ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

পাহাড় ধসের আশঙ্কায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা কাম্য

সম্পাদকীয়
🕐 ৯:৪৫ অপরাহ্ণ, জুন ১৯, ২০২০

বর্ষার সঙ্গে পাহাড় ধসের অলিখিত একটা সম্পর্ক যেন দাঁড়িয়ে গেছে। প্রায় প্রতি বছরই একটু বেশি বর্ষণ হলেই পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। এতে সম্পদহানি ও প্রাণহানির মতো অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। এবার আষাঢ়ের শুরুতেই ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ চলছে দেশের অনেক এলাকায়। বৃষ্টিপাতের পরিস্থিতি আগামী তিন দিন একই রকম থাকতে পারে। বৃষ্টিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধসের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।

প্রতিবছরই চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চলে পাহাড় ধসে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয়। পাহাড় ধস বন্ধে নানা সময়ে করা সুপারিশগুলো আজও বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে ঝুঁকিও কাটেনি এতটুকু। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনের সঠিক প্রয়োগ জরুরি। ভূমিখেকোদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি প্রসাশন ও রাজনৈতিক নেতাদের এক হয়ে কাজ করতে হবে। কঠোর হতে হবে। তাহলেই এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।

গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে দেড় দশক ধরে আদা ও হলুদ চাষ চলছে ব্যাপক হারে। এতে পাহাড়ের উপরিস্তর ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে। আবার নির্বিঘ্নে পাহাড় কাটা চলে দেদার। চলে বনায়ন ধ্বংস করে চলে একটি চক্র। ফলে দিন দিন পাহাড় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। ২০১৭ সালের ১২ থেকে ১৩ জুন পার্বত্য তিন জেলাসহ ছয় জেলায় পাহাড় ধসে ১৬৮ জন নিহত হন। ১৩ জুন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে নিহত হন ১২০ জন। পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসে পাহাড় ধসে এত প্রাণহানি আগে হয়নি। এরপর প্রতিবছরই পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটছে। মারা যাচ্ছে অসংখ্য মানুষ। চট্টগ্রামে মতিঝর্ণা, বাটালি হিল, টাংকির পাহাড়সহ ঝুঁকিপূর্ণ ২৮টি পাহাড়ের ঢালে ১ লাখের বেশি মানুষের বসবাস করছে। আর তিন পার্বত্য জেলায় এর পরিমাণ ২ লাখেরও বেশি।

বৃষ্টিপাতের এ পূর্বাভাসে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনও প্রস্তুতি নিয়েছে। নগরের বায়েজিদ, খুলশী, পাহাড়তলীসহ অন্তত ১৭টি পাহাড়ের নিচে বসবাস করা বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে গতকাল সকাল থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। এ ছাড়া করোনাভাইরাস দুর্যোগের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে যাতে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে বাসিন্দারা সরে নিরাপদে অবস্থান নিতে পারেন এজন্য নগরের চান্দগাঁও, বাকলিয়া, আগ্রাবাদ এবং কাট্টলী সার্কেল এলাকায় মোট ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্র খুলেছে জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রামসহ আশপাশের এলাকায় এখন ভারি বর্ষণ চলছে। এতে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা থাকায় সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে মাইকিং করা হয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় যারা ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস করছেন, তারা যাতে নিরাপদ জায়গায় অবস্থান করতে পারে তার জন্য ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

বৃষ্টিপাতের কারণে চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। এ ভারী থেকে অতি ভারি বৃষ্টি আগামীকাল রোববার পর্যন্ত থাকতে পারে। এ ছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হতে থাকায় দেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। প্রতিটি প্রাণই অমূল্য। পাহাড় ধসের কারণে যেন নতুন করে প্রাণহানি না হয় সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকতে হবে সংশ্লিষ্টদের।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper