অনলাইনে জুয়া বন্ধ হোক
সম্পাদকীয়
🕐 ১২:৩৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১
বাংলাদেশের সামাজিক ব্যবস্থায় জুয়াকে ভালো দৃষ্টিতে দেখা হয় না। বাস্তবিকই একটা নেতিবাচক মনোভাব থাকে প্রায় সব শ্রেণির মানুষের। তবুও থামছে না জুয়ার মচ্ছব। গতকাল খোলা কাগজে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে এ বিষয়ে। তাতে বলা হয়, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সারা দেশের বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠন ও ক্লাবে ক্যাসিনোবিরোধী বিশেষ অভিযানের পর প্রকাশ্যে জুয়া খেলার প্রবণতা কমে আসে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নজরদারির মধ্যে জুয়া পরিচালনাকারী সিন্ডিকেটগুলো ঘুরে দাঁড়াতে না পারলেও এ সুযোগে অনলাইনে জুয়া খেলার প্রবণতা মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়ে গেছে। ঘরে বসে আয়ের ছুতোয় বিদেশ থেকে পরিচালিত ওয়েবসাইট এবং অ্যাপসের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে অনলাইন জুয়ায় অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
দেশে-বিদেশে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন জনপ্রিয় ফুটবল-ক্রিকেট লিগ চলাকালে টাকার ওপর টাকা বাজি লাগাচ্ছেন তারা। এ নেশা গ্রাস করছে দেশের তরুণ সমাজকে। প্রতিনিয়ত দেশ থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকা। অবাক করার বিষয় হলো দেশের প্রধান কয়েকটি অনলাইন লেনদেন মাধ্যমকে কাজে লাগিয়েই জুয়াড়িরা এসব লেনদেন করছেন। সম্প্রতি অনলাইন বেটিং সাইটের তিন জুয়াড়িকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। এরপর হাজারো বাংলাদেশির নেটওয়ার্কের খোঁজ পান তারা। বাংলাদেশিদের মধ্যে কেউ কেউ এসব বেটিং সাইটের লোকাল এজেন্ট, মাস্টার এজেন্ট কিংবা সুপার এজেন্ট। তাদের একেকজনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে শত শত সাধারণ জুয়াড়ি। এসব বেটিং সাইটের অ্যাডমিন অবস্থান করছেন দেশের বাইরে। ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, ই-মেইলে নিবন্ধনের পর মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লোকাল এজেন্টকে টাকা দেন জুয়াড়িরা। সেই টাকার কমিশন কেটে রাখেন লোকাল এজেন্ট, মাস্টার এজেন্ট ও সুপার এজেন্ট।
ধাপে ধাপে বাকি টাকা ডলারে রূপান্তর করে দেশের বাইরে থাকা সুপার অ্যাডমিনের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ক্রিকেট-ফুটবলসহ প্রায় সব ধরনের খেলা নিয়ে এসব সাইটে জুয়া চলছে। এসব সাইটে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে গ্রেফতারদের একজন গোয়েন্দা পুলিশকে জানান, অনলাইনে জুয়া খেলতে আগ্রহীদের প্রথমে ফেসবুকের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হয়, তিনি একটি আইডি নিতে চান। তখন গ্রুপ অ্যাডমিন তাকে একটি এজেন্ট দেন। ওই এজেন্টের মাধ্যমেই জুয়া খেলা শুরু হয়। জুয়া খেলতে প্রয়োজন পড়ে পার বেটিং ইউনিট বা পিবিইউ। বর্তমানে এক ইউনিট পিবিইউ-র দাম একশ’ টাকা। সুপার অ্যাডমিন নিয়োগ দেন লোকাল, মাস্টার ও সুপার এজেন্ট। তারপর জুয়াড়িদের কাছে পিবিইউ বিক্রি করেন তারা। সেই টাকার পাঁচ শতাংশ হারে কমিশন পান এজেন্টরা।
বাংলাদেশ থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ প্রতিনিয়ত অনলাইনে জুয়া খেলছে। অনুসন্ধানে বাংলাদেশে জনপ্রিয় বেশ কয়েকটি অনলাইন বেটিং সাইটের সন্ধান পাওয়া গেছে। এসব বেটিং সাইটে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এবং আন্তর্জাতিক ও ক্লাব পর্যায়ের ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে জুয়ার আসর বসে। জানা গেছে, প্রতিটি ওয়েবসাইটই এক বা একাধিক অ্যাডমিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তারাই জুয়া পরিচালনা করেন। অনলাইন জুয়া সত্বর বন্ধ করা সময়ের দাবি। সংশ্লিষ্ট এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলেই প্রত্যাশা।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228