ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

স্বাস্থ্যবেষ্টনীতে নির্মূল হোক করোনা

সম্পাদকীয়
🕐 ৮:১৫ অপরাহ্ণ, জুন ২০, ২০২০

মহামারি করোনাভাইরাসের তা-বে জেরবার হচ্ছে বিশ্ব। নেতিবাচক এই ঢেউ আছড়ে পড়েছে বাংলাদেশেও। স্থবির করে দিয়েছে জনজীবন। হুমকিতে ফেলেছে অর্থনীতিকে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। পাল্লা দিয়ে ঘটছে প্রাণহানি। প্রতিদিন সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে, স্বাস্থ্যসেবা সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে তাতে সামনের দিনগুলো হবে আরও ভয়াবহ এমন আশঙ্কা প্রকাশ পাচ্ছে। আলামতও স্পষ্ট।

এ পরিস্থিতিতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা দ্রুত অবরুদ্ধ করে তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন এবং দেশে স্বাস্থ্যবেষ্টনী গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশে গত ৮ মার্চে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্তের কথা জানায় সরকার। এরপর সংক্রমণে প্রথম মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করা হয় ১৮ মার্চ। গত ৬ এপ্রিল থেকে দেশে প্রতিদিনই করোনায় মানুষ মৃত্যুবরণ করছে। তবে ৯ মে পর্যন্ত প্রতিদিন মৃতের সংখ্যা দশের নিচেই ছিল। সংক্রমণের দশম সপ্তাহে প্রতিদিন রোগী শনাক্তের গড় ছিল ১ হাজার ৩২।

গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, চতুর্থ মাসে দেশে করোনা সংক্রমণ আরও তীব্র আকার ধারণ করছে। আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। চতুর্থ মাসের প্রথম ৮ দিনে দৈনিক গড় মৃত্যু প্রায় ৪২। এছাড়া প্রতিদিন করোনা উপসর্গ নিয়ে অনেক মানুষের মৃত্যুর খবর আসছে। আর উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন যাদের বেশির ভাগেরই নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে যে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তা বলতে গেলে ঢিলেঢালা।

দ্রুত কার্যকর ও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হলেও পরিস্থিতি স্থিতিশীল হতে দুই থেকে তিন সপ্তাহ লাগতে পারে। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) বিশেষজ্ঞ পরামর্শকদের মতে, সংক্রমণ ও মৃত্যু যেভাবে বেড়ে চলেছে তাতে কালবিলম্ব না করে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ দেওয়া দরকার। তা না হলে মৃত্যু ও আক্রান্তের হার লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে যাবে।

আইইডিসিআরের পরামর্শক রোগতত্ত্ববিদ মুশতাক হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, এভাবে চলতে থাকলে আক্রান্ত ও মৃত্যু দুই-ই আরও বাড়বে। সামনে উদ্বেগের সময় আসছে। সংক্রমণ আপনাআপনি কমে যাবে না। বন্ধের জন্য যথাযথভাবে উদ্যোগ নিতে হবে এবং তা এখনই। বাস্তবতা বিবেচনায় একবারে সারা দেশে লকডাউন দেওয়া হয়ত সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা দ্রুত চিহ্নিত করে অবিলম্বে কার্যকর লকডাউন দিতে হবে বা স্বাস্থ্যবেষ্টনী তৈরি করতে হবে। স্বাস্থ্য নিরাপত্তায় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে সপ্তাহ তিনেকের মধ্যে সংক্রমণ কমে গিয়ে পরিস্থিতি স্থিতিশীল হতে পারে।

সংশ্লিষ্টরা আরো বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণের একেবারে চূড়ান্ত পর্যায় চলছে। এটা এখনই কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত জরুরি। একটি এলাকায় শুধু যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়াই লকডাউন নয়। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ওই এলাকার সব আক্রান্ত রোগীকে বিচ্ছিন্ন রাখতে হবে। আক্রান্তদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন, তাদের ১৪ দিন আলাদা করে রাখতে হবে যাতে তারা অন্যের সংস্পর্শে না যান। করোনা থেকে সুরক্ষা পেতে স্বাস্থ্যবেষ্টনীর বিকল্প নেই। বিষয়টা মাথায় রেখে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper