ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

কুটির শিল্প হোক কর্মসংস্থানের উপায়

সম্পাদকীয়
🕐 ১১:০৭ পূর্বাহ্ণ, মে ০৩, ২০২১

কুটির শিল্প হোক কর্মসংস্থানের উপায়

কুটির শিল্প সেই অর্থে বিকশিত হয়নি বাংলাদেশে। অথচ এর সম্ভাবনা ছিল, প্রয়োজন তো ছিলই। স্বল্প ব্যয়ের কুটির শিল্পই হয়ে উঠতে পারত বিকল্প কর্মসংস্থানের উৎস। গত শনিবার খোলা কাগজে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় এ বিষয়ে। তাতে উঠে আসে একটি জেলা ঝালকাঠির কুটির শিল্পচর্চার হালহকিকত। কুটির শিল্পের জন্য বিখ্যাত ছিল ঝালকাঠি। এর মধ্যে ছিল গামছা, শীতলপাটি, শঙ্খ, কাঁসা-পিতল, চুন, মৃৎশিল্প ও কামার ও কুমার শিল্প। কিন্তু কালের বিবর্তনে এসব শিল্প ঝালকাঠি থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন সমস্যার কারণে পেশা পরিবর্তন করছেন এসব শিল্পের কারিগররা। পশ্চিম ঝালকাঠির গামছার তাঁতগুলোতে আগের মতো জৌলুস নেই। বিপুলসংখ্যক পরিবারকে এখন জেলার হাইলাকাঠি গ্রামে দেখা যায় না পাটি বুনতে।

৫০ বছর আগেও ২০-২৫টি পরিবার চুন তৈরি করত। এখন সেখানে মাত্র দুটি পরিবার কাজ করে। শহরের প্রধান দুটি সড়কের নাম কামারপট্টি ও কুমারপট্টি। কিন্তু কামারের দোকান দেখা যায় না। কুমারপট্টিতে কুমারের দোকান রয়েছে মাত্র দুটি। অথচ ব্রিটিশ শাসনামল থেকেই এ দুটি শিল্প ছিল ঝালকাঠির অন্যতম ঐতিহ্য। কুমাররা মাটির তৈরি বিভিন্ন তৈজসপত্র সাজিয়ে সড়কের দুপাশে বসে থাকতেন। ২০টির মতো দোকান থাকলেও এখন ৫-৬টি দোকান রয়েছে তাদের। কাঁচামাল সংকটে শঙ্খ শিল্পের অবস্থাও খারাপ। ২-৩টি পরিবার এখন কাজ করে। প্লাস্টিক সামগ্রীর জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় কাঁসা-পিতলের পণ্য এখন আর চলে না। দামও বেশি।

কুমার শিল্পের কারিগররাও জানালেন একই কথা। তারা বলেন, প্লাস্টিক পণ্যের চাহিদা বেড়ে গেছে। ফলে মাটির তৈরি পণ্য এখন কেউ কিনতে চান না। এ ছাড়া মাটি ও রঙের দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা এখন আর উৎপাদনেও যেতে পারছেন না। বাইরে থেকে পণ্য কিনে এনে বিক্রি করছেন। চুন শিল্পের কারিগররা জানান, শামুকের সংকটসহ কাঁচামালের মূল্য বেড়ে গেছে। কোনো ঋণও পাওয়া যাচ্ছে না। গামছা তৈরির কারিগররাও জানান তারা সহযোগী শ্রমিক পাচ্ছেন না। সুতার মূল্যও বেড়েছে। এদিকে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পকে পৃষ্ঠপোষকতা করার প্রতিষ্ঠান- বিসিক থেকে এসব শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা অনেকেই ঋণ পাচ্ছেন না। ফলে তারা ঘুরে দাঁড়াতেও পারছেন না। কারিগরদের দাবি, স্বল্পসুদে ঋণ পেলে তারা আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারতেন।

অন্যদিকে বিসিক কর্তৃপক্ষ বলছেন অন্য কথা। ঝালকাঠিতে কুটির শিল্পের মধ্যে অনেকগুলো আছে, যারা বিসিকের নিবন্ধিত নয়। তাই তারা তাদের সহায়তা দিতে পারছেন না। বিসিক ঝালকাঠির উপ-ব্যবস্থাপক শাফাউল করিম বলেন, এসব কুটির শিল্প ঝালকাঠির ঐতিহ্য। এগুলো এখন বিলীনের পথে। এর মধ্যে কামার, কুমার, শঙ্খসহ আরও দু-একটি শিল্প আমাদের নিবন্ধিত নয়। তবে তারা যাতে ঘুরে দাঁড়াতে পারে সে ব্যাপারে ঋণ বা সহায়তার ব্যবস্থা করব। প্রণোদনা, পৃষ্ঠপোষকতা কিংবা উৎসাহ যে কোনো কিছু দিয়েই হোক কুটির শিল্পের পুনরুজ্জীবন জরুরি। দেশে কুটির শিল্পের বিকাশ ঘটলে নানাভাবেই সুফল মিলবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা সদিচ্ছা নিয়ে এগিয়ে আসবেন বলেই প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper