করোনায় মৃত্যু : তরুণদের আরও সতর্কতা অবলম্বন জরুরি
সম্পাদকীয়
🕐 ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৩, ২০২১
তরুণ সমাজকে শৌর্য-বীর্যের প্রতীক হিসেবে দেখা হলেও পাল্টে যাচ্ছে সমীকরণ। প্রাথমিক অবস্থায় তরুণদের মোটামুটি সুরক্ষিত ভাবা হলেও বাস্তবতা ভিন্ন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। গত শনিবারে রেকর্ড ভেঙে গত ২৪ ঘণ্টায় (রোববার) মৃত্যু হয়েছে ৭৮ জনের। যাদের অধিকাংশই বয়োবৃদ্ধ। শনিবার মৃত ৭৭ জনের মধ্যে ৪৪ জনই ছিল ষাটোর্ধ। তাছাড়া ১৩ মার্চের পর থেকে বয়স্কদের মৃত্যুহার দ্বিগুণ হতে থাকে এবং ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। আর আইইডিসিআর’র পর্যবেক্ষণ বলছে আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ৬৯ শতাংশই তরুণ-মধ্যবয়সী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে ইউকে ভ্যারিয়েন্ট এবং সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের কারণে এমনটি হচ্ছে। আগে ১ জন থেকে ১০ জন সংক্রমিত হলেও এখন ভ্যারিয়েন্টের কারণে ১০ জন থেকে ১৬ জন আক্রান্ত হচ্ছে।
গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর এবং মোহাম্মদপুরের আদাবর এলাকায় করোনাভাইরাসের সর্বাধিক সংক্রমণের তথ্য পেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। দিন দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) পরিস্থিতি কঠিন হচ্ছে। করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তার ও নার্সরা। অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে কুইক রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে। দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ বলেন, এখন যে হারে সংক্রমণ হচ্ছে তার অন্যতম কারণ ভ্যারিয়েন্ট। আমাদের চিকিৎসক নার্সদের অভিজ্ঞতা আগের চেয়ে বেড়েছে। সুতরাং ম্যানেজমেন্টের কারণে যে মৃত্যু বেশি হচ্ছে সেটা মনে হচ্ছে না। ভ্যারিয়েন্টের কারণে রোগের প্যাটার্ন অন্যরকম হয়ে গেছে। যার কারণে বয়স্কদের মৃত্যু বেড়েছে, তরুণ জনগোষ্ঠী ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হচ্ছে এবং আগের তুলনায় বেশি হাসপাতালের সাপোর্ট লাগছে।
ঢামেকের নতুন ভবনের ভিতরে গিয়ে অসংখ্য রোগী ও তাদের স্বজনদের ভিড় দেখা যায়। ভবনের বাইরে একটি আলাদা রুমে ‘জ্বর-কাশি ও শ্বাসকষ্ট’ রোগীদের বসার জায়গা ছিল। সেখানেও রোগীদের ভিড় দেখা যায়। অথচ সেখানে কোনো বেড খালি নেই। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলের নতুন ও পুরাতন বার্ন ইউনিট ভবনে মোট ৮০০টি বেড, ২০টি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) এবং ৪০টি হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটের (এইচডিইউ) সবই এখন রোগীতে পরিপূর্ণ। ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রি. জে. নাজমুল হক বলেন, ‘আইসিইউ এবং এইচডিইউতে কোনো সিট খালি নেই। করোনা ইউনিটে গাইনি এবং সার্জারি বিভাগের কিছু সিট খালি আছে, তবে সেগুলোতে অন্য করোনা রোগী ভর্তি করা হয় না।’
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সার্বিক সহযোগিতা দিতে ‘কুইক রেসপন্স টিম’ গঠন করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে গত রোববার মন্ত্রণালয়ে অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে। অফিস আদেশে বলা হয়, রেসপন্স টিমের সদস্যরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী আক্রান্ত হলে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। যেকোনো মৃত্যুই বেদনার। এর মধ্যে তরুণদের মৃত্যু আরও গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে। পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করে তরুণরা আরও সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। নিজে সুরক্ষিত থেকে পরিবারকেও সুরক্ষা দেবেন তারাÑ এটাই প্রত্যাশিত।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228