চসিক নির্বাচন : স্বচ্ছতা কাম্য
সম্পাদকীয়
🕐 ২:১২ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৬, ২০২১
নির্বাচন বরাবরই উৎসবের আমেজ নিয়ে এসেছে বাংলাদেশে। সাধারণ মানুষ ও ভোটারদের মধ্যে নির্বাচন বড় আনন্দের এক উপলক্ষ। কিন্তু বিগত কয়েকটি নির্বাচনে সহিংস ঘটনা ঘটেছে। হতাহতও হয়েছে সাধারণ মানুষ। এরপরও সবার প্রত্যাশা, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হবে। সাধারণ মানুষ আবারও ভাসবে নির্বাচনী আনন্দের জোয়ারে। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনের প্রচারণা শুরুর পর আচরণবিধি ভঙ্গ, হামলা-হুমকিসহ ৫৬টি অভিযোগ জমা হয়েছে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত। আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, চসিক নির্বাচনের প্রচারণা শুরুর পর আচরণবিধি ভঙ্গ, হামলা-হুমকিসহ গত শনিবার পর্যন্ত ৫৬টি অভিযোগ জমা হয়েছে।
সর্বোচ্চ সংখ্যক ১২টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের পক্ষ থেকে। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে তিনটি অভিযোগ। বাকি ৪১টি অভিযোগ নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীদের। এর মধ্যে বিএনপি প্রার্থীর ১২টি অভিযোগের তিনটির কোনো সত্যতা পায়নি নির্বাচন কমিশন ও তদন্তকারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আটটি অভিযোগের কোনো ফলাফল জানাতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। শুধু একটি অভিযোগের ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের নির্বাচনী বিধিমালা মেনে চলার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে কমিশন। যদিও নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ও নানা কাগজে তথ্য বলছে অন্য কথা। অনেকেই মানেননি নির্বাচনী বিধিনিষেধ। এদিকে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বলেন, ‘যদি কোনো ফৌজদারি কর্মকা- হয়ে থাকে, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এই সুযোগে কেউ যেন হয়রানি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখছি।’
পণ্য পরিবহনকারী বিশাল ট্রেইলার গাড়িকে মঞ্চ বানিয়ে আগে-পেছনে মোটরসাইকেল, পিকআপ ভ্যান নিয়ে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর সমর্থনে প্রচারণা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। প্রচারণায় অংশ নেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। গত শনিবার নগরের লালখানবাজারের ইস্পাহানী মোড় থেকে শুরু হওয়া এ প্রচারণার গাড়িবহর নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। তাদের গাড়িবহরের কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। এর আগে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের ডেকে মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর জন্য নগরবাসীর কাছে ভোট চেয়েছেন সরকারি পদে থাকা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।
২০ জানুয়ারি মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদত হোসেনের পক্ষে চট্টগ্রাম নাগরিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক একরামুল করিম অভিযোগ করেন, ‘আওয়ামী লীগের (প্রেসিডিয়াম মেম্বার) সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের স্বাক্ষরে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে দল-সমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের তালিকা ছাপানো হয়েছে, যা সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিধিমালার লঙ্ঘন।’
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। মেয়র প্রার্থীর মতো কাউন্সিলরদের অভিযোগেরও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তারা। শনিবার পর্যন্ত কাউন্সিলর প্রার্থীদের মোট ৪১টি অভিযোগের ১৩টি ঘটনার কোনো ফলাফল জানাতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। চসিক নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে সংশ্লিষ্টরা তৎপর হবেন বলেই আমাদের প্রত্যাশা।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228