ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

হাওরের শঙ্কা দূর করুন

সম্পাদকীয়
🕐 ১১:১৫ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২১

হাওরের শঙ্কা দূর করুন

বিগত কয়েক বছরে হাওরে নেমে এসেছে নানা ধরনের দুর্যোগ। অকাল বন্যা ও জলাবদ্ধতায় ফসলহানি হয়েছে কয়েকবার। তবুও বন্ধ হয়নি শঙ্কার কালো মেঘ। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে সুনামগঞ্জের হাওর-চিত্র। সুনামগঞ্জ সদর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, দোয়ারাবাজার ও ছাতক চার উপজেলা নিয়ে সুনামগঞ্জের অন্যতম বৃহত্তম হাওর ‘দেখার হাওর’। বোরো ধানের ভা-ার হিসেবে পরিচিত এ দেখার হাওরের ফসল সুরক্ষা নিয়ে শঙ্কা যেন কাটছেই না। নির্ধারিত সময়ে বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় বোরো ফসল তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন হাজার হাজার কৃষক। খাতা-কলমে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিতে (পিআইসি) কৃষক দেখানো হলেও শক্তিশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হাওরের বাঁধ নির্মাণকাজ চলছে বলে রয়েছে অভিযোগ।

বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে জানা গেছে, কচ্ছপ গতি ঝুঁকিতে ফেলছে ৩৬ হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল। প্রকল্পের কাজের নির্ধারিত সময়সীমা আর সপ্তাহ খানেক বাকি থাকলেও মাথাব্যথা নেই সংশ্লিষ্টদের। কাবিটা নীতিমালা ২০১৭ অনুযায়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কার ও ভাঙা বন্ধকরণে এবার দক্ষিণ সুনামগঞ্জের কয়েকটি হাওরে ৬০টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। ৪০ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। জেলার সবচেয়ে বড় ‘দেখার হাওর’-এর মহাসিং নদীর দুপাড়ে ১২টি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এসব প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে প্রায় আড়াই কোটি টাকা। ২০২০ সালের ১৫ ডিসেম্বর এসব প্রকল্পে বাঁধের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অধিকাংশ প্রকল্পে কাজ শুরুই হয়নি।

কোনো কোনো প্রকল্পে এখনো শেষ হয়নি মাটি ফেলার কাজ। দেখার হাওরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্লোজার উথারিয়ার অর্ধেকের বেশি জায়গায় পড়েনি মাটি। এদিকে কাজ বাস্তবায়নের নির্ধারিত সময়সীমার দিন ফুরিয়ে আসছে। গত শুক্রবার বিকালেও উথারিয়ার মূল ক্লোজার উন্মুক্ত ছিল। বাঁধে মাটি ফেলা চলমান থাকলেও নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন হওয়া নিয়ে শঙ্কিত এলাকার কৃষক। বাঁধ টেকসই করতে ক্লোজারে বস্তা তৈরি, দুরমুজসহ অন্যান্য কর্মকা- চোখে পড়েনি। সংশ্লিষ্টরা জানান, বাঁধে মাটি ফেলার কাজ শেষ হলে এসব কাজ শুরু হবে। অন্যদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকল্পের কাজের নির্ধারিত সময়ের আর সপ্তাহখানেক বাকি থাকলেও মাথাব্যথা নেই সংশ্লিষ্টদের। প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেটর হাতে দেওয়া হয়েছে কাজ। ফসল নিয়ে ঝুঁকি থাকলেও কথা বলতে নারাজ তারা। তাতে রয়েছে জীবনের ঝুঁকি। খাতা-কলমে কৃষকদের পিআইসি করা হলেও সিন্ডিকেটই নিয়ন্ত্রণ করছে সব।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পিআইসি সভাপতি বলেন, ‘যারা বাঁধের কাজ পাইছে এরা তো গরিব মানুষ। নামে পিআইসি হলেও বাঁধের মূল নিয়ন্ত্রণ অন্যদের হাতে। প্রথম বিল পাওয়ার পর পিআইসিরা ৫ হাজার টাকা করে পাইছিল। কাজ করছে সিন্ডিকেট। বিল উঠিয়ে তাদের কাছেই টাকা দেওয়া হবে। বাঁধের ক্ষয়ক্ষতি হলে পিআইসিদের ধরা হবে। কিন্তু নিয়ন্ত্রকরা এমনভাবে আড়ালে রয়েছেন তাদের নাম-নিশানাও পাওয়া যাবে না।’ এমন পাল্টাপাল্টি অভিযোগে যেন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত না হন। হাওরের অব্যবস্থাপনা দূরীকরণে সংশ্লিষ্টরা দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন বলেই প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper