গতি পাক চামড়া শিল্প
সম্পাদকীয়
🕐 ৭:৪২ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ০৭, ২০২০
ধর্মীয় বাধ্যবাধকতার অনুষঙ্গ ধরে প্রতি বছর কোরবানির ঈদের আগে-পরে আবির্ভাব ঘটে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের। কিন্তু অপরিকল্পনা হেতু কখনো কখনো দামে ধস নামে। গরুর যথাযথ দাম না পেলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় চাষি ও ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে চামড়ার বাজারে অস্থিরতা দেখা দিলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পুঁজি হারায়। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে চামড়া ব্যবসায়ীদের বাড়তি সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়েই খেলাপি গ্রাহকরা নতুন করে ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবেন। গত রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। কোরবানি চামড়ার মৌসুমকে সামনে রেখে এমন উদ্যোগ নিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশে কার্যরত সকল ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, গত জুন মাসের ৩০ তারিখ ভিত্তিক ঋণ/বিনিয়োগ স্থিতির ন্যূনতম ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট নগদে আদায় সাপেক্ষে পুনঃতফসিল করার বিষয়ে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ব্যাংকসমূহ নিজেরাই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে। এক্ষেত্রে ইতোপূর্বে সংশ্লিষ্ট ঋণ/বিনিয়োগ হিসাবে আদায়কৃত কিস্তি ডাউন পেমেন্ট হিসেবে গণ্য হবে না। ঋণ গ্রহীতাদের নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে ঋণ/বিনিয়োগ হিসাব শ্রেণিকৃত হয়ে থাকলে এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সচল থাকলে এ সার্কুলারের আওতায় পুনঃতফসিল সুবিধা প্রদান করা যাবে। কেইস-টু-কেইস ভিত্তিতে ১ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ তলবি ও চলমান ঋণ সর্বোচ্চ ৬ বছর মেয়াদে এবং মেয়াদি ঋণ সর্বোচ্চ ৮ বছর মেয়াদে পুনঃতফসিল করা যাবে।
কোরবানিকৃত পশুর কাঁচা চামড়া ক্রয়ের উদ্দেশ্যে নতুন ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে কম্প্রোমাইজড এমাউন্ট গ্রহণের শর্ত শিথিল করা যাবে। আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে স্ব-স্ব ব্যাংকের কাছে এ সার্কুলারের আওতায় ঋণ গ্রহীতাদের তাদের ঋণ পুনঃতফসিলের জন্য আবেদন করতে হবে। করোনাভাইরাসের অতিমারির মধ্যে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে সকল কালের মহামন্দা শুরু হয়। চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে আগে থেকেই চামড়ার ওপর ঘা পড়েছিল।
পুরান ঢাকা থেকে সাভারের চামড়া নগরী স্থানান্তরের সময় অনেক চামড়া কারখানা দেউলিয়া হয়, এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। গত মার্চ মাস থেকে যুক্ত হয় করোনা মহামারি। সামনে ঈদুল আজহা। দেশে চামড়ার সিংহভাগ উৎপাদন হয় কোরবানির ঈদে। এ মৌসুমে যাতে মূলধনের অভাবে চামড়া ব্যবসায়ী, চামড়া খাত কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত না হয়Ñ আগে থেকেই চামড়া শিল্পকে বাঁচাতে এমন উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
প্রতিবছর দেশে ঈদুল আজহায় ৪০ থেকে ৪৫ লাখ গরু-মহিষ জবাই হয়। ঈদুল আজহায় জবাই হওয়া গরুর স্বাস্থ্য ভালো থাকে। চামড়ার মান খুব ভালো হয়। তাই ট্যানারিগুলো মোট চামড়ার ৫০ শতাংশই সংগ্রহ করে ঈদুল আজহায়। প্রতিবছরই ঈদুল আজহার আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ীরা বৈঠক করে চামড়ার একটি দাম ঘোষণা করে। এ বছর চামড়ার দাম নির্ধারণে গত সপ্তাহে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি বৈঠক হলেও দাম নির্ধারণ করা হয়নি। চামড়া শিল্প এবং এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা যেন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সংশ্লিষ্টরা তা নিশ্চিত করবেন বলেই আমাদের প্রত্যাশা।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228