ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সুন্দরবনে বারবার অগ্নিকাণ্ড সতর্কতা কাম্য

সম্পাদকীয়
🕐 ১২:৫০ অপরাহ্ণ, মে ০৬, ২০২১

সুন্দরবনে বারবার অগ্নিকাণ্ড সতর্কতা কাম্য

সুন্দরবন বাংলাদেশের গর্ব ও অহংকারের প্রতীক। প্রাকৃতিক এই বনকে দেশের ফুসফুস বললেও অত্যুক্তি হবে না। আশঙ্কাজনকভাবে বনটিতে আগুন লাগছে বারবার। সুন্দরবনে আগুন লাগলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে সর্বত্র। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি এলাকার আগুন নিভেছে। ফায়ার সার্ভিস, বনবিভাগ, সিপিজি সদস্য ও স্থানীয়দের সম্মিলিত চেষ্টা এবং বৃষ্টির পানিতে ওই এলাকার আগুন সম্পূর্ণ নিভেছে। গত মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টায় আগুন নেভানো অভিযান সমাপ্ত করেছে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ। এর আগে সোমবার দুপুরের দিকে সুন্দরবনের দাসের ভারানি এলাকায় আগুন লাগে। ৩০ ঘণ্টা ধরে জ্বলতে থাকা আগুনে বনের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা এখনো জানাতে পারেনি বনবিভাগ। তবে ফায়ার সার্ভিস বলছে, আগুনে অন্তত তিন একর বনভূমি পুড়ে গেছে। পুড়ে যাওয়া বনভূমির পরিমাণ আরও বেশি বলে দাবি করেছে স্থানীয়রা।

এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবনের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্চের ধানসাগর স্টেশনের টহল ফাঁড়ি এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে তিন শতাংশ বনভূমি পুড়ে যায়। সুন্দরবনে একের পর এক আগুন লাগার ঘটনায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। এদিকে আগুন নিভলে শুকনো পাতার অনেক পুরু স্তূপ রয়েছে। যার ফলে কোথাও সুপ্ত আগুন থাকতে পারে বলে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। দৃশ্যমান আগুন না থাকায় যদিও অভিযান সমাপ্তির ঘোষণা দেন তারা।

স্থানীয়রা বলেন, সোমবার আগুনের ধোঁয়া দেখেই আমরা বনবিভাগকে খবর দিই। পরে বনবিভাগের কর্মকর্তারা এলে তাদের সঙ্গে আমরা বনের মধ্যে ঢুকি। লোকালয় থেকে অনেক দূরে গহিন বনে আগুন লাগায় ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে আমাদের দেরি হয়েছে। বনরক্ষী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সঙ্গে আমরাও আগুনের চারপাশে ফায়ার বেজ কাটার কাজ করেছি। দুদিনের অক্লান্ত পরিশ্রমে সুন্দরবনের আগুন নেভাতে সক্ষম হয়েছি। অন্তত পাঁচ একর বনভূমি পুড়েছে।

স্থানীয় একজন বাসিন্দা বলেন, সুন্দরবন আমাদের মায়ের মতো। সুন্দরবন আমাদের আগলে রাখে। সুন্দরবনের ওপর নির্ভর করে আমরা বেঁচে থাকি। কিন্তু সুন্দরবনে একের পর এক যে অগ্নিকাণ্ড ঘটছে, তা আমাদের দারুণভাবে ব্যথিত করছে। এসব আগুনে সুন্দরবনের গাছ পুড়ে ছাই হয় না, সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রাণীও হুমকিতে পড়ে। বারবার সুন্দরবনে আগুন লাগলেও আগুন লাগার কারণও সাধারণ মানুষকে জানানো হয় না। সুন্দরবন রক্ষায় আগুনের বিষয়ে আরও বেশি সতর্ক হওয়ার দাবি জানান তারা। সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) বেলায়েত হোসেন বলেন, ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় আমরা আগুন নেভাতে সক্ষম হয়েছি।

অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে যদি এ অগ্নিকা-কে মানবসৃষ্ট বলা হয়, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। আমরা মনে করি, যেভাবেই আগুন লাগুক তা অপূরণীয় ক্ষতি। নতুন করে যেন অগ্নিকা-ের ঘটনা না ঘটে এ জন্য সংশ্লিষ্টদের আরও সতর্ক থাকা জরুরি।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper