ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ভোটার তালিকা স্বচ্ছ থাকুক

সম্পাদকীয়
🕐 ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২০

একজন নাগরিককে শনাক্ত করার সবচেয়ে বড় মাধ্যম জাতীয় পরিচয়পত্র। সেই জাতীয় পরিচয়পত্রেই যখন গোঁজামিল ধরা পড়ে, সেটা অবশ্যই নেতিবাচক দৃষ্টান্ত। শরণার্থী রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে বর্তমানে। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ভোটার তালিকায় বারবার রোহিঙ্গাদের যুক্ত পাওয়া যাচ্ছে। ভোটার হওয়ার পর এদের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরও (এনআইডি) পড়ছে। সর্বশেষ চলতি বছর ভোটার তালিকায় থাকা এসব রোহিঙ্গার নাম বাদ দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) চিঠি দেন এক উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)। এদিকে রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়ার বিষয়ে এককভাবে দায় নিতে নারাজ ইসি।

চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি বান্দরবান পার্বত্য জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিন কচি এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব বরাবর পাঠান। তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৭ সালের হালনাগাদ ভোটার তালিকায় মিয়ানমারের ১৩ রোহিঙ্গা নাগরিক অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক অভিযোগের বিষয়ে যাচাই করা হয়। এ বিষয়ে চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি ভোটার তালিকা সংক্রান্ত বিশেষ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় অভিযুক্তদের বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই-বাছাইয়ের পর সর্বসম্মতভাবে অভিযুক্তরা মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক বলে সিদ্ধান্ত হয় এবং তাদের সবার নাম ভোটার তালিকা থেকে বাতিল করার সুপারিশ করা হয়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।

ইসি সূত্র জানায়, ইউএনওর এ চিঠি পাওয়ার পর বান্দরবান পার্বত্য জেলার জেলা নির্বাচন অফিসারের কাছে এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন চাওয়া হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি গত ১৩ আগস্ট সরেজমিন প্রতিবেদন ইসিতে পাঠান। তবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সন্তোষজনক প্রতিবেদন দিতে পারেননি। পরে এ বিষয়ে গঠন করা হয় বিশেষ কমিটি। রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি ঠেকানো নির্বাচন কমিশনের একার কাজ নয় উল্লেখ করে রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়ার বিষয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, রোহিঙ্গা অধ্যুষিত উপজেলাকে বিশেষ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব এলাকায় নতুন ভোটার নিবন্ধন করার জন্য একটি বিশেষ ফরম তৈরি করা হয়েছে। সেখানে ভোটার হতে গেলে তাদের মা-বাবার এনআইডির কপি, নাগরিক সনদ, জন্ম নিবন্ধন সনদসহ বেশ কিছু ডকুমেন্টস দিতে হচ্ছে। এগুলো কিন্তু নির্বাচন কমিশন থেকে সরবরাহ করা হয় না।

এখন যেসব রোহিঙ্গা ভোটার হচ্ছেন- কে তাদের বাবা হচ্ছেন, কে তাদের নাগরিকত্ব সনদ দিচ্ছেন, কে জন্ম সনদ দিচ্ছেন? তাদের চিহ্নিত করে এসব সমস্যা সমাধান করতে হবে। এনআইডি নিতে যেসব দলিল লাগে, সেগুলো কীভাবে রোহিঙ্গারা পায়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভোটার তালিকা স্বচ্ছ করা সময়ের দাবি। যোগসাজশ করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ জায়গা পর্যন্ত যারা এমন অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছেন তাদের অবশ্যই শনাক্ত করতে হবে। শনাক্ত ও শাস্তি প্রদানের মাধ্যমেই ভোটার তালিকাকে ঝঞ্ঝাটমুক্ত রাখা হবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper