মশার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিন
সম্পাদকীয়
🕐 ১১:৪০ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ০৫, ২০২১
ক্ষুদ্র প্রাণী মশা বড় যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুর্বিসহ হয়ে উঠছে নগরজীবন। বিশেষ করে ঢাকাবাসীর ভোগান্তি যেন প্রতি ক্ষণে ক্ষণে! এ বিষয়ে গতকাল একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে খোলা কাগজ। তাতে বলা হয়, মশার যন্ত্রণায় নাজেহাল রাজধানীবাসী। দরজা-জানালা বন্ধ রেখেও মিলছে না মুক্তি। সন্ধ্যার পর বাইরে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা দায়। বাসায় ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে অগনিত মশা ঢুকে পড়ছে ঘরে। এদিকে খুদে প্রাণীটির বিরুদ্ধে রীতিমতো যুদ্ধে নেমেছেন নগরবাসী। মশারি, কয়েল, অ্যারোসল, স্প্রে, ধূপ, ইলেকট্রিক ব্যাট, ইলেকট্রিক আলোর ফাঁদসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম কিনে মশার অত্যাচার থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে। আবার অনেকেই অনলাইনে মশা মারার কোনো যন্ত্র দেখলেই ভালো-মন্দ যাচাই-বাছাই না করেই কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন।
ব্যক্তি উদ্যোগে বা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জানালায় নেট লাগানোর ব্যবস্থা শুরু করছেন কেউ কেউ। ধাতব নেট লাগানোর ব্যবস্থা নেই যেসব জানালায়, সেখানে বিশেষ কায়দায় লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে মশারির কাপড়। প্রতি বর্গফুট মশারি লাগাতে খরচ নিচ্ছে ৩৬-৪০ টাকা। দুই মাস আগের তুলনায় মশারি, কয়েল, অ্যারোসল, স্প্রে, মশা মারার ইলেকট্রিক ব্যাট বিক্রি অন্তত কয়েকগুণ বেড়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ইলেকট্রিক ব্যাট। গবেষকরা বলছেন, সাধারণত নর্দমা, ড্রেন, ডোবার বদ্ধ পচা পানিতে মশার উৎপত্তিস্থল। শীতের শেষে তাপমাত্রা বাড়ায় প্রকৃতিতে যে মশার ডিম থাকে সেগুলো একযোগে ফুটে যায়। যে কারণে ফেব্রুয়ারি ও মার্চে মশাল ঘনত্ব বেড়ে যায়। নির্দিষ্ট কোনো একটি কীটনাশক একটানা পাঁচ বছরের বেশি ব্যবহার করলে সে কীটনাশকের বিপক্ষে মশার টিকে থাকার শক্তি তৈরি হয়। তাই মশা নিয়ন্ত্রণে কীটনাশক পরিবর্তনের বিষয়ে নজর দেওয়া দরকার। সারা বছর নিয়মিতভাবে সেগুলো ছিটানো প্রয়োজন।
৮ থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত কিউলেক্স মশা নিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম চালানো হবে বলে জানিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। মশক নিধনে ২০২০-২১ অর্থবছরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বাজেট রাখা হয়েছে ৭৭ কোটি টাকা। অন্যদিকে মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের জন্য ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। মশা নিয়ে মানুষ অতিষ্ঠ বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম। গত বুধবার দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে রাজধানীর পান্থকুঞ্জে অবস্থিত এসটিএস উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী আরও বলেন, মশার বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের খবর প্রচার হচ্ছে। আমি নিজেও জানি মশা বেড়েছে। যদিও গত বছর যে পরিমাণ কিউলেক্স এবং অ্যানোফিলিস মশা ছিল এ বছর সেই তুলনায় কম।
তাজুল ইসলাম বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণে আমাদের পক্ষ থেকে দায়িত্ব পালন করা হচ্ছে। মেয়র সাহেবরা কাজ করে যাচ্ছেন। এডিস মশার জন্ম হয় বাসা-বাড়িতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জায়গায়। আর ঝোপ-জঙ্গল, কচুরিপানায় অ্যানোফিলিস এবং কিউলেক্স মশার জন্ম হয়। মশার যন্ত্রণা থেকে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থার আরও তৎপর হওয়া জরুরি। তারা আন্তরিকতার সঙ্গে জনদুর্ভোগ কমাতে সচেষ্ট হবেন বলেই প্রত্যাশা।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228