ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শৃঙ্খলা ফিরুক কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে

সম্পাদকীয়
🕐 ৭:২৭ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৮, ২০২০

স্বাস্থ্যখাতের দুরবস্থা নিঃসন্দেহে জাতি হিসেবে আমাদের জন্য লজ্জার। সংশ্লিষ্টদের দুর্নীতি ও অনিয়মে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অব্যবস্থাপনার পাশাপাশি করোনাকালে দুর্নীতির অভিযোগও। এর মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জেকেজি, রিজেন্ট, সাহাবুদ্দিন, অপরাজিতাসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। তবে এ খাতের বড় দুর্নীতিটি হয় সরকারি যন্ত্রপাতি কেনাকাটায়। স্বাস্থ্যের সব কেনাকাটা নিয়ন্ত্রণ করে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার সিএমএসডি।

ফলে স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতির আঁতুড়ঘর মনে করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার সিএমএসডিকে। সব ধরনের কেনাকাটা নিয়ন্ত্রণে কয়েকটি সিন্ডিকেটের নাম আসায় বিষয়টি টক অব দ্য টাউন। সদ্যপ্রয়াত সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার এম শহীদুল্লাহ বিদায়ের পর বিষয়টি সরকারের উচ্চপর্যায়ে জানিয়েছিলেন। তবে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়নি।

মন্ত্রণালয়ের দাবি, নতুন মহাপরিচালক নিয়োগের পর এক মাসেই সাশ্রয় হয়েছে ১২৪ কোটি টাকা। আর বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ খাতকে দুর্নীতিমুক্ত করার বিকল্পই নেই। প্রতিষ্ঠানটির সদ্যপ্রয়াত সাবেক মহাপরিচালক বিদায়ের পর লেখা এক চিঠিতে এ খাতের দুর্নীতির পেছনে কারণগুলো তুলে ধরেন। তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেন মিঠু ও বেঙ্গল সাইন্টিফিকের জহির সিন্ডিকেটের কথা। মহাপরিচালক করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন গত শনিবার।

আবারও আলোচনায় তাই তার চিঠিটি। কতটা কার্যকর হলো তার সুপারিশগুলো। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, মিঠু সিন্ডিকেট; মিঠুটা কোন ব্যক্তি সেটা আমি দেখিনি। আমি যদি সঠিক জিনিসটা পাই সঠিক দামে, তাহলে আমরা খুশি। এখানে যে অন্যায় করবে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে স্বাস্থ্য সচিবের দাবি বর্তমান মহাপরিচালকের সময়ে রোধ করা হচ্ছে সব অনিয়ম।

স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান বলেন, ১২৪ কোটি টাকা সরকারের যে সাশ্রয় হয়েছে, সেটা শুধু নতুন ডিরেক্টর আসার কেনাকাটার মাধ্যমে। আপনারা যদি বলেন, তার হিসাব-নিকাশ পর্যন্ত আমি দিতে পারব। এগুলো সরকারের প্রসিডিউর আছে পিপিআর ফলো করে। সব কিছু ফলো করে কাজটা করার চেষ্টা করা হয়েছে। যেগুলো অতীতে অনেক কিছুই ফলো করা হয়নি। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ খাতের স্বচ্ছতা আনতে সিএমএসডিকে দুর্নীতিমুক্ত রাখতে হবে। এ বিষয়ে বিএমএ প্রেসিডেন্ট ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, এটা যদি উনি কন্ট্রোল করেন তাহলে কম হবে। দুর্নীতি হয়নি এটা ঠিক নয়, দুর্নীতি হয়েছে বলেই তো ধরা পড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মতো প্রয়োজনে সিএমএসডিতেও শুদ্ধি অভিযান প্রয়োজন বলে মনে করছেন এ খাতের সংশ্লিষ্টরা।

স্বাস্থ্যখাতের চরম দুর্দশার আরেকটি চিত্র ভুয়া করোনা সনদে শাজাহান খানের মেয়ের লন্ডন যাওয়ার চেষ্টা! ভুয়া করোনা সনদের জন্য ইতোমধ্যে পুরো বিশ্ব বাংলাদেশকে একটু অন্যভাবে দেখছে। দেশের মানুষের ভাবমূর্তি অনেকটাই ক্ষুণ হয়েছে। গত রোববার ভুয়া করোনা সনদ দিয়ে লন্ডন যাওয়ার পথে আটকা পড়লেন সাবেক নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের মেয়ে ঐশী খান। তিনি করোনার সনদ জালিয়াতি করে নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে ধরা খান। দেশ ছাড়ার আগে ইমিগ্রেশনে অনলাইন চেকে তার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায়। ফলে ঐশীকে লন্ডন যেতে দেওয়া হয়নি। আর কত লজ্জা পেতে হবে আমাদের! কেন্দ্রীয় ঔষধাগারসহ স্বাস্থ্যখাতে শৃঙ্খলা ফিরুক, এটাই প্রত্যাশিত।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper