ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

চিকিৎসা-প্রতারকদের সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত হোক

সম্পাদকীয়
🕐 ৭:৪৫ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১০, ২০২০

চিকিৎসা স্পর্শকাতর একটি বিষয়। এর সঙ্গে জড়িত মানুষের জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন। কিন্তু অর্থলোভে চিকিৎসার নামে অনৈতিক বাণিজ্যও করছে একটি শ্রেণি। সম্প্রতি রাজধানীর রিজেন্ট হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা ছাড়াই করোনা সংক্রান্ত জাল সনদ প্রদানসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। ওই হাসপাতালের সাত কর্মকর্তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

গত বুধবার উত্তরা পশ্চিম থানার এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আলমগীর গাজী আসামিদের আদালতে হাজির করেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তে প্রয়োজনে আসামিদের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক আসামিদের প্রত্যেককে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। এর আগে মঙ্গলবার রাতে রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদসহ ১৭ জনকে আসামি করে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করে র‌্যাব।

গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতারণার অভিযোগে দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. সাহেদকে খুঁজছে র‌্যাব। শিগগিরই তাকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে জানিয়েছে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম। গত বুধবার র‌্যাব সদর দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান তিনি।

তিনি বলেন, রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারণার অভিযোগে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সাহেদ পলাতক। তাকে র‌্যাব খুঁজছে। র‌্যাব যখন অভিযান শুরু করে তখন থেকেই তিনি গা-ঢাকা দিয়েছেন। মোবাইলগুলো বন্ধ করে রেখেছেন। প্রথম দিন ফেসবুকে ছিলেন এখন সবকিছু থেকেই নিষ্ক্রিয়।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আশা করছি দ্রুত তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে সক্ষম হব। করোনাকে ঘিরে আমরা নানা ধরনের অপতৎপরতা দেখেছি। শুরু থেকেই নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ব্যবহৃত গ্লাভস-মাস্ক বিক্রির বিরুদ্ধে আমরা অভিযান চালিয়েছি। এক পর্যায়ে বিভিন্ন ভুক্তভোগীর মাধ্যমে জানতে পারি, কিছু হাসপাতাল করোনা টেস্টকে কেন্দ্র করে নৈরাজ্য শুরু করেছে। ব্যক্তিগত পর্যায় থেকেই অনুসন্ধানের কাজ শুরু করেছিল র‌্যাব। রিজেন্ট হাসপাতাল হোম ডেলিভারির মতো বাসায় গিয়ে করোনার নমুনা সংগ্রহ করে দ্রুততার সঙ্গে রিপোর্ট সরবরাহ করছিল। প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে আমরা গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াই। এরপর কেঁচো খুঁড়তে সাপ নয়, এনাকোন্ডা বের করে নিয়ে আসতে সক্ষম হই।

এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ হচ্ছে তারা নমুনা নিয়ে টেস্টের সঠিক রিপোর্ট পাঠায় না। প্রায় সাড়ে চার হাজার নমুনার টেস্ট না করেই কম্পিউটার অপারেটর মনগড়া রিপোর্ট দিয়েছে। এর ফলে বুঝে না বুঝে অনেকেই ভুয়া পজিটিভ হয়ে কোয়ারান্টিনে চলে গেছেন। তারা প্রথমবার টেস্টে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা নিতেন পরবর্তী টেস্টের জন্য আবার এক থেকে দেড় হাজার টাকা আদায় করতেন। সরকারের সঙ্গে বিনামূল্যে চিকিৎসার চুক্তি স্বাক্ষরের নামে আসলে হঠকারিতা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। তারা রোগীদের বিপুল পরিমাণ বিল দিতে বাধ্য করেছে। চিকিৎসার নামে অনৈতিক বাণিজ্য ও প্রতারণাকারীরা যেন কোনো অবস্থাতেই আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যেতে পারে। সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি নিশ্চিত করবেন বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper