চিকিৎসক-সেবিকাদের করোনা নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি
সম্পাদকীয়
🕐 ৮:০১ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ০৭, ২০২১
করোনা রোগীর চাপ বাড়ায় হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। রোগী প্রতিদিনই বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এভাবে বাড়তে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। করোনা চিকিৎসায় সহায়তা করতে গিয়ে সেবিকারা মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। চিকিৎসা প্রদান এবং হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা দুটোতেই কঠিন চাপ পড়েছে। হাসপাতালের ধারণক্ষমতার ওপরও প্রভাব পড়ছে। শয্যা সংকুলান ও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার কথা জানা যাচ্ছে গণমাধ্যমের খবরে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ যদি বাড়তেই থাকে তাহলে আরও অনেক আক্রান্ত চিকিৎসা নিতে আসবেন হাসপাতালে। প্রতিদিন যেভাবে রোগী আসছে হাসপাতালে তা অব্যাহত থাকলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। যদি করোনার উৎস নিয়ন্ত্রণ করা না যায়; হার যদি বেড়ে যায়, বেশিরভাগ জনগোষ্ঠী যদি আক্রান্ত হয়ে যায়, তাহলে সামাল দেওয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।
যাতে নতুন করে কেউ আক্রান্ত না হয় সেদিকে জোর দিতে হবে। কেননা, করোনা আক্রান্ত বাড়লে রুটিন চিকিৎসা সংকোচন করতে হবে। বর্তমানে রোগী বাড়ছে আর একটা একটা করে ওয়ার্ড করোনা রোগীদের জন্য নেওয়া হচ্ছে। এখনই হাসপাতালে দেখা দিয়েছে শয্যা সংকট। এভাবে যদি প্রতিদিন যদি পাঁচশ-এক হাজার রোগী হাসপাতালে ভর্তি হতে থাকে তাহলে গোটা ঢাকা নগরীকে হাসপাতাল করে ফেললেও রোগী রাখার জায়গা দেওয়া যাবে না।
করোনাকালে নার্সদের নিয়ে এক গবেষণা প্রকাশিত হয় গত ২ এপ্রিল। বিশ্ববিখ্যাত স্প্রিংজার পাবলিশার্সের একটি জার্নালে দেশের ৫৪৭ জন নার্সের ওপর পরিচালিত এ গবেষণা প্রকাশিত হয়। তাতে বলা হয়েছে, করোনার সময় দেশের প্রায় অর্ধেক নার্স মানসিক স্বাস্থ্য সংকটে ভুগছিলেন। ৫০ দশমিক ৫ শতাংশ নার্স মানসিক বিষণœতা, ৫১ দশমিক ৮ শতাংশ মানসিক উদ্বেগ, ৪১ দশমিক ৭ শতাংশ মানসিক চাপ নিয়ে সেবা দিয়েছেন। ৬১ দশমিক ৯ শতাংশ নার্সের মধ্যে মানসিক প্রভাব পড়েছিল, তবুও রোগীদের সেবা দিয়েছেন। মানসিক চাপ পুরুষদের চেয়ে নারীদের মধ্যে বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে।
যে নার্সদের সম্পূর্ণ পিপিই ছিল, তাদের মধ্যে বিষণ্নতা, উদ্বেগ এবং মানসিক চাপ কম লক্ষ্য করা গেছে। যারা মানসিক নির্যাতনের মুখোমুখি হয়েছেন, তাদের মধ্যে বিষণ্নতা, উদ্বেগ, মানসিক চাপ এবং করোনার মানসিক প্রভাব বেশি লক্ষ্য করা গেছে। কোভিড-১৯ মহামারী সময়ে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্ব দেওয়া অত্যন্ত জরুরি উল্লেখ করে চারটি সুপারিশ করা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে, স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জাম (পিপিই) নিশ্চিত করা; সামাজিকভাবে মানসিক নির্যাতন রোধ করে, তাদের অবস্থানকে দৃঢ় করা; মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে নার্সদের কাজের উৎসাহ প্রদান করা এবং সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা, বিশেষত নারীদের জন্য যারা কোভিড-১৯ এ কাজ করে যাচ্ছেন। করোনার যে পরিস্থিতি তাতে চিকিৎসক ও নার্সদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করা অত্যন্ত জরুরি। মানসিক অবসাদগ্রস্ত চিকিৎসক ও নার্সদের সংখ্যা যদি বাড়তে থাকে তাহলে সার্বিক চিকিৎসা ক্ষেত্রে ভয়াবহ সংকট তৈরি হবে। বিষয়টি মাথায় রেখে তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকে আন্তরিকভাবে নজর দিতে হবে।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228