ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

কক্সবাজারের বনভূমি রক্ষা করুন

সম্পাদকীয়
🕐 ১:২৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১

কক্সবাজারের বনভূমি রক্ষা করুন

একটি দেশের জন্য যে পরিমাণ বনভূমি থাকা দরকার, বাংলাদেশে তা নেই। যে কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে পরিবেশ ও প্রকৃতিতে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভবিষ্যতে আরও খারাপ অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। আশঙ্কা জেনেও কতিপয় জ্ঞানপাপী ধ্বংস করে চলেছে বনাঞ্চল। গতকাল খোলা কাগজে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় এ বিষয়ে। তাতে বলা হয়- বনাঞ্চল ধ্বংস করে একাডেমিক ভবন তৈরি করা সত্যি দুঃখজনক; কোনোভাবেই এই বনাঞ্চল ধ্বংস করে একাডেমিক ভবন করা যাবে না। যে ৭০০ একর বনাঞ্চল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এক পাশে সমুদ্র অন্যপাশে পাহাড়বেষ্টিত এই বনাঞ্চল। এই প্রকৃতির টানে দেশ বিদেশ থেকে কক্সবাজারে পর্যটক আসছে। এটিকে আরও সুন্দর করার জন্য মেরিন ড্রাইভ করা হয়েছে যেন প্রকৃতিপ্রেমীরা এই মেরিন ড্রাইভ দিয়ে ভ্রমণ করতে করতে পাহাড়-সমুদ্রের মিতালি দেখতে পারে। সেই পাহাড়বেষ্টিত বনাঞ্চল ধ্বংস করে একাডেমিক ভবন!

সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ একাডেমির নামে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভসংলগ্ন শুকনাছড়ির জাতীয় উদ্যানসহ সংরক্ষিত বনভূমির ৭০০ একর জমি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-এর আয়োজনে গত রোববার দুপুরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা খেদোক্তি প্রকাশ করেন। সমাবেশে ২০টি পরিবেশবাদী ও সামাজিক সংগঠন অংশগ্রহণ করে।

বক্তারা আরও বলেছেন, শুকনাছড়ি এলাকা প্রতিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন। বিপন্নপ্রায় বন্যপ্রাণীর নিরাপদ বিচরণস্থল এই বনভূমি। এমন একটি বনভূমিতে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণের যে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার, তা স্পষ্টত আইনবিরোধী এবং পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য চরম হুমকিস্বরূপ। তাই প্রশাসনিক একাডেমির নামে দেওয়া অবৈধ বন্দোবস্ত অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।

বাপা কক্সবাজারের সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৯০ সালে জারি করা ভূমি মন্ত্রণালয়েরই একটি পরিপত্রে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড় ও পাহাড়ের ঢাল বন্দোবস্তযোগ্য নয় এবং ওই জমি মূলত বন বিভাগ বনায়নের জন্য ব্যবহার করবে। বন আইন অনুযায়ী, এ ধরনের রক্ষিত বনে কোনো ধরনের স্থাপনা করা নিষিদ্ধ। এরপরও ভূমি মন্ত্রণালয় দেশের অন্যতম জীববৈচিত্র্যসমৃদ্ধ সংরক্ষিত এ বনভূমিকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে খাসজমি হিসেবে দেখিয়েছে।

ঝিলংজা মৌজার এ বনভূমি যে খাসজমি নয়, এটা সরকারি নথি ও রেকর্ডেই আছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব মালিকানাধীন ছাড়া যে কোনো জমি কাউকে দিতে হলে তা আগে অধিগ্রহণ করতে হবে। ভূমি মন্ত্রণালয় তো এ ধরনের কোনো উদ্যোগ নেয়নি; বরং চার হাজার ৮০০ কোটি টাকা মূল্যের ৭০০ একর জমি মাত্র এক লাখ টাকায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে দিয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের এ ধরনের কাজে রাষ্ট্রেরও বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

সরকারি কর্মচারীরা যথেচ্ছভাবে ক্ষমতা, সরকারি অর্থ ও সম্পদের ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন। দুর্নীতি ও অনিয়মের নতুন নতুন পথ নির্মাণ করছেন। জনগণের অর্থের অপচয় ও বিশাল একটি বন এবং এর জীববৈচিত্র্য নষ্ট করা ছাড়া এ থেকে কোনো ফল মিলবে না। সংশ্লিষ্টরা বনাঞ্চল রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন বলেই প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper