ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

চিকিৎসাসামগ্রী নিয়ে জালিয়াতি বন্ধ হোক

সম্পাদকীয়
🕐 ১২:০৯ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৮, ২০২১

চিকিৎসাসামগ্রী নিয়ে জালিয়াতি বন্ধ হোক

যেকোনো দুর্যোগে বরাবরই এক বা একাধিক অসাধু চক্র সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করে। চলমান করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে অসাধু চক্রগুলো বারবারই নিজেদের কুৎসিত চেহারা দেখিয়েছে। সেই কুপ্রবণতা বন্ধ হয়নি এখনো। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে করোনা পরিস্থিতি যখন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে, ঠিক এমন সময় কিছু অসাধু প্রতিষ্ঠান স্বল্পমূল্যে ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ করোনার টেস্টিং কিট ও রি-এজেন্ট ক্রয় করে সেগুলো মজুদ ও বাজারজাত করছিল। শুধু করোনা নয়, অন্যান্য রোগ নির্ণয় করতে যেসব কিট ব্যবহার করা হয় সেগুলো নিয়েও জালিয়াতি করে আসছিল চক্রটি। তারা একটি বিশেষ ধরনের প্রিন্টিং মেশিনের সাহায্যে মেয়াদোত্তীর্ণ এবং মেয়াদ শেষ হতে খুব অল্প সময় বাকি আছে এমন টেস্টিং কিট ও রি-এজেন্টের মেয়াদ বাড়িয়ে তা বাজারে ছাড়ত।

গোপন তথ্যের ভিত্তিতে চক্রটির সন্ধান পেয়ে গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন লালমাটিয়া এলাকায় অবস্থিত বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনাল এবং তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বনানীর এক্সন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড ও হাইটেক হেলথকেয়ার লিমিটেড নামে ৩টি প্রতিষ্ঠানের ওয়্যারহাউসে অভিযান চালায় র‌্যাব এবং ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। অভিযানে চক্রটির মূলহোতাসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়। জব্দ করা হয় বিপুল পরিমাণ অননুমোদিত, মেয়াদোত্তীর্ণ এবং জাল মেয়াদ উৎকীর্ণ ভেজাল মেডিকেল টেস্ট কিট ও রি-এজেন্ট। গত শুক্রবার বিকালে মোহাম্মদপুরে র‌্যাব-২ ব্যাটালিয়ন সদর দফতরে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার।

র‌্যাব-২-এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার বলেন, আমরা যখন অভিযান শুরু করি, তখন সেখানে গিয়ে দেখতে পাই প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের উপস্থিতিতেই বিশেষ ধরনের প্রিন্টিং মেশিনের সাহায্যে মেয়াদোত্তীর্ণ এবং মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার খুব অল্প সময় রয়েছে, এই ধরনের বিভিন্ন টেস্ট কিট ও রি-এজেন্টগুলোর মেয়াদ বাড়ানোর কাজ চলছে। এই মেশিন দিয়ে যেকোনো লেভেল তো বটেই, যেকোনো দ্রব্যসামগ্রীর গায়ে ঠিক পছন্দসই ডিজাউনের ও ফন্টের লেখা সম্পন্ন ডিজাইন নকল করা যায়। পরবর্তীকালে তাদের ওয়্যারহাউসগুলোতে তল্লাশি চালালে বেরিয়ে আসে আরও চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। সেখানে মজুদকৃত বেশিরভাগ মেডিকেল ডিভাইসই অননুমোদিত অর্থাৎ এসব ডিভাইসে সরকারের ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের কোনো অনুমোদন নেই।

চক্রটি সেসব টেস্ট কিট ও রি-এজেন্টে প্রিন্টিং মেশিনের সহায়তায় নতুন মেয়াদের তারিখ বসিয়ে তা বাজারে ছাড়ত। চিকিৎসকরা সাধারণ মানুষের যেসব টেস্ট করাতে দেয়, সেগুলো করানোর জন্যই এসব রি-এজেন্ট ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাদের ওয়্যারহাউসগুলোতে মজুদ থাকা প্রতিটি চালান, প্রতিটি বক্স, প্রতিটি কন্টেইনার পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। এগুলো সব ভেজাল, মেয়াদোত্তীর্ণ, অননুমোদিত এবং নতুন করে টেম্পার করা বা নতুন করে মেয়াদ বাড়িয়ে তা প্রিন্ট করে বসানো। চিকিৎসা সরঞ্জাম নিয়ে কোনো রকম উল্টোপাল্টা কাম্য নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নেপথ্যের আরও কুশীলবকে চিহ্নিত করে যথাযোগ্য শাস্তি দেবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper