ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শব্দদূষণের ভয়াবহতা বন্ধ হোক

সম্পাদকীয়
🕐 ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২৫, ২০২১

শব্দদূষণের ভয়াবহতা বন্ধ হোক

শব্দদূষণ নানাভাবেই সৃষ্টি করছে রকমারি সংকটের। একদিকে স্বাস্থ্য সংকট অন্যদিকে এর ফলে পরিবেশও হয়ে পড়ছে অসহনীয়। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে নানাদিকে, নানাভাবে। এ বিষয়ে গতকাল প্রকাশিত খোলা কাগজের প্রতিবেদনে বলা হয়, শব্দদূষণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। বিশে^ শব্দদূষণের তালিকায় শীর্ষ দেশগুলোর কাতারে চলে আসছে বাংলাদেশ। এই মুহূর্তে শব্দদূষণের লাগাম টেনে ধরতে না পারলে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হবে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, দূষণ রোধে যেসব কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন, তার মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি অন্যতম।

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা এবং আমদানি নীতি আদেশ ২০১৫, ২০১৮ প্রয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে দেখা দিয়েছে একধরনের অচলাবস্থা। শব্দদূষণের অন্যতম উৎস হর্ন বাজানো। হাইড্রোলিক হর্ন আমদানি রোধে আমদানি নীতি আদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রণয়ন করা হলেও নেই তার প্রয়োগ। যেসব সীমান্ত এলাকা দিয়ে এসব হর্ন আমদানি করা হচ্ছে তার মানমাত্রা নির্ধারণের জন্য এসব সীমান্ত এলাকার কাস্টমসের কাছে নেই নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র। তিন বছর ধরে এই আমদানি নীতিমালা করা হলেও সীমান্ত এলাকায় কাস্টমসের কাছে আমদানিকৃত হর্নের মানমাত্রা ৭৫ ডেসিবেলের ঊর্ধ্বে কিনা তা যাচাইয়ের জন্য মানমাত্রা মাপার যন্ত্র নেই কেনÑ তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। আইন থাকার পরও খোদ রাজধানীতেই ব্যবহৃত হচ্ছে হাইড্রোলিক হর্ন। হাইড্রোলিক হর্নের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থাও নীরব।

পরিবেশ অধিদফতরের এক গবেষণায় উঠে এসেছে, শব্দদূষণের অন্যতম উৎস যানবাহনের অতিমাত্রায় সাধারণ হাইড্রোলিক হর্নের ব্যবহার, মাইকের ব্যবহার, নির্মাণকাজ, যেকোনো স্থাপনা ধ্বংস, বিভিন্ন প্রচারণার কাজে ব্যবহৃত মাইক, লাউড স্পিকারের ব্যবহার, বিস্ফোরণ, শিল্প কারখানায় উৎপাদিত শব্দ, উচ্চস্বরে কথা বলা, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বা উৎসবে লাউড স্পিকার ব্যবহার, আবাসিক কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতির উপকরণ, বিমানের শব্দ ও বিভিন্ন জলযানের শব্দ অন্যতম। শব্দদূষণের ফলে মানুষের মারাত্মক মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে যায়। যানবাহনের হর্নের মাধ্যমে শব্দদূষণের কারণে দাফতরিক কাজ, শিক্ষা কার্যক্রম, পথচারী ট্রাফিক পুলিশ, রিকশাচালক, হকাররা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। বড় শহরগুলোতে নির্মাণ কার্য ও শিল্প-কারখানার শব্দে হাসপাতাল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রোগী এবং শিক্ষার্থীরা বেশি ঝুঁকির মধ্যে আছে। শিশু, বৃদ্ধ ও গর্ভবতী নারীরাও।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, বর্তমানে শব্দদূষণ মারাত্মক অবস্থা ধারণ করেছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সামাজিক আন্দোলন প্রয়োজন। আমরা নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে শব্দ দূষণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া নাক-কানের রোগে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। প্রতিনিয়ত শব্দ দূষণের ফলে এমন রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মতো আমাদেরও যানবাহন চলাচল, নির্মাণকাজ এবং বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে জনসচেতনতার মাধ্যমে অনেকটা শব্দদূষণ নিরসন সম্ভব। শব্দদূষণ রোধে এখনই উদ্যোগী না হলে ভবিষ্যতে দিতে হবে আরও চড়া মাশুল। শব্দদূষণ এবং এর নেপথ্যের দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper