ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

খাদ্যপণ্য থাকুক সাধারণের নাগালে

সম্পাদকীয়
🕐 ১০:৪৯ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৬, ২০২০

খাদ্যপণ্যকে কেন্দ্র করে যে অসাধু চক্র গড়ে উঠেছে তাতে সাধারণ মানুষের জীবন কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠছে। অপ্রত্যাশিতভাবে বাড়ছে পণ্যের দাম। সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও মিলছে সুফল। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সিন্ডিকেটের হাতে বন্দি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ক্রয়-বিক্রয়। সরকার চালসহ বেশ কিছু পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিলেও তা মানছেন না ব্যবসায়ীরা। যে কোনো পণ্য কৃষক উৎপাদন করে স্বল্পমূল্যে বিক্রি করেন মিল মালিক, পাইকার বা সংরক্ষণকারীদের কাছে। ফলে উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গে ভোগ্যপণ্য চলে যায় একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর কাছে। পরে তা সুবিধামতো সময়ে বেশি দামে বিক্রি করছেন তারা। একটি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে এ ভোগ্যপণ্যের ক্রয়-বিক্রয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের লেনদেন সামগ্রিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম দেশের অধিকাংশ মানুষের জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। দু-চারটি পণ্য ছাড়া প্রত্যেকটি পণ্যের দাম কমবেশি সব সময় বেড়েছে। যে পণ্যের দাম একবার বাড়ে তা আর কমে না। ঠুনকো কারণে পর্যাপ্ত মজুদ থাকার পরও এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির ঘটনা ঘটছে। চাল, আলু, পেঁয়াজ, আদা-রসুন, কাঁচামরিচ ও বিভিন্ন পদের কাঁচা বাজারের বর্তমান মূল্য বিগত যে কোনো সময়ের চেয়ে চড়া। ভোগ্যপণ্যের এমন মূল্যবৃদ্ধির সঠিক ব্যাখ্যা নেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছেও। তারা বলছেন, পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। আমাদের বাজারগুলোতে অভিযানও চলমান রয়েছে। এরপর মূল্যবৃদ্ধি কেন!

দফায় দফায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী ও সচিবরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সভা করেও কোনো কাজ হচ্ছে না। এমনকি চাল ও পেঁয়াজের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও তা মানছেন না ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে এসব পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির যেসব ঠুনকো কারণ বলা হচ্ছে, তাও যুক্তিযুক্ত নয় বলে মনে করছেন ক্রেতারা। কিন্তু ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ বছর করোনা ও বন্যার কারণে ত্রাণ হিসেবে আলুর বিতরণ বেশি হয়েছে। এ কারণে আলুর দাম বেড়েছে।

তবে ক্রেতাদের দাবি, যে পরিমাণ আলু বিতরণ করা হয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে সেই পরিমাণ আলু তো মানুষ এমনিতেই ক্রয় করত। তাহলে সংকট হবে কেন? এদিকে আড়তদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, হিমাগারগুলোতে আলুর পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। তাদেরও প্রশ্ন বিগত যে কোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে একই পরিমাণ মজুদ রয়েছে।

খাদ্য অধিদফতর বলছে, কৃষক ধান উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গে মিল মালিকদের কাছে হস্তান্তর করে। আর্থিক সংকট থাকায় কৃষক কমমূল্যে অধিকাংশ ধান মিল মালিকদের কাছে দিয়ে দেয়। মিল মালিকরা সংরক্ষণ করে পরবর্তীকালে চালের দাম বাড়ায়। বাংলাদেশ কিছুদিন আগেও খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন হওয়ায় রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই দেশে চালের ঘাটতির কোনো সুযোগ নেই। এ ঘাটতি কৃত্রিমভাবে তৈরি হয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তায় সংশ্লিষ্টরা কঠোর হবেন, অসাধু চক্রকে নিরস্ত করতে নেবেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper