ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

প্রবাসী আয়ের অগ্রগতি ধরে রাখতে হবে

সম্পাদকীয়
🕐 ৪:১২ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১৩, ২০২০

প্রবাসী আয়ে দেখা মিলছে আলোর ইশারার। মাঝখানে অনিশ্চয়তা ও কুয়াশা কাটিয়ে সঠিক পথে হাঁটতে শুরু করেছে অর্থনীতি। করোনা অর্থনীতির অন্য সকল সূচককে নিম্নমুখী করলেও আশা জাগিয়েছে প্রবাসী আয়ে। নতুন নতুন রেকর্ডও তৈরি করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনেও এমন তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রায় ২৬০ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে একক মাস হিসেবে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। এদিকে জুলাইয়ে মোট আহরিত রেমিট্যান্সের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের সাতটি দেশ থেকে এসেছে ১৪৮ কোটি ডলার। এর মধ্যে শুধু সৌদি আরবের প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৬৩ কোটি ২৬ লাখ ডলার। যা গত বছরের জুলাইয়ের চেয়ে ৯১ শতাংশ বেশি।

জুলাইয়ে দেশে আসা মোট রেমিট্যান্সের ২৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ পাঠিয়েছেন সৌদি প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত অর্থবছরে রেমিট্যান্স পাঠানোয় শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে সৌদি আরব ছাড়া অন্য দেশগুলো হচ্ছেÑ যুক্তরাষ্ট্র, আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, ওমান, যুক্তরাজ্য, কুয়েত, কাতার, সিঙ্গাপুর ও ইতালি। জুলাইয়ে রেমিট্যান্স আহরণের দ্বিতীয় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৪ কোটি ৩৫ লাখ ডলার। গত বছর একই সময়ে ছিল ১৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার। তৃতীয় অবস্থানে মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মহামারির কারণে অবৈধ পথ (হুন্ডি) কারবারিরা তৎপরতা কমে যাওয়ায় ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানো বেড়েছে। এছাড়া সরকার গত অর্থবছর থেকে রেমিট্যান্সের ওপর ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ায় বৈধ পথে বেড়েছে প্রবাসী আয়। করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী লকডাউনের ফলে অনেক প্রবাসী বেতন-ভাতা পাননি। অনেকে কর্মহীন হয়ে যান। ফলে মার্চ ও এপ্রিল দুই মাস তেমন রেমিট্যান্স পাঠাতে পারেননি প্রবাসীরা। পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে মে মাস থেকে আবারও রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়তে থাকে। তবে অনেকে চাকরি হারিয়ে বা ব্যবসা গুটিয়ে নিয়ে দেশে ফিরতে জমানো সব অর্থ দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। এসব কারণে বৈশ্বিক আর্থিক সঙ্কটের মধ্যেও বেড়েছে রেমিট্যান্স।

বাংলাদেশের প্রবাসী আয়ের বড় বাজার সৌদি আরব। বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি মাসে বাংলাদেশ থেকে গড়ে ৫০-৬০ হাজারের মতো মানুষ বিদেশে কাজ করতে যান। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশ যায় সৌদি আরবে। দেশটিতে জানুয়ারি মাসে গেছেন ৫২ হাজার মানুষ, ফেব্রুয়ারি মাসে গেছেন ৪৪ হাজার মানুষ, আর মার্চে ফ্লাইট বন্ধের আগ পর্যন্ত ৩৮ হাজার বাংলাদেশি গেছেন। বর্তমানে ২২ লাখের মতো বাংলাদেশি অভিবাসী সৌদি আরবে আছেন। জানা গেছে, করোনার কারণে হজের কার্যক্রম না থাকায় হোটেল-রেস্তোরাঁসহ অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। ফলে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন প্রবাসী শ্রমিকরা। অনেকে দেশে ফিরে এসেছেন। আবার কেউ অপেক্ষায় রয়েছেন ফিরে আসার। এতসব সংকটের মধ্যেও রেমিট্যান্স পাঠানো অব্যাহত রেখেছেন প্রবাসীরা। প্রবাসী আয়ের এই ধারা ধরে রাখতে হবে। সংশ্লিষ্টরা তৎপর হবেন বলেই প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper