীর একূল ভাঙে ওকূল গড়ে এই তো নদীর খেলা...’-এভাবেই শিল্পীর কণ্ঠে উঠে আসে নদী-চারিত্র্য। নদীর ভাঙাগড়ায় প্রাথমিক অবস্থায় বিপর্যস্ত হয় জনজীবন, তারপর অন্য কোথাও জাগে প্রাণস্পন্দন। নদীভাঙনের ঘটনা ফিরে আসছে বারবার। এ বিষয়ে গতকাল প্রতিবেদন প্রকাশ করে খোলা কাগজ। তাতে বলা হয়, রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের চরগনাই গ্রামের সালেহা বেগমের জমিজমা বলতে ছয় শতাংশের বসতভিটা ছাড়া আর কিছু নেই। সেই বসতভিটার কোল ঘেঁষে এসে পড়েছে করালগ্রাসী তিস্তা। বসতভিটা ভাঙন আতঙ্কে গত দুই মাস ধরে সালেহা বেগম রাতে ঘুমাতে পারেন না। যদিওবা কখনো ঘুমিয়ে পড়েন তবে নদীর পাড় ভাঙার আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় তার। শুধু সালেহা বেগম নন, তার মতো ওই ইউনিয়নে তিস্তা তীরবর্তী চরগনাই গ্রামসহ বালাপাড়া ইউনিয়নের দুই শতাধিক পরিবারের ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে।

তিস্তার তীরবর্তী গ্রামে নদীভাঙনে আশ্রয়হীন হয়ে পড়া পরিবারের মানুষরা জানান, উপজেলার বালাপাড়া ও টেপামধুপুর ইউনিয়নে নদী তীরবর্তী ১০ গ্রামের একাংশ প্রায় বিলীন হতে চলেছে। ইতোমধ্যে নদীগর্ভে ঘরবাড়ি হারিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। ভাঙনের কবলে রয়েছে অনেক পরিবার। প্রায় আট কিলোমিটার এলাকাজুড়ে প্রতিদিন ধসে পড়ছে মাটি। ভুক্তভোগী একজন গ্রামবাসী বলেন, নদীর ভাঙনে তালুক সাহাবাজ গ্রামের নদী পাড়ে বালুর ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের গ্রামে বেশি ক্ষতি হলেও বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে না। আমার বাড়ির কাছে নদী চলে এসেছে। যেকোনো সময় বসতবাড়ি বিলীন হয়ে যাবে। সবসময় আতঙ্কে থাকি, কোন সময় সব নদীতে চলে যায়।

পূর্ব তালুক শাহাবাজের ক্ষীরোদ চন্দ্র বলেন, এখানকার অধিকাংশ পরিবার একাধিকবার তিস্তার ভাঙনের শিকার হয়ে নিঃস্ব অবস্থায় অন্যের জমিতে ও বাঁধের ওপর বসবাস করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙন না ঠেকালে আজীবন রাস্তায় পড়ে থাকতে হবে আমাদের। এ বিষয়ে টেপামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জানান, ভাঙনে তার ইউনিয়নের অনেকের বসতভিটা ও আবাদি জমি নদীতে তলিয়ে গেছে। প্রতিদিনই নদীর পাড় ভাঙছে। এতে করে তীরবর্তী গ্রামের কয়েকশ’ ঘরবাড়ি ভাঙনের মুখে রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে নদী শাসন ও বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা প্রয়োজন। তা না হলে অনেকের ভিটেমাটি ও আবাদি জমি মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে। বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনছার আলী বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত তহবিল ও টিআর প্রকল্পের অর্থায়নে বাঁশ পুঁতে নদীর তীরবর্তী ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে এগুলো সাময়িক।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, কাউনিয়া উপজেলার নদীর তীরবর্তী গ্রামে ভাঙনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা খালি জিও ব্যাগ সরবরাহ করেছি। স্থানীয় লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছে। সরকার তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে নদীর ভাঙন রোধ হবে। তীরবর্তী মানুষের পাশে দাঁড়ানো জরুরি। মানুষের মনোবল চাঙ্গা রাখা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা সময়ের দাবি। সংশ্লিষ্টরা উদ্যোগী হবেন বলেই প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper