ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

প্রতিশ্রুত প্রণোদনা দেওয়া হোক চিকিৎসকদের

সম্পাদকীয়
🕐 ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১৫, ২০২০

মহামারী করোনাকালে ত্রাতার ভূমিকা রেখেছেন চিকিৎসকরা। নিজেদের জীবন বিপন্ন করে তারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য। বর্তমানেও এ ধারা চলমান। করোনার প্রকোপ কিছুটা কমলেও আসন্ন শীতে আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন খাতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত প্রণোদনা বুঝে পেলেও ছিঁটেফোটাও জোটেনি করোনাযুদ্ধে ফন্ট লাইনের যোদ্ধা চিকিৎসক-নার্সদের। এরই মধ্যে ঘোষণার সাত মাস পেরিয়েছে। পেরিয়েছে পরিপত্র জারির চার মাস। কিন্তু হয়নি বাস্তবায়ন। অথচ করোনাযুদ্ধে চিকিৎসা দিতে গিয়ে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন শতাধিক চিকিৎসক ও নার্স। আক্রান্ত হয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যরাও। দীর্ঘদিন সাহচর্য পাননি স্বজনদের। অথচ প্রাণ হারানো একজনের পরিবার ছাড়া কেউ পাননি স্বাস্থ’্যবীমার টাকা। এসবের জন্য আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও অনীহাকে দায়ী করছেন চিকিৎসক নেতারা।

দেশে করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ বিস্তার লাভ করলে পরিস্থিতি সামলাতে রয়েছে প্রাণের ঝুঁকি। অনিরাপদ পরিবারের সদস্যদের কথা ভেবে অনেকেই হয়ে পড়েছেন বিপর্যস্ত। যদিও স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, মৃতদের তালিকাও দ্রুত পাঠানো হবে মন্ত্রণালয়ে। কোভিড চিকিৎসা দেওয়া হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। গত ৭ এপ্রিল করোনা মোকাবিলায় সম্পৃক্ত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পুরস্কৃত করার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘করোনার বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে ?মানুষের সেবা করতে গিয়ে যদি কেউ আক্রান্ত হন তার চিকিৎসার সম্পূর্ণ ভার সরকার নেবে। এজন্য পদমর্যাদা অনুযায়ী পাঁচ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবীমা করে দেওয়া হবে। এ কাজে মৃত্যুঝুঁকি আছে, তাই যদি কেউ মারা যান, তবে এই বীমা পাঁচগুণ করা হবে।’

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) জানায়, গত ১১ নভেম্বর পর্যন্ত দুই হাজার ৮৭৫ জন চিকিৎসক, এক হাজার ৯৭২ জন নার্স ও তিন হাজার ২৭৬ জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত ১০৫ জন চিকিৎসক করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদের তথ্য মতে, এ রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন নয়জন নার্স। তবে আজও কেউ সেই দুই মাসের সমপরিমাণ বেতনের প্রণোদনা পাননি। মারা যাওয়া চিকিৎসক-নার্সদের এক পরিবার ছাড়া বাকি স্বজনরা পাননি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্বাস্থ্যবীমা অনুযায়ী টাকা।

বিএমএ মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘এত ডাক্তার মারা গেল। আপনি বলতে পারবেন, মুক্তিযুদ্ধের সময়ও কোন পেশার এত লোক মারা গেছে? এর আগে ডেঙ্গুতেও মারা গেল ২০ জন। এগুলোর কোনো খবর নেই। পাত্তা নেই। উৎসাহ নেই। চারদিকে শুধু তিরস্কার, তিরস্কার, তিরস্কার। অথচ চিকিৎসকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখনো চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।’ শুধু একজন চিকিৎসক ছাড়া মারা যাওয়া কোনো চিকিৎসকের পরিবার স্বাস্থ্যবীমার টাকা পাননি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আমরা প্রত্যাশা করব, চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুত প্রণোদনার অর্থ দ্রুতই পরিশোধ করা হবে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতার বলি চিকিৎসকরা না হোক, সেটাই সংশ্লিষ্টদের নিশ্চিত করতে হবে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper