ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

চিকিৎসা সেবার মূল্য নির্ধারণ প্রশংসনীয়

সম্পাদকীয়
🕐 ৩:৪১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২০, ২০২০

চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকার হলে অধিকাংশ মানুষ এখনো সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ। চিকিৎসার জন্য অনেককে প্রায়ই আসতে হয় বড় শহরগুলোতে। তার মোকাবিলা করতে হয় নিপীড়নমূলক নানা পরিস্থিতি। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে এতদিন নির্ধারণ করা ছিল না সেবার মূল্য। ফলে বিভিন্ন সময়েই পরীক্ষা ফিস ও বিল অতিরিক্ত নেওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ শোনা যেত। হয়রানির শিকার হতে হতো রোগী-স্বজনদের। প্রকাশ্যে ছিল শৃঙ্খলার অভাব। তাই শৃঙ্খলা ফিরিয়ে যথার্থ সেবার মান নিশ্চিত করতে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে শিগগিরই বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত চিকিৎসা ফি, টেস্ট ফি ও অন্যান্য ফি সরকারিভাবে নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি যথাযথভাবে নির্ধারণ করে বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে উদ্যোগটি ভালো। তবে মনে রাখতে হবে নির্ধারিত মূল্য যেন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে। শুধু মূল্য নির্ধারণ করে দিলেই হবে না, তার যথার্থ বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা; রোগীরা সঠিকভাবে এর সুফল পাচ্ছেন কিনা; তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে। গত বুধবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ক্লিনিকসমূহের সেবা বিষয়ে পর্যালোচনা সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এ সময় তিনি সেবা মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার বিষয়টি জানান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে ক্যাটাগরি ভিত্তিক নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। কিছুদিনের মধ্যেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সেবার মূল্যের ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাই, ইচ্ছেমতো প্রয়োগ হয়। একজন মানুষের অসুস্থতাকে পুঁজি করে গলা কাটা ব্যবসা করা যাবে না। এর একটা যৌক্তিক সীমা থাকতে হবে। এটা যদি সঠিকভাবে করা হয় এবং সবার নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে তাহলে এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাব।’ শুধু মূল্য নির্ধারণ নয়; বেসরকারি হাসপাতালের বিষয়ে আরও বেশ কয়েকটি শক্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের টাস্কফোর্স কমিটি। অফিস সময়ে সরকারি হাসপাতালের কোনো চিকিৎসক বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকতে পারবেন না। কোনো কারণে কর্মরত অবস্থায় থাকলে টাস্কফোর্স ও সংশ্লিষ্টদের অবগত করতে হবে। হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ল্যাব, ক্লিনিকগুলোতে লাইসেন্স নিবন্ধন নম্বর স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে। টাস্কফোর্স কর্তৃক সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক পরিদর্শন, অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী করোনায় দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকের পূর্ণাঙ্গ সহায়তা প্রত্যাশা করে অনুরোধ জানান। বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতালসমূহের পক্ষ থেকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকারকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। চিকিৎসা সেবার মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। চিকিৎসার নামে অনৈতিক বাণিজ্য যেন না হয়, তা নিশ্চিত করা সময়ের দাবি।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper