‘সুষম খাদ্য গ্রহণে সচেতনতা সৃষ্টি জরুরি’
সম্পাদকীয়
🕐 ১১:২৬ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২১
সুষম খাদ্য প্রত্যেক মানুষেরই প্রয়োজন। অন্যদিকে বাস্তবতা হচ্ছে, অনেক মানুষই সুষম খাদ্য থেকে বঞ্চিত। অর্থাভাব যেসব মানুষের নেই, তাদের পোহাতে হচ্ছে ভেজাল খাদ্যের বিড়ম্বনা। পণ্যে ভেজাল দেওয়া বাংলাদেশে অপসংস্কৃতি হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে। খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা ব্যবসা করছেন, তারা দু’পয়সা বেশি আয়ের জন্য খাদ্যে ভেজাল দেন বা পচা, গন্ধ ও বাসি খাবার পরিবেশন করে থাকেন। এভাবে নিজের লাভের জন্য মানুষের ক্ষতি আর করবেন না। গত বৃহস্পতিবার সকালে ‘জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস-২০২১’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে খাদ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ সম্পর্কিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নেন।
খাদ্যে ভেজাল প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারেও একদিকে যেমন সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে, অন্যদিকে কঠোর হাতে তা দমনও করতে হবে। দুদিকেই ব্যবস্থা নেওয়াটা একান্তভাবে দরকার। প্রধানমন্ত্রী খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, সেই ব্যবস্থাগুলোও আপনাদের নিতে হবে। দেশের জনগণের পুষ্টির চাহিদা পূরণে সুষম খাদ্য গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করে এ ব্যাপারে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, সুষম খাদ্য গ্রহণের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা একান্তভাবে জরুরি ও প্রয়োজন। এটা নিরাপদ খাদ্যের মধ্যেও পড়বে বলে আমি বিশ্বাস করি। জনগণ, বিশেষ করে বয়স্ক, শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারীরা পুষ্টির জন্য কীভাবে এই সুষম খাবার গ্রহণ করবেন, সে বিষয়ে সচেতন করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে একটি অনুরোধ করব, নিরাপদ খাদ্যের জন্য কেবল ল্যাবরেটরি টেস্ট করলেই হবে না, সেই সঙ্গে আরেকটি কাজ করতে হবে, সুষম খাদ্য কীভাবে গ্রহণ করতে হবে, তা প্রচার করতে হবে। খাদ্যটা কীভাবে নিলে সেটা সুষম হবে, সেটা যেমন মাথায় রাখতে হবে, তেমনি প্রচারেরও ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারপ্রধান বলেন, অতীতে দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত দেশের মানুষদের পুষ্টি সম্পর্কে সচেতনতা না থাকায় নুন-মরিচ দিয়ে পেট ভরে চারটে ভাত খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করলেও এখন কিছুটা আমিষও ক্রয় করতে পারছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আরও যাতে বাড়ে, তাদের যেন আর্থিক সচ্ছলতা আসে, সে জন্যই তার সরকার নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী খাদ্যে ভেজাল দেওয়ার কঠোর সমালোচনা করে এ বিষয়েও জনসচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি আইন প্রয়োগে কঠোর হওয়ার জন্যও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে ১০০টি খাদ্যশিল্পে ‘সেফ ফুড প্ল্যান’ যে নেওয়া হচ্ছে, এটি সারা দেশেই বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন এবং একেবারে গ্রামপর্যায় পর্যন্ত এটা নিয়ে যেতে হবে। দেশে কেন্দ্রীয়ভাবে ফুড টেস্টিং ল্যাব প্রতিষ্ঠার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা বিভাগীয় পর্যায়েও করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারিকে আমরা স্বাগত জানাই। এখন প্রয়োজন ভেজাল রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া। দায়ীদের যথাযোগ্য সাজার মুখোমুখি করতে পারলেই ভেজালমুক্ত বাজার দৃশ্যমান হবে!
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228