ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

প্রযুক্তির ফাঁদে নারীর অবমাননা বন্ধে পদক্ষেপ নিন

সম্পাদকীয়
🕐 ১:০৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০১, ২০২০

প্রযুক্তির ভালো দিক যেমন রয়েছে, তেমনি মন্দ দিকও রয়েছে। নীরবে সাইবার ক্রাইমের শিকার হচ্ছেন নারীরা। বিশেষত যারা ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। এ বিষয়ে গতকাল প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে খোলা কাগজে। তাতে বলা হয়— প্রতিনিয়ত সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন নারীরা। এ হার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। প্রতিনিয়ত র‌্যাব, পুলিশ, সিআইডিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন দফতরে জমছে এ-সংক্রান্ত অভিযোগের পাহাড়। গ্রেফতার করা হচ্ছে অভিযুক্তদের, তবুও কমছে না অপরাধ। পরিসংখ্যান বলছে, দেশে সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন ৬৮ শতাংশ নারীরা, তাদের মধ্যে অধিকাংশেরই বয়স ১৭ থেকে ২৫ বছর বয়সী। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত স্পর্শকাতর ছবি ও ভিডিও শেয়ার করার পর ব্ল্যাকমেইলিংয়ের শিকার হচ্ছেন এসব উঠতি বয়সী নারী। লোকলজ্জার ভয়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আইনি সহায়তা নিচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা। এ সমস্যা কাটাতে নারীদের সচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।

পুলিশের গোয়েন্দা তদন্ত সংস্থা সিআইডি সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সাইবার পুলিশ সেন্টারের ফেসবুক পেজে ১৭ হাজার ৭০৩টি অভিযোগ এসেছে। এছাড়া ফোনে অভিযোগ করেছেন ৩৮ হাজার ৬১০ জন ভুক্তভোগী নারী। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ১৮২টি আর মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে ১১৮টি। বাকিগুলোর তদন্ত চলমান রয়েছে। সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন (সিসিএ ফাউন্ডেশন) এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সাইবার অপরাধে আক্রান্তদের মধ্যে নারী ভুক্তভোগীর সংখ্যা ২০১৮ সালের চেয়ে ২০১৯ সালে ১৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেড়েছে। গত বছর মোট ভুক্তভোগীর ৬৭ দশমিক ৯ শতাংশই ছিল নারী।

সম্প্রতি মোহাম্মদ ইয়াসিন রাতুল নামে একজনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। এই তরুণ কমপক্ষে ১৫ জন তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে শারীরিক সম্পর্ক করেছেন। সেগুলোর ভিডিও ধারণ করে প্রত্যেককে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় এবং পুনরায় শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে বাধ্যও করেন রাতুল। সিআইডি বলছে, রাতুল প্রথমে তরুণীদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করতেন। এরপর শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন এবং সেগুলোর ফুটেজ প্রেমিকার মোবাইল ফোন দিয়েই ধারণ করতেন। পরে সুযোগ বুঝে প্রেমিকাদের ফোন চুরি করে রাতুল এসব ফুটেজ ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে অর্থ আদায় করতেন। এক তরুণীর অভিযোগ পেয়ে সম্প্রতি রাজধানীর বাংলামোটর এলাকা থেকে রাতুলকে গ্রেফতার করে সিআইডির সাইবার টিমের সদস্যরা।

সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের বিশেষ পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম জানান, গত শনিবার পর্যন্ত রাতুলের বিরুদ্ধে আরও দুই তরুণী একই ধরনের অভিযোগ করেছেন। এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে প্রায় ২০ তরুণী এই ধরনের অভিযোগ করেছেন। রাতুলের মতো এমন অনেককেই এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। সবার বিরুদ্ধেই গুরুত্ব বুঝে মামলা হয়েছে, সেসব মামলার কার্যক্রমও চলমান। সাইবার ক্রাইম বন্ধে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পাশাপাশি নারীদেরও সতর্ক থাকা জরুরি। ব্যক্তিগত অসতর্ক মুহূর্তের সুযোগের অপব্যবহার যেন কেউ করতে না পারে সে বিষয়ে থাকতে হবে সচেতন।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper