ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বাড়িওয়ালারা মানবিক হলেই উভয়পক্ষের সংকট কমবে

সম্পাদকীয়
🕐 ৯:০৭ পূর্বাহ্ণ, জুন ২৭, ২০২০

বাড়িওয়ালা-ভাড়াটিয়ার সম্পর্ক অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যেন রাজা-প্রজার! তবে এই রাজত্ব ধসে পড়ছে দলে দলে মানুষ রাজধানী ত্যাগ করার কারণে। করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে সংকটে পড়েছেন রাজধানীর বাড়িওয়ালারা। রাজধানীতে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ বা ছোট হয়ে আসায় মানুষের আয় কমে যাচ্ছে এবং কর্মসংস্থান হারাচ্ছে। রাজধানীর বাসা ভাড়ার ব্যয় নির্বাহ কঠিন হয়ে পড়ায় মানুষ বাসা ছেড়ে দিয়ে পরিবার-পরিজনকে গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছেন, নিজেরা উঠে যাচ্ছেন মেসে। ফাঁকা হচ্ছে বাসাবাড়ি।

ফলে বাড়ি ভাড়ার ওপর নির্ভরশীল বাড়িওয়ালারা বিপাকে পড়েছেন। এই বিষয়ে গতকাল প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে খোলা কাগজে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাসা ভাড়ার ওপর নির্ভরশীল সামসুল ইসলাম একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। ছয় বছর আগে অবসরে গেছেন। অবসরে যাওয়ার সময়ে যে টাকা পেয়েছিলেন তা দিয়ে বাড়ি বানিয়েছেন।

করোনা শুরু হওয়ার পর এক ফ্ল্যাটের মানুষ রাতে হঠাৎ করে চলে গেছে। অপরটির মানুষ নোটিস দিয়ে চলে গেছে। এতে তার ভাড়া কমে গেছে ১৮ হাজার টাকা। এ টাকা দিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। তার আশঙ্কা এ অবস্থা চলতে থাকলে বাকি ভাড়াটেরাও থাকবেন না। ভাড়া কমা নিয়ে সংকটে পড়েছেন উত্তর বাড্ডার শওকত আলীও। উত্তরাধিকার সূত্রে শওকত আলী চার কাঠা জমি পেয়েছিলেন। ঋণ নিয়ে ছয়তলা একটি বাড়ি বানিয়েছেন। নিজে থাকার পর বাকি ফ্ল্যাটগুলো ভাড়া দিয়েছেন। তা থেকে প্রতি মাসে ৭২ হাজার টাকা আসে। সেই ভাড়ার টাকা দিয়ে ব্যাংকের ঋণের কিস্তি দেওয়ার পাশাপাশি নিজে চলতেন। মহামারি শুরু হওয়ার কারণে দুটি ফ্ল্যাট ফাঁকা পড়ে আছে।

দুটির ভাড়াটে ভাড়ার টাকা পরে দেওয়ার শর্তে বাসায় বসবাস করছে। এর ফলে তার ভাড়া কমেছে ৪৫ হাজার টাকা। বাকি টাকা দিয়ে অন্যান্য খরচ মিটিয়ে শওকত আলীর চলা কঠিন হয়ে গেছে। তিনি জানান, ব্যাংক ঋণের কিস্তি নেওয়া নিষেধ থাকলেও মাঝে মাঝে ব্যাংক থেকে ফোন করে। এখন কোনোভাবে টাকা না দিতে হলেও এক সময় টাকা দিতে হবে। যখন দিতে হবে তখন কি ভাড়া পাওয়া যাবে?  বাড়ি ভাড়া নিয়ে পুরো ঢাকাতে এ অবস্থা। কারো কারো বাড়িভাড়ার বাইরে অন্য পেশা থাকার কারণে ভালো আছে। যারা বাড়ি থেকে বংশ পরম্পরায় চলে আসছে, একমাত্র বাড়ি ভাড়াই তাদের অবলম্বন। এ শ্রেণির মানুষ সংকটে পড়েছে।

বাড়িওয়ালাদের এ সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ করোনা থেকে মুক্তি। এছাড়া কোনো পথ নেই বলে মনে করেন বাংলাদেশ হাউজ এন্ড ফ্ল্যাট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হেলাল উদ্দিন। তিনি বলেন, অভিঘাত বিশ^জনীন। তারপরও সরকার প্রতিরোধে চেষ্টা করছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিভিন্ন রকমের উদ্যোগ সচল করার চেষ্টা করছে। এসব উদ্যোগ সফল হলে মানুষ কর্ম ফিরে পাবে, তখন বাড়িওয়ালাদের যে ভাড়া সমস্যা তা দূর হবে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বাড়িওয়ালা যদি মানবিক আচরণ করেন, তারা যেমন সংকট থেকে মুক্তি পাবেন, ভাড়াটিয়ারাও পাবেন সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সুযোগ। সমাধান একটাই, ভাড়ার টাকা অর্ধেকে নামিয়ে আনা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper