ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ইন্টারনেটের মূল্য কমিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ান

সম্পাদকীয়
🕐 ৭:২৭ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৭, ২০২০

বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় বদ্ধপরিকর। সেই অভীষ্ট লক্ষ্যে বাংলাদেশ এগিয়েও গিয়েছে অনেকটাই। বৈশ্বিক দুর্যোগ করোনাভাইরাসের প্রেক্ষাপটে এর সুফল সরাসরি পাওয়া যাচ্ছে। উপকারিতা বোঝা যাচ্ছে হাতেনাতে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় চালু করা হয়েছে অনলাইন ক্লাস। কিন্তু অনলাইনে ক্লাস শুরু হলেও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের থেকে তেমন সাড়া মিলছে না।

কারণ হিসেবে তারা ইন্টারনেটের চড়া মূল্য ও দুর্বল নেটওয়ার্কের কথা বলছেন। করোনার প্রভাবে শিক্ষার্থীদের পরিবারের আর্থিক সক্ষমতা অনেকটাই কমে গেছে। ফলে অনেক শিক্ষার্থীর দ্বারা মোবাইলে ডাটা কিনে অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়া সম্ভব হয়ে উঠছে না। করোনার কারণে অনেক শিক্ষার্থীও টিউশনি হারিয়েছেন। ফলে তারা অনেকটা আর্থিক সংকটে ভুগছেন। এ বিষয়ে গতকাল প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় খোলা কাগজে।

করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার গত ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে। বন্ধ হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের ক্লাস কার্যক্রম। শিক্ষার্থীদের এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য সংসদ টিভির মাধ্যমে ক্লাসের ব্যবস্থা করে। এ কার্যক্রম অনেকটা সফল হয়। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করতে বলা হয়। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে ইন্টারনেটের চড়া মূল্য ও দুর্বল নেটওয়ার্কে। দেশের বিভিন্ন সিম কোম্পানির ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে বিষয়টি লক্ষ করা গেছে। ইন্টারনেটের ডাটা প্যাকেজের অস্বাভাবিক মূল্য। যা শিক্ষার্থীদের পক্ষে বহন করা সম্ভব হচ্ছে না।

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ওসমান গনী বলেন, ৪ মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ। সম্প্রতি অনলাইন ক্লাস শুরু হলেও সেটা আমাদের জন্য কার্যকর হচ্ছে না। আমাদের অনলাইন ক্লাসে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই উপস্থিত থাকতে পারছেন না। কারণ ইন্টারনেটের দাম অনেক বেশি। এত দাম দিয়ে ইন্টারনেট কিনে ক্লাস করার সামর্থ্য নেই অনেকের। বিনামূল্যে ইটারনেটের ব্যবস্থা করলে অনলাইন ক্লাসের সুফল পাওয়া যাবে। তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বলেন, অনলাইন ক্লাস কার্যকরভাবে প্রভাব ফেলতে পারেনি। করোনার কারণে ঢাকা ছেড়েছে। গ্রামের দুর্বল নেটওয়ার্কের কারণে অনলাইন ক্লাসের সঙ্গে যুক্ত হতে পারছি না।

এ বিষয়ে তিতুমীর কলেজের শিক্ষক ইব্রাহিম আহসান বলেন, কিছু সমস্যার কারণে অনলাইন ক্লাসের ফল শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে না। ইন্টারনেটের চড়া দাম একটি বড় সমস্যা। শিক্ষার্থীদের সবার অনলাইনে ক্লাস করার জন্য প্রয়োজনীয় ডিভাইসও নেই। ছুটির কারণে অনেকেই গ্রামের বাড়িতে আছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে সব জায়গায় মোবাইল ইন্টারনেট গতিশীল নয়, শিক্ষকদের অনেকেরই অনলাইন ক্লাস নেওয়ার মতো পর্যাপ্ত লজিস্টিক সাপোর্ট যেমন ক্যামেরা, সাউন্ড সিস্টেম ইত্যাদি, শিক্ষকরা নিজেদের সামর্থ্য দিয়ে যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিশ্চিত না করলে অনলাইন ক্লাস ফলপ্রসূ হবে না।

বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব, শিক্ষার্থীবান্ধব। বিদ্যমান পরিস্থিতির সুষ্ঠু সমাধান শিক্ষাবিদদের সঙ্গে নিয়ে সরকার খুঁজে বের করুক। অন্যদিকে মোবাইল ফোন অপারেটরদেরও বোঝা উচিত যে, মানুষদের নিয়ে তারা ব্যবসা করছে এবং করবে নিজেদের স্বার্থেই এদের টিকিয়ে রাখতে হবে!

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper