ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে

সম্পাদকীয়
🕐 ৬:১২ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ০৫, ২০২০

প্রবাসীরা নিজেদের শ্রম-ঘামের বিনিময়ে সমৃদ্ধ করে চলেছেন দেশীয় অর্থনীতির চাকা। নিজের পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য তারা বেছে নিয়েছেন প্রবাস জীবন। করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে হুমকির মুখে পড়েছে প্রবাসী আয়। দেশে ফিরেছেন অনেক প্রবাসী। ফেরার অপেক্ষায়ও রয়েছেন অনেকে। যখন অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় জেরবার হচ্ছে দেশ; এর মধ্যেই এল সুসংবাদ। স্বস্তি ফিরেছে মানুষের মনে। গত জুলাই মাসে ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বিশ্বজুড়ে ইতিহাসে একক মাসে এর আগে কখনো এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি। গত জুন মাসের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ দশমিক ৮৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

প্রবাসী আয়ের এ ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকার জন্য সরকারের সময়োপযোগী ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের ইতিহাসে এ যাবত কালের মধ্যে সর্ব্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৭ দশমিক ২৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। গত ৩০ জুন ২০২০ তারিখে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩৬ দশমিক ০১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে যেটি ছিল সর্বোচ্চ। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে সেটি পৌঁছেছে ৩৭ দশমিক ২৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেকর্ডে। রিজার্ভের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে রেমিট্যান্সের আন্তঃপ্রবাহ। করোনার মধ্যে প্রতিকূল পরিবেশে থেকেও নিয়মিত রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। কঠিন সময়ে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করেছে। এক্ষেত্রে দেশ ও পরিবারের প্রতি তাদের ভালোবাসা এবং দায়বদ্ধতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। অর্থনীতির চাকাকে বেগবান রাখতে বড় অবদান রাখছে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স।

রেমিট্যান্সে দেশের এ অনন্য রেকর্ডে প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় গত অর্থবছরের শুরু থেকে প্রবাসীদের প্রেরিত আয়ের ওপর ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনা প্রদান অব্যাহত আছে যার ফলে গত বছর ১৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। চলতি অর্থবছরে ৩-৫ বিলিয়ন ডলার বাড়তি অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি। সামনের দিনে রেমিট্যান্স বৈধ পথে আনতে যত কৌশল অবলম্বন করতে হয় সেটা আমরা নেব। প্রবাসীদের রয়েছে দেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা আর মমত্ববোধ। তাদের টাকা প্রেরণে যত বাধা রয়েছে সেগুলো দূর করা হবে।

প্রবাসীরা নিজেদের শ্রম-ঘামের বিনিময়ে দেশে পাঠাচ্ছেন মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা। অন্যদিকে তাদের অনেকেই নানাভাবে লাঞ্ছিত-বঞ্চিত হচ্ছেনÑ এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বিশেষ করে বিদেশ-বিভুঁইয়ে কাজে অনিশ্চয়তা, ভাষাগত জটিলতা, আইনের মারপ্যাঁচÑ নানাভাবেই এদেশ থেকে যাওয়া শ্রমিকরা সমস্যায় পড়েন। এসব সমস্যা মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট দেশে থাকা বাংলাদেশি দূতাবাস সেভাবে কোনো ভূমিকাই রাখে না বলে অভিযোগ রয়েছে। কোনো কোনো অভিযোগের সত্যতাও প্রমাণিত। প্রবাসীরা যাতে নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করা জরুরি। সরকার এবং মন্ত্রণালয় প্রবাসীদের বিদ্যমান সমস্যা দূর করতে উদ্যোগী হবে বলেই আমরা প্রত্যাশা করি। তবে ধরে রাখা যাবে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সের ধারাবাহিকতা। সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতাতেই বিরূপ প্রতিবেশ-পরিবেশ মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper