নিশ্চিত হোক নারীর নিরাপত্তা
সম্পাদকীয়
🕐 ১২:৫৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১২, ২০২১
নারীর নিরাপত্তাহীনতা বাড়ছে। নারী নির্যাতন, নারীর প্রতি সহিংসতাও বাড়ছে প্রকট আকারে। একটা সময় অশিক্ষিত মানুষরা নারী নির্যাতন করলেও বর্তমানে শিক্ষিত শ্রেণির বিরুদ্ধেও কম অভিযোগ নেই। গ্রাম থেকে শহর, মহল্লা থেকে ক্যাম্পাস সবখানেই বিভীষিকার কালো অধ্যায়। এর মধ্যে দৈনন্দিন চলাফেরায়ও বিপদ ওত পেতে থাকে। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্মব্যস্ত রাজধানী রাত হলেই যেন এক আতঙ্কের নাম হয়ে জাগ্রত হয়। সম্প্রতি চারদিকে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তৈরি হয় নগরবাসীর মনে।
সন্ধ্যার পর অফিস থেকে বাসায় ফেরা কর্মজীবী নারীরা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। রাজধানীতে কখনো গলায় ছুরি ঠেকিয়ে, কখনো আবার আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে টাকা, মোবাইল ফোন ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নিচ্ছে ছিনতাইকারীরা।
অপরাধকর্মে বাধা দিতে গিয়ে জীবনও হারাতে হচ্ছে নিরীহ মানুষকে। আগে পকেটমারের দৌরাত্ম্য বেশি থাকলেও তা অনেকটা হ্রাস পেয়ে এখন ছিনতাই বৃদ্ধি পেয়েছে। এর সঙ্গে গত কয়েক বছর ধরে যুক্ত হয়েছে টানা পার্টি, মলম পার্টি ও অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য। এরা ছোঁ মেরে ল্যাপটপ, ব্যাগ, মোবাইল ফোন সেট ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নিতে সর্বদা তৎপর থাকে। বিশেষ করে বাসস্ট্যান্ড, রেললাইন, নিভু নিভু বাতির সড়কগুলোই ছিনতাইকারীদের জন্য নিরাপদ জায়গা। এসব জায়গায় দেখা যায়, একজন সাধারণ মানুষ হেঁটে যাওয়া অবস্থায় মুঠোফোনে কথোপকথন থাকাকালেই ছোঁ মেরে হাত থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে উধাও! চারদিকে বিপুল সংখ্যক মানুষ থাকলেও কাউকে সাহায্যের জন্য অগ্রসর হতে দেখা যায় না। ছিনতাইয়ের ঘটনা যেন স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উত্তর ঢাকার চেয়ে দক্ষিণ ঢাকায় ছিনতাইয়ের স্পট ও দৌরাত্ম্য দুটোই বেশি। ছিনতাই, রাহাজানির মতো ঘটনা উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন মেগাসিটি ও ছোট শহরগুলোতেও ঘটে। কিন্তু ঢাকা শহরে ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য যেমন বেশি, তেমনি প্রতিকারও মেলে কম। যথাযথ প্রতিকার মিললে ঢাকা শহরে ছিনতাইয়ের ঘটনা অনেকাংশে কমে যেত, এতে কোনো সন্দেহ নেই। ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে টাকা-পয়সা তো যাচ্ছেই, ক্ষেত্রবিশেষে প্রাণটাই ছিনতাই হয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন বিভিন্ন কাজে রাজধানীতে আসা-যাওয়া করা মানুষ প্রায়ই ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ছে। প্রকৃতপক্ষে সব ছিনতাইয়ের ঘটনা প্রকাশ পায় না। বেশিরভাগ ছিনতাইয়ের ঘটনায় কোনো মামলা হয় না। ভুক্তভোগীরা ভোগান্তির ভয়ে অনেক সময় পুলিশের কাছে যেতে চায় না। গেলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অভিযোগ আমলে নেওয়া হয় না।
এদিকে কিছু মহল মনে করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শক্তি ও সামর্থ্যরে প্রয়োগ ঘটিয়ে ছিনতাইকারীদের কুকর্ম থামিয়ে দেওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। দরকার শুধু সদিচ্ছা, আগ্রহ আর আন্তরিকতা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ছিনতাইকারীরা ধরা পড়লেও দুঃখজনক হলো, কয়েক দিন পর তারা জামিনে বের হয়ে যায়। রাজধানীতে বিভিন্ন সময় ঘটে যাওয়া ছিনতাইয়ের দৃশ্যগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, চলতি পথে কিংবা রিকশায় যাতায়াতের সময় আচমকা টান। মুহূর্তেই সব কিছু নিয়ে চম্পট ছিনতাইকারী। আইনের সঠিক প্রয়োগ ঘটলে নারীর নিরাপত্তা অনেকাংশেই প্রতিষ্ঠিত হবে। আমরা প্রত্যাশা করব, সংশ্লিষ্টরা সার্বিক নিরাপত্তা বিধানে সচেষ্ট হবেন।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228