ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বিস্ফোরণ প্রতিরোধে সতর্কতাই হোক প্রতিষেধক

সম্পাদকীয়
🕐 ১১:০০ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০২০

নানাভাবেই মারা যাচ্ছে দেশের মানুষ। অপঘাত, অপমৃত্যু যেন পিছু ছাড়ছে না। চলমান দুঃসময়ের মধ্যেই এল অনাকাক্সিক্ষত দুঃসংবাদ। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাম জামে মসজিদের সামনে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ও এসি বিস্ফোরণের ঘটনায় ইমাম, মুয়াজ্জিন, সাংবাদিক ও জেলা প্রশাসনের কর্মচারীসহ অর্ধশত দগ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে ৩৭ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের জনৈতি চিকিৎসক জানান, রাত ৯টা থেকে একের পর এক রোগী আসছিল। তাদের সবার নাম লিপিবদ্ধ করা হয়নি। যেসব রোগী এসেছে তাদের ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ দগ্ধ হয়েছে। তাদের দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা পাঠানো হয়েছে। কয়েকজনের শরীরের ৯৯ ভাগ দগ্ধ হয়েছে।

গতকাল পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার রাত পৌনে ৯টায় এশার নামাজ চলাকালে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার একটি মসজিদের সামনের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে মসজিদের এসিও বিস্ফোরণ ঘটে। পৌনে ৯টায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে মসজিদের ভেতরে থাকা ৩০ থেকে ৪০ জন মুসল্লির মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হুড়োহুড়ি করে বের হন লোকজন। তাদের অনেকেই দগ্ধ ও আহত ছিলেন। মুহূর্তেই মসজিদের ভেতরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময়ে মসজিদে থাকা মুসল্লিদের গায়ে আগুনের ফুলকি গিয়ে পড়লে একে একে দগ্ধ হতে থাকেন। মসজিদের ভেতর থেকে আসতে থাকে মুসল্লিদের আর্তচিৎকার। পরে আশপাশের লোকজন গিয়ে তাদের উদ্ধার করেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ঘটনার পর দগ্ধ রোগীদের ১০০ শয্যা হাসপাতালে আনা হলেও একজন রোগীকেও ধরে দেখা হয়নি। পরে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পরই ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ভেতরে একের পর এক লোকজন পড়ে আছেন। ট্রান্সফরমারের গরম তেল মসজিদের ভেতরে লোকজনের ওপর পড়লে সবাই দগ্ধ হন। বিস্ফোরণের পর পুরো মসজিদ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। মসজিদের জানালার গ্লাসগুলো সব ভাঙা ছিল। ভেতরে কয়েকটি চেয়ার ছিল ভাঙাচোরা। ফ্যানগুলোও বাঁকা হয়ে যায়। ভেতরে থাকা দেড় ও ২ টনের ছয়টি এসির সব বিস্ফোরণ ঘটে ভেতরের যন্ত্রাংশ বেরিয়ে গেছে। মসজিদের ভেতরে ফ্লোরের কিছু স্থানে রক্ত দেখা গেছে।

মসজিদের নিচ দিয়ে গ্যাসের একটি পাইপ রয়েছে। ওই পাইপের লিকেজ দিয়ে মসজিদের ভেতরে গ্যাস জমে যায়। এর মধ্যে এসি চলার কারণে মসজিদের ভেতরে সব জানালা ও দরজা টাইট করে বন্ধ ছিল। ফলে নির্গত গ্যাস বের হতে পারেনি। বিস্ফোরণের আগে কেউ হয়ত বাতি বা বিদ্যুতের কিছু জ্বালানোর সময়ে স্পার্ক করে। সেই স্পার্ক থেকেই বিস্ফোরণ ঘটে। গতকাল আহতদের কয়েকজন মৃত্যুবরণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বোচ্চ চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা মনে করি, যে কোনও বিস্ফোরণ প্রতিরোধে প্রয়োজন সতর্ক থাকা। সতর্কতার বিকল্প নেই। এ জন্য ব্যক্তি সতর্কতার পাশাপাশি প্রচারমাধ্যমেও জনমত গড়ে তুলতে হবে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper