ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

প্রকাশক দীপন হত্যার রায় সত্বর সাজা কার্যকর হোক

সম্পাদকীয়
🕐 ১২:৩৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২১

প্রকাশক দীপন হত্যার রায় সত্বর সাজা কার্যকর হোক

প্রগতিশীল লেখক ও ব্লগার হত্যার নেতিবাচক প্রবণতা শুরু হয়েছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরপরই। উগ্রপন্থীদের হাতে পর্যায়ক্রমে খুন হন কয়েকজন মুক্তমনা লেখক। শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটে ‘জাগৃতি প্রকাশনী’র স্বত্বাধিকারী প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। দীর্ঘ ছয় বছর পর আলোচিত ওই হত্যা মামলার রায় প্রকাশ করেছেন আদালত। রায়ে সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত সাবেক মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকসহ আট জঙ্গির ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে। গত বুধবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আট আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়। আসামিদের মধ্যে দুজন এখনো পলাতক।

গতকাল খোলা কাগজে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় এ বিষয়ে। ৫৩ পৃষ্ঠার রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ‘জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম সাংগঠনিকভাবে ফয়সল আরেফিন দীপনকে হত্যা করে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে নিহতের আত্মা যেমন শান্তি পাবে, তেমনি ভবিষ্যতে এ রকম কাজ করার আর কেউ সাহস পাবে না। যারা শুধু বই প্রকাশের কারণে মানুষ হত্যা করতে পারে, তারা জাতি ও রাষ্ট্রের শত্রু। লেখক, ব্লগার ও প্রকাশকদের হত্যার অংশ হিসেবে বিজ্ঞানমনস্ক লেখক অভিজিৎ রায়ের বই প্রকাশের জন্যই জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক দীপনকে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকান্ডের নির্দেশদাতা হলেন চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক। তার মূল কাজ ছিল জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং মূল হত্যাকারীদের অর্থায়ন করা। আর দীপন হত্যার পরিকল্পনা করেন আসামি আকরাম হোসেন। আসামি মইনুল হাসান শামিম অস্ত্র সংগ্রহ করেন।’

আদালত আরও বলেন, ‘আসামি মোজাম্মেল হোসেন দীপন হত্যার পরিকল্পনায় অংশগ্রহণ করে ঘটনাস্থল রেকি করে আসেন। হত্যাকান্ডের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসামি শেখ আবদুল্লাহ। এই আসামিদের অভিন্ন উদ্দেশ্য ছিল ব্লগার, প্রকাশক ও সমকামীদের হত্যার অংশ হিসেবে ফয়সল আরেফিন দীপনকে হত্যা করা। জিহাদের অংশ হিসেবেই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম ও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যদের লক্ষ্য ছিল ব্লগার, লেখক, প্রকাশকদের হত্যা করে মানুষের কণ্ঠ স্তব্ধ করে দেওয়া। মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি করে জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করা আর এসব উদ্দেশ্যই হলো মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে বন্ধ করে দেওয়া। রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক চরিত্র ধ্বংস করে দেওয়াই ছিল আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যদের লক্ষ্য।’

রায় ঘোষণার পর এজলাস কক্ষে কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনের স্ত্রী চিকিৎসক রাজিয়া রহমান। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। তবে আমি এই রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।’ আদালতের দেওয়া রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন দীপনের বাবা অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘এটা প্রত্যাশিত রায়।’ বাদবাকি আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে খুনিদের সাজা নিশ্চিত করা জরুরি। বাস্তবতা বিবেচনায় সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলেই প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper