ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

তামাকের যথেচ্ছ ব্যবহার রোধ করুন

সম্পাদকীয়
🕐 ৫:১৮ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১১, ২০২০

তামাক ও তামাকজাত পণ্যের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিলেও এখন পর্যন্ত বন্ধ করা যায়নি। যে মানুষের জন্য এত স্বাস্থ্য সতর্কতা তারা নিজেরাই উদাসীন। এই সুযোগে ব্যবসায়ীরা নানা পন্থা অবলম্বন করে ব্যবসা করে যাচ্ছে। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, রংপুর মহানগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে আবারও তামাকের অবৈধ বিজ্ঞাপন আর পুরস্কার-প্রণোদনায় সয়লাব হয়ে গেছে। অথচ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী এসব বিজ্ঞাপন ও পুরস্কার-প্রণোদনা নিষিদ্ধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এছাড়া তামাক আইন লঙ্ঘন করে মহানগরীর পাবলিক প্লেসগুলোতেও দেদারসে চলছে ধূমপান। ফলে তামাকের ধোঁয়ায় রংপুর সিটিতে প্রতিনিয়ত ঘটছে স্বাস্থ্যহানি। তাই নগরবাসী রংপুরে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

রংপুর মহানগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে সরেজমিন পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, তামাকপণ্যের সব বিজ্ঞাপন প্রচারণা আইনগত নিষিদ্ধ হলেও মহানগরীর সর্বত্রই অবাধে চলছে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন। ভোক্তা ও বিক্রেতাদের নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের তামাক ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে উপহার। গেল বছর রাজশাহীর বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট- এসিডি’র রংপুর অফিসের একটি পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, রংপুর মহানগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডের ৪ হাজার ৮৪৫টি দোকানে বিভিন্ন ধরনের তামাকপণ্য বিক্রি করা হয়। এসব দোকানের অধিকাংশগুলোতেই লঙ্ঘিত হচ্ছে এ আইন। প্রায় অর্ধেক দোকানে বিভিন্ন সিগারেট কোম্পানি ডামি সিগারেটের প্যাকেটে ডেকোরেশন করে দেওয়া হয়েছে। দোকানে দোকানে শোভা পাচ্ছে সিগারেট কোম্পানিগুলোর হ্যান্ডবিল, স্টিকার ও লিফলেট। দোকানগুলোর দোকানিকে তারা দিচ্ছে বিভিন্ন ধরনের উপহার। এর মধ্যে রয়েছেÑ শো-কেস, দোকানির ছবিসহ পান-সিগারেটের বাক্স, গেঞ্জি, ছাতা, ঘড়ি, মগ ইত্যাদি।

ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ সংশোধন) আইন, ২০০৫ (২০১৩) এর ধারায় বলা আছে- বিক্রয়স্থলে তামাকপণ্যের প্যাকেট বা মোড়ক সাদৃশ্য কোনো দ্রব্য, লিফলেট, হ্যান্ডবিল, পোস্টার, ছাপানো কাগজ, বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড বা অন্য কোনোভাবে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করা যাবে না। এছাড়া তামাক দ্রব্য ব্যবহারে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে কোনো উপহার, দান, পুরস্কার, বৃত্তি প্রদান আইনত দ-নীয় ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আইনের এ ধারা অমান্যকারীকে ৩ মাস বিনাশ্রম কারাদ- বা অনধিক ১ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দ-ে দ-িত করার বিধান রয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মহানগরীর বিভিন্ন পাবলিক প্লেস যেমন- হাসপাতাল চত্বর, বাস টার্মিনাল, যাত্রী ছাউনি, গণপরিবহন, সরকারি বিভিন্ন অফিস, আদালত চত্বর, আবাসিক হোটেল, রেস্টুরেন্ট, খাবার হোটেল ইত্যাদিতে যত্রতত্র করা হচ্ছে ধূমপান।

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের বিষয়ে রংপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আসিব আহসান বলেন, ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কোথাও আইনটি লঙ্ঘিত হলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব। প্রয়োজনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জেল জরিমানা করা হবে।’ শুধু রংপুরেই নয়, দেশের অনেক জায়গায়ই রয়েছে তামাকের নানামাত্রিক প্রলোভন। অথচ জনস্বাস্থ্যের জন্য তামাক খুব ক্ষতিকর। সংশ্লিষ্টরা তামাকের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধে উদ্যোগী হবেন বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper