শৃঙ্খলা ফিরুক গণপরিবহনে
সম্পাদকীয় ১:৫০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০২১

গণপরিবহনে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। প্রায়ই নানাভাবে হয়রানি হতে হয় যাত্রীদের। শৃঙ্খলা মেনে গাড়ি না চালানোর কারণে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হচ্ছে অনেককে। মৃতের সংখ্যাও কম নয়। প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও সড়ক দুর্ঘনায় প্রাণহানি হচ্ছে সাধারণ মানুষের। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে রুটের পরিধি বাড়িয়ে কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে কাচপুর পর্যন্ত কোম্পানির মাধ্যমে বাস চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগে ঘাটারচর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত বাস চালুর ঘোষণা ছিল। গত মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে বাস রুট রেশনালাইজেশনের ১৫তম সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
দক্ষিণের মেয়র বলেন, মালিকদের মতামতের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলাপ করেছি। এর পরিপ্রেক্ষিতে একটি চিঠি দেব যাতে করে প্রাথমিকভাবে একশ কোটি টাকা বরাদ্দ নির্ধারণ করা যায়। যাতে করে যে বাসগুলো এই রুটে চলবে এর আধুনিকায়ন করার জন্য যে খরচ হবে, যে বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে, সে বিনিয়োগ যেন তারা সেখান থেকে করতে পারে। স্বল্প সুদে দীর্ঘ মেয়াদে মালিকরা যাতে এই ঋণ পান, সে ব্যাপারটিও চিঠিতে থাকবে। সামগ্রিকভাবে এ বিষয়টা শেষ করতে পারলেই ঢাকাবাসীকে সুফল দিতে পারব। ঘাটারচর থেকে শুধু মতিঝিল পর্যন্ত রুট নির্ধারণ করা হলে এটি ফলপ্রসূ নাও হতে পারে। এজন্য রুট বাড়িয়ে ঘাটারচর থেকে কাচপুর পর্যন্ত করা হয়েছে। এই রুটে কোম্পানির মাধ্যমে বাস কীভাবে চলবে, কতগুলো বাস চলবে, কতগুলো প্রতিষ্ঠান সম্পৃক্ত থাকবে, আয় কীভাবে বণ্টন হবে, কীভাবে পরিচালিত হবে- সামগ্রিক বিষয় নিয়ে নীতিমালা হবে।
এ প্রসঙ্গে তাপস আরও বলেন, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে অংশীজনদের নিয়ে বসে নীতিমালার একটি খসড়া তৈরি করবে। আগামী সভার আগেই খসড়া নীতিমালা প্রস্তুত করলে কোম্পানি গঠনের দিকে এগিয়ে যাবেন। এ রুটে ১ এপ্রিল থেকে বাস চলার কথা। বিষয়টি নিয়ে বাস মালিকরা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসবেন। আয় ও ব্যয়ের হিসাব যাতে ঠিকমতো হয়, সে জন্য একটি নীতিমালা তৈরি হবে। নীতিমালার আলোকে প্রাইলট এই প্রকল্পে জয়েন্ট ভেঞ্চার অ্যাগ্রিমেন্ট হবে।
ঢাকার আশপাশে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল করার জন্য ১০টি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছিল। বাটুলিয়াতে একটি জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেখানে আন্তঃজেলা একটি টার্মিনাল হবে। উত্তরাঞ্চলের যে বাসগুলো আছে, সেখানে এসব বাস থাকবে। উত্তরাঞ্চলের বাসের জন্য সাভারের হেমায়েতপুরে দুটি জায়গা দেখে একটি নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে দক্ষিণাঞ্চলের বাসের জন্য কেরানীগঞ্জের বাঘাইরে একটি এবং কাচপুর এলাকায় আরেকটি জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ঢাকা শহরের ওপর চাপ কমবে বলে জানানো হয়। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো দীর্ঘদিনের দাবি। বিশেষ করে সড়কে কেউ যেন হতাহত না হন, তা নিশ্চিত করা জরুরি। নতুন উদ্যোগটি বাস্তবায়িত করার পাশাপাশি বিদ্যমান নৈরাজ্য মেটাতে সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন বলেই প্রত্যাশা।