দখলমুক্ত হোক পাবনা মানসিক হাসপাতালের জমি
সম্পাদকীয়
🕐 ১২:১৩ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ০৮, ২০২১
দখলবাজির সংস্কৃতি বাংলাদেশে নতুন নয়। তাই বলে সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হাসপাতালের জমিও বেদখল হবে এটা প্রত্যাশার বাইরের বিষয়। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের মানসিক রোগীদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ১৯৫৭ সালে ১৩৩ দশমিক ২৫ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট পাবনা মানসিক হাসপাতাল। এই হাসপাতালকে বিশ্বমানের অন্যতম হাসপাতাল করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। সেজন্য ইতোমধ্যে যাবতীয় দিকনির্দেশনা দ্রুত প্রেরণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০২০ সালের অক্টোবরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি টিম পাবনা মানসিক হাসপাতাল পরিদর্শন করে এবং কিছু নির্দেশনা দিয়ে যায়। নির্দেশনার মধ্যে অন্যতম হলো হাসপাতালের নিখোঁজ হওয়া ১০০ বিঘা জায়গা উদ্ধার করা।
জায়গা উদ্ধারের নির্দেশনা দিলেও কোনো অগ্রগতি নেই নির্দেশনা বাস্তবায়নের। দায়িত্বশীলদের উদাসীনতার কারণে প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে আশংকা করেছেন পাবনাবাসী। জমি উদ্ধারের দাবি সচেতন মহলের। পর্যাপ্ত পরিমাণে জায়গা থাকায় জমি অধিগ্রহণের কোনো ঝামেলা না থাকায় বিশ্বমানের মানসিক হাসপাতাল করার পরিকল্পনা করেছে সরকার। হাসপাতালের জমির পরিমাণ ১৩৩ দশমিক ২৫ একর এবং আগে এই জমির খাজনা দেওয়া হতো। এর মধ্যে পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে দেওয়া হয়েছে ৩০ একর। বর্তমানে এই হাসপাতাল খাজনা দিচ্ছে ৭৪ একর জমির। রহস্যজনকভাবে অবশিষ্ট ২৯ দশমিক ২৫ একর জমির খোঁজ নেই। ২০২০ সালের অক্টোবরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি টিম পাবনা মানসিক হাসপাতাল পরিদর্শন করে এ তথ্য জানতে পারে। নিখোঁজ ১০০ বিঘা জমি উদ্ধার প্রক্রিয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ধীরগতির ফলে বিশ্বমানের হাসপাতাল করার প্রকল্প অনুমোদন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন পাবনার সচেতন মহল।
মানসিক হাসপাতালের সাইক্রিয়াটিস্ট মকবুল হোসেন (পাশা) জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভায় জানান মানসিক হাসপাতালের ২৯ একর জমি উদ্ধারসহ অন্যান্য সমস্যা দ্রুত সমাধান করার জন্য জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তার আবেদনের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন জমির অবস্থান জানানোর জন্য এসিল্যান্ডকে দায়িত্ব দেয়। বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও অ্যাক্যুমেন আর্কিটেক্টস অ্যান্ড প্লানার্সের পরিচালক আবু রায়হান রুবেল বলেন, আমার জানা মতে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় পাবনা মানসিক হাসপাতাল আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল হবে। এটা নিয়ে সময়ক্ষেপণ করা ঠিক হবে না। দায়িত্বশীলদের আরও দ্রুত বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
পাবনা সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রোকসানা মিতা বলেন, এর আগেও কাজ করেছি। মানসিক হাসপাতালের জমি বিভিন্ন নামে রেকর্ড হয়েছে। রেকর্ড পরিবর্তন করতে হবে। এ ব্যাপারে পাবনা মানসিক হাসপাতালের পরিচালক আসাদুজ্জামান বলেন, জমির বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে সমন্বিত প্রচেষ্টায় জমি উদ্ধারসহ সব সমস্যা সমাধান করা হবে। কয়েক দিন অফিসে না থাকায় জানতে পারছি না যে, জেলা প্রশাসন জমি সংক্রান্ত তথ্য অফিসে দিয়ে গেছেন কিনা। জনস্বার্থেই হাসপাতালের জমি দখলমুক্ত করা জরুরি। সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে সত্বর পদক্ষেপ নেবেন বলেই প্রত্যাশা।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228