হাসপাতাল পরিচালনায় শৃঙ্খলা কাম্য
সম্পাদকীয়
🕐 ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২০
যে হাসপাতাল মানুষের চিকিৎসা করে, উল্টো হাসপাতালই যখন অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত তা এককথায় দুঃখজনক। বলা বাহুল্য, এ ধরনের হাসপাতাল চিকিৎসা সেবা দিতেও যে ঘাপলা করে। বিভিন্ন সময়েই তা প্রমাণিত হয়েছে। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লাইসেন্সহীন বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর তালিকা নেই স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে। তবে লাইসেন্সধারীদের তালিকা রয়েছে সংস্থাটির কাছে। গত বুধবার বিচারপতি তারিক-উল-হাকিম ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে গত ৩১ আগস্ট সারা দেশে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ও লাইসেন্স প্রক্রিয়াধীন থাকা বেসরকারি হাসপাতালগুলো সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।
আদেশের ধারাবাহিকতায় সংশ্লিষ্ট কোর্টের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাসগুপ্তকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা. মো. ফরিদ হোসেন মিয়া বেশ কিছু তথ্য পাঠান। ওই তথ্যে জানানো হয়েছে, লাইসেন্সধারী সব হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকের তালিকা স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে রয়েছে। কিন্তু লাইসেন্সহীন কোনো হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকের তালিকা স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে নেই। এছাড়া কোভিড ও নন-কোভিড সব হাসপাতালের তালিকা অধিদফতরের নির্ধারিত ওয়েবসাইটে দেওয়া রয়েছে। গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ১২ হাজার ৫৪৩টি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করেছে। এসব প্রতিষ্ঠান লাইসেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য পাঠালে সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করা হয় বলে তথ্যে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদফতরে আসা অভিযোগ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের (এমআইএস) মাধ্যমে পরিচালিত হয় বলে আদালতকে জানানো হয়। পরে আদালত রিট আবেদনটি কোর্টের কার্যতালিকা (কজ লিস্ট) থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন। এর আগে গত ২৬ জুলাই বেসরকারি রিজেন্ট হাসপাতালে ভুয়া করোনা টেস্টের শিকার ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ, তাদের কাছ থেকে টেস্টের নামে নেওয়া টাকা ফেরতের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়। রিটে বেসরকারি হাসপাতালে রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত বিল আদায় বন্ধে মনিটরিং সেল গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়। পাশাপাশি রিট আবেদনে দেশের সব বৈধ ও লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালের তালিকা প্রকাশ এবং প্রতিটি থানায় স্বাস্থ্য মনিটরিং কমিটি গঠনেরও নির্দেশনা চাওয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসানের পক্ষে ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম এ রিট দায়ের করেন। গত ১৯ জুলাই এসব বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসানের পক্ষে ব্যারিস্টার আবদুল হালিম এ রিট দায়ের করেন। স্বাস্থ্যখাতে এমন অব্যবস্থাপনা রোগীদের দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে আরও। করোনায় এমনিতেই পর্যদস্ত দেশ। গতকালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৫ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটিতে মোট চার হাজার ৩৫১ জনের মৃত্যু হল। এই নিদানকালে হাসপাতালের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি। একদিকে সাধারণ রোগী অন্যদিকে করোনা রোগী সব মিলিয়ে একটা টালমাটাল অবস্থা মোকাবেলা করছে দেশ। অব্যবস্থাপনাকে প্রলম্বিত করা উচিত নয়।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228