লকডাউন ইতিবাচক, তবে...
সম্পাদকীয়
🕐 ২:৫৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১১, ২০২১
কঠোর পরিস্থিতির দিকে এগোচ্ছে দেশ; করোনায় বিপর্যস্ত জনজীবন। অজানা এক আতঙ্ক জেঁকে বসেছে মানুষের। জীবন-জীবিকাও পড়েছে হুমকির মুখে। করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার প্রথম ১৮ দফা ‘নির্দেশনা’ প্রদান করে। বিশেষজ্ঞদের মতে সেই নির্দেশনা ছিল অনেকটা অস্পষ্ট। তা বাস্তবায়নের কোনো ফলপ্রসূ পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি। সংক্রমণ বাড়তে থাকলে এক সপ্তাহের ‘লকডাউন’ ঘোষণা করা হয়। তখন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, করোনার সংক্রমণ রোধে এক সপ্তাহের ‘লকডাউন’ ফলপ্রসূ হয় না। অন্তত দুই সপ্তাহের হওয়া উচিত। চলমান এই লকডাউনকে বিশেষজ্ঞরা অবৈজ্ঞানিক বলে উল্লেখ করেন। বিভিন্ন কিছু খোলা থাকার মধ্য দিয়ে চলতে থাকে সেই লকডাউন। সচেতন অনেকেই এই লকডাউন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রল করে। এরই মধ্যে লকডাউনের পঞ্চম দিনে এসে এবার এক সপ্তাহের ‘সর্বাত্মক লকডাউনে’র যাওয়ার কথা জানিয়েছে সরকার।
সংশ্লিষ্ট ও বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্তত দুই সপ্তাহের জন্য ‘পূর্ণ লকডাউন’ ছাড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। এই কমিটি সরকারকে দুই সপ্তাহের ‘পূর্ণ লকডাউনের সুপারিশ করেছে। সেই সঙ্গে বিধিনিষেধ আরও শক্তভাবে অনুসরণের তাগিদ দিয়েছে পরামর্শক কমিটি। আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এম এম আলমগীর হোসেন বলেন, ‘কারিগরি কমিটি দুই সপ্তাহের শক্ত লকডাউনের সুপারিশ করেছে। যাতে জরুরি সেবা ছাড়া সব বন্ধ রাখার থাকবে।’ কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ৩০তম সভা জুম এর মাধ্যমে বুধবার রাতে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা। সভায় কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে বিস্তারিত আলোচনা শেষে সুপারিশসমূহ গৃহীত হয়।
গত শুক্রবার কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা স্বাক্ষরিত সুপারিশ সংবাদমাধ্যমে পাঠানো হয়। তাতে বলা হয়েছে, সারা দেশে উদ্বেগজনকভাবে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বাড়ছে। সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত ১৮টি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকেও করোনা নিয়ন্ত্রণে বিধিনিষেধ দেওয়া হয়। এগুলো সঠিকভাবে মানা হচ্ছে না, সংক্রমণের হার বাড়ছে। বিধিনিষেধ আরও শক্তভাবে অনুসরণ করা দরকার। অন্তত দুই সপ্তাহের জন্য পূর্ণ লকডাউন ছাড়া এটা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না বলে সভায় মতামত ব্যক্ত করা হয়। বিশেষ করে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা এলাকায় পূর্ণ লকডাউন দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। দুই সপ্তাহ শেষ হওয়ার আগে সংক্রমণের হার বিবেচনা করে আবার সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।
শয্যা সংখ্যা, আইসিইউ সুবিধা, অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ানোর জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সচেষ্ট। ডিএনসিসি হাসপাতাল আগামী সপ্তাহের মধ্যে চালু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। সরকারি পর্যায়ের এই কার্যক্রমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হাসপাতালে রোগী ভর্তির বাড়তি চাপ থাকায় অতি দ্রুত আরও সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। বিদ্যমান বাস্তবতায় লকডাউন দিলেও সাধারণের সেটা মানতে হবে নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থেই। তবে নিম্ন আয়ের মানুষরা যেন লকডাউনে নাকাল না হয়, তাদের জন্য বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা রাখা উচিত। বাস্তবায়ন করা গেলে সেটাই হবে সুবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228