নিরাপদ সড়ক কত দূরে!
সম্পাদকীয়
🕐 ৪:০৯ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১০, ২০২০
সড়কে মৃত্যুর যে মচ্ছব চলছে তা থামেনি এই নিদারুণ সময়েও! অথচ নিরাপদ সড়কের দাবিতে কতজন কতভাবে আন্দোলন করলেন, সোচ্চার রয়েছে বেশ কিছু সংগঠন। সর্বশেষ রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দুই শিক্ষার্থী ‘খুনের’ পরিপ্রেক্ষিতে কিশোররা স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন গড়ে তোলে। সংস্কার হয় আইন। সবাই ভেবেছিল, এবার বুঝি একটু স্বস্তি মিলবে। সড়ক-দানবের হাতে বেঘোরে প্রাণ হারাবে না সাধারণ মানুষ। ফলাফল, যেই লাউ সেই কদুই থাকল! গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মিলেছে ১১ হতভাগ্যের মৃত্যুর খবর। ঘুম ঘুম চোখে বেপরোয়া গতিতে বাস চালিয়ে চুয়াডাঙ্গায় ছয়জনকে পিষে মেরেছেন এক বাসচালক। এছাড়া ময়মনসিংহে বাস-সিএনজির সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজনসহ সাতজন এবং সারা দেশে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় আরও চারজন নিহত হয়েছেন।
গত শনিবার ভোরে চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়কের সরোজগঞ্জ বাজার এলাকায় বেপরোয়া গতির বাস পিষে মারে এক গ্রাম্য চিকিৎসকসহ ৬ দিনমজুরকে। দুর্ঘটনাকবলিত রয়েল পরিবহনের বাসটি চট্টগ্রাম থেকে মেহেরপুরে যাচ্ছিল। দুর্ঘটনায় আহত বেশ কয়েকজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী ও ঢাকাতে স্থানান্তর করা হয়েছে। পুলিশ ঘাতক বাস ও তার চালককে আটক করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনামতে দুর্ঘটনার সময় চালক ঘুমন্ত চোখে গাড়িটি বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনামতে, তখন ভোর ৬টা। রাতের অন্ধকার ভেদ করে কেবল দিনের আলো ছড়াতে শুরু করেছে। কেউবা প্রাতঃভ্রমণে বের হয়েছেন, কেউ আবার পেটের তাগিদে শ্রম বিক্রি করতে এসেছেন বাজারে। বেপরোয়া গতির রয়েল পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসের দানব রূপ ধারণে নিমিষেই ঝরে পড়ে তরতাজা ৬টি প্রাণ।
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে সিএনজি চালিত অটো রিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের ৩ জনসহ ৭ জন নিহত হয়েছেন। শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় ময়মনসিংহ-জামালপুর সড়কে মুক্তাগাছার মানকোন নামক স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ বাসের চালককে আটক করেছে। নিহতদের লাশ ও দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুটি উদ্ধার করেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা জামালুপুরগামী রাজিব পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে উল্লেখিত স্থানে চেচুয়া থেকে ছেড়ে আসা সিএনজি চালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এসময় ঘটনাস্থলেই চালকসহ সিএনজির ৪ জন যাত্রী নিহত হয়। পরে গুরুতর আহত ৩ জন যাত্রীকে স্থানীয় লোকজন মুক্তাগাছা উপজেলা হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ৩ জনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
এছাড়া কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কে স্যালোইঞ্জিন চালিত মাহেন্দ্র ও নসিমনের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এতে আব্দুর রাজ্জাক নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার জহুরুল ইসলাম নামের এক কৃষক রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার শনির আখড়ায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পারভেজ নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। ধামরাইয়ের কসমস বাজার এলাকায় বাসের ধাক্কায় আলাউদ্দিন নামে মোটরসাইকেলের এক আরোহী নিহত হন। কেউই জানে না, কত দূরে রয়েছে নিরাপদ সড়ক, এমন অপমৃত্যুর হাত থেকে কবে মুক্তি পাবে দেশবাসী! বাসচালকসহ পরিবহন সংশ্লিষ্টরা কবে নাগাদ ‘মানবিক আচরণ’ করবেন সেটাও বড় প্রশ্ন।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228